স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধে সারাবিশ্বে প্রভাব পড়েছে। সারাবিশ্বে জ্বালানি, খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন দেশে দাঙ্গা হাঙ্গামা চলছে। শ্রীলঙ্কায় সবকিছু বন্ধ হয়েছে যাচ্ছে। সেখানে জ্বালানি, খাদ্য, সার ও বিদ্যুৎ নেই। ইউরোপেও এর প্রভাব পড়ছে। সেখানেও রেশনিং শুরু হয়েছে ও ব্যাংকের সুদ বাড়িয়েছে। সমস্যা যখন পৃথিবীতে আসে, এর প্রভাব কম বেশি সব দেশেই পড়ে। আমাদের দেশ ঘনবসতির একটি দেশ, যে কারণে আমাদের দেশেও কিছুটা প্রভাব পড়েছে।’

শুক্রবার বিকেলে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা গড়পাড়া শুভ্র সেন্টারে জেলা পরিষদ আয়োজিত কোভিট-১৯ মোকাবেলায় কর্মহীন ৫০০ পরিবারে মাঝে খাদ্য, বন্ত্র ও সুরক্ষা সামগ্রী ও মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীনের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, পৌর মেয়র রমজান আলী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাফিল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আফসার উদ্দিন সরকার।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমারা জ্বালানি নির্ভরশীল রাস্ট্র। আমাদের জ্বালানি আমদানি করতে হয়। জ্বালানির দাম পৃথিবীতে তিনগুণ বেড়ে গেছে। জ্বালানি পাওয়া যাচ্ছে না, অনেক দেশে জ্বালানি নেই। সেখানে বাংলাদেশের জ্বালানি আছে। প্রধানমন্ত্রী আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করছেন। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছেন। আমাদের এই সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে। স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। তাই আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। আমাদের বিদ্যুৎসহ সবক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘বিরোধী দল যখন প্রচার করছে সরকার জ্বালানির মূল্যে বৃদ্ধি করেছে। নো, সরকার জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করেনি। আন্তজার্তিক বাজারে বেড়েছে, বেশি দাম দিয়ে কিনলে, আমাদের দেশেও বেশি দামে ছাড়তে হবে। এটা চিরস্থায়ী নয়, আন্তাজার্তিক বাজারে কমে আসলে আমাদের দেশেও কমে আসবে। বিদ্যুৎও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার হিমালয়ের পর্বতের মতো দাঁড়িয়ে আছে বিরোধী দলের তিনজনের ধাক্কায় হিমালয় পর্বত পড়বে না। কাজেই, সামনের নির্বাচনে দেখা যাবে জনগণ কাদের মূল্যায়ন করেন। যারা পদ্মাসেতু, রাস্তাঘাট, মেট্রোরেল, বিদ্যুৎ, খাদ্যের সংকট মোকাবিলা করেছেন তাদের মূল্যায়ন করবে? নাকি যারা সার ও বিদ্যুতের জন্য জনগণকে গুলি করে মেরেছে তাদের মূল্যায়ন করবে। জনগণ উন্নয়নের সঙ্গে আছে ভবিষ্যতেও উন্নয়নের সঙ্গেই থাকবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণ করেছে সরকার। বিশ্বের কম দেশই করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে। আমেরিকাও পারেনি, ইউরোপও পারেনি, কিন্তু বাংলাদেশ করোনা নিয়ন্ত্রণে পঞ্চম স্থান অধিকার করছে। এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে ৩০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এতে আমাদের দেশের মানুষ সুরক্ষিত রয়েছেন। ভ্যাকসিনে আমাদের ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ৫ বছর থেকে ১১ বছরের শিশুদের পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। আগামী ২৫ আগস্ট থেকে সিটি করপোরেশনগুলো এই কার্যক্রম শুরু করবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে আমাদের হাতে ৩০ লাখ ভ্যাকসিন রয়েছে। শিশুদের জন্য বিশেষ ভ্যাকসিন আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পেয়ে যাবে।’