সামাল দেওয়া যাচ্ছে না জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতির তোড়। বাজার এতটাই 'গরম', তবু অজানা কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো শীতনিদ্রায়। বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই বাস্তবমুখী উদ্যোগ। উল্টো বাজারদর নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা শরীরে কাঁটা দেওয়ার মতো। জিনিসপত্রের দামের নাটাই সরকার এখনই নিয়ন্ত্রণে না নিলে অসাধু ব্যবসায়ীরা ক্রেতার ওপর আরও চেপে বসতে পারে বলে মনে করেন বিশ্নেষকরা।

বাজার-বিশ্নেষকরা বলছেন, পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, কী ধরনের সামাজিক কর্মসূচি নেওয়া যায়- এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি সরকার। ফলে গভীর সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা।

এদিকে ব্যবসায়ীরা মনে করেন, জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে এত বাড়ানো ঠিক হয়নি। ধাপে ধাপে তেলের দাম বাড়ালে বাজারে বড় প্রভাব পড়ত না। পরিবহন ভাড়া বাড়ার কারণে এখন কিছু ব্যবসায়ী নিজের মতো করে পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর থেকে দ্রব্যমূল্য এমনভাবে ছুটছে যেন থামার নাম নেই। নিত্যপণ্যে ব্যবসায়ীরা সর্বোচ্চ কত মুনাফা করতে পারবেন- সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়নি সরকার। এ সুযোগে ভোক্তার কাছ থেকে অসাধু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছেন। প্রতিদিন বাড়ছে একের পর এক নিত্যপণ্যের দাম। ফলে আরও কঠিন ও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে জনজীবন।

বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তদারকিতে কাজ করে সরকারের ডজনখানেক সংস্থা। তারা বলছে, নজরদারির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

দর নিয়ে বিভ্রান্তি: ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি), কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও সিটি করপোরেশনের ওয়েবসাইটে বাজারদরের ভিন্ন ভিন্ন তথ্য মিলেছে। খুচরা বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ক্ষেত্রে এক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্যটির মিল নেই। তিন প্রতিষ্ঠানের দরের তালিকার সঙ্গে বাজারের দামেও রয়েছে ফারাক। একই পণ্য একেক বাজারে ভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। অথচ সংস্থাগুলো বাজারে নিত্যপণ্যের প্রকৃত দরের চেয়ে কম দেখাচ্ছে। ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দৈনিক নিত্যপণ্যের যে দরের তালিকা করছে, তা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিচ্ছে। এতে সরকারের নীতিনির্ধারকরা পণ্যের প্রকৃত দর সম্পর্কে জানতে পারছে না। অন্যদিকে বাজার অভিযানে গিয়ে তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলো বিপাকে পড়ছে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা যায়, ১১ আগস্টের ঢাকা মহানগরীর বাজারদর দেওয়া আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ছুটির দিনে বাজারদর হালনাগাদ করা হয় না। ১১ আগস্টের তালিকায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দর দেওয়া আছে ১৮৫-১৯০ টাকা। এই একই পণ্য একই দিন টিসিবির দৈনিক বাজারদরের তালিকায় দেওয়া আছে ১৭০-১৯০ টাকা। আবার ব্রয়লার মুরগি সিটি করপোরেশনের বাজারদরে দেওয়া আছে ১৭৫-১৮৫ টাকা। তবে ব্রয়লার মুরগি ওই দিন রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হয়েছে। বাজারদর নিয়ে এই হযবরল পরিস্থিতিতে ভোক্তারা নানাভাবে প্রতারিত হচ্ছেন।

এ বিষয়ে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মজিবুর রহমান বলেন, 'আমরা বাজারে গিয়ে পণ্যের দর তালিকা সংগ্রহ করে প্রতিদিন প্রকাশ করি। এখানে কোন বাজারের দর কত এবং পাইকারি ও খুচরা বাজারের পার্থক্যও দেওয়া হয়। এতে ভুল হওয়ার কথা নয়। তবে অনেক সময় অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে তা আমাদের তালিকায় আসে না।'

দামের পার্থক্যের বিষয়ে টিসিবির চেয়ারম্যান মো. আরিফুল হাসান বলেন, রাজধানীর কয়েকটি বাজার থেকে তথ্য নিয়ে প্রতিদিন বাজারদরের তালিকা প্রকাশ করা হয়। পণ্যের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দামকে গড় করে এ তালিকা করা হয়। তবে টিসিবির পক্ষে সব বাজারের তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন। এ ছাড়া বাজারভেদে দামে হেরফের হতে পারে। তবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজারদরের সঙ্গে কোনো পণ্যের দামে বেশি অসামঞ্জস্য দেখা গেলে খতিয়ে দেখা হবে।

দামে লাগাম নেই: দাম বাড়ার তালিকায় প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন পণ্য। এত দিন দুই কেজির প্যাকেট আটা ১০০ টাকায় কেনা যেত। এখন দাম আরও ১০ টাকা বেড়েছে। খোলা আটার দামও পাঁচ থেকে ছয় টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।

সম্প্রতি ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ২০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে এ খাতের আমদানিকারক ও পরিশোধনকারীরা। তবে সরকার এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত না নিলেও বাজারে তেলের দাম বেড়ে গেছে। গতকাল প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৮৫ থেকে ১৯০ এবং পাম অয়েল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেউ কেউ বোতলজাত তেলের গায়ে লেখা থাকা মূল্যের চেয়ে লিটারে পাঁচ টাকা বেশি নিচ্ছেন।

একইভাবে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়ার পরই বেড়েছে চিনির দাম। সম্প্রতি চিনির দাম বাড়ানোর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দিয়েছে চিনি আমদানিকারক ও পরিশোধনকারীরা। এ ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা চিনির কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৮ থেকে ৯০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯৮ থেকে ৯৯ টাকায়। চাল, ডাল, সবজিসহ অন্য নিত্যপণ্যও রয়েছে দাম বাড়ার এ তালিকায়।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বাজার তদারকির মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে ভোক্তা অধিকারের সব কর্মকর্তা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশও এখন অস্থির সময় পার করছে। অধিদপ্তর যতই চেষ্টা করুক না কেন, দাম পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন কাজ।

বিশ্নেষকরা যা বলছেন: বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন পর্যায়ে প্রতিটি খাত ও উপখাতে আঁচ লেগেছে। কারণ, লোডশেডিংয়ের সময় হয়তো কেউ ডিজেল সাশ্রয়ে উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। এর নেতিবাচক প্রভাবও পড়েছে পণ্যের দামে। জ্বালানির দাম বাড়ালে নিত্যপণ্যের বাজারে কী ধরনের প্রভাব পড়বে, সামগ্রিক অর্থনীতিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কী ধরনের ঘাত-প্রতিঘাত আসতে পারে এবং সেগুলো সামাল দেওয়ার জন্য কী পদক্ষেপ নিতে হবে- সে বিষয়ে কোনো পূর্বানুমান করেনি সরকার।

তিনি বলেন, বাজার তদারকির জন্য সরকারের কয়েকটি সংস্থা আছে। তবে পণ্যের মজুত রাখা, অতি মুনাফার চিন্তা থেকে ব্যবসায়ীদের বিরত রাখা, তাদের জবাবদিহির মধ্যে আনা- এসব যথাযথভাবে হচ্ছে না। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই তারা এই সুযোগ নিচ্ছে। অভিযান আর জরিমানা করলেই বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে না। এ জন্য দরকার সুস্পষ্ট পদক্ষেপ ও ইতিবাচক বার্তা।

সেলিম রায়হান বলেন, কয়েক দিন ধরেই বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ প্রায় সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম পড়তির দিকে। আর বাংলাদেশে উল্টো; দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এই বাড়ার পেছনে মূল কারণ, বাজারে পণ্যের এক ধরনের সংকট বা অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। জোগান ও চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য না থাকার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পণ্যের দাম আরও বাড়বে- এমন ধারণা থেকে কেউ কেউ পণ্য মজুত করে রেখেছেন।

সঠিক পরিসংখ্যানের কারণেও পণ্যের জোগান ও চাহিদায় সমস্যা হচ্ছে উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশে কোন পণ্যের চাহিদা কত, উৎপাদন হয় কী পরিমাণে, আমদানি হয় কতটুকু, ঘাটতি কতটুকু হতে পারে- এসব ব্যাপারে সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠানের সুস্পষ্ট পরিসংখ্যান নেই। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে থাকে। বেশিরভাগই হয় অনুমানের ভিত্তিতে। এ কারণে সরকারের আমদানির সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও ব্যাঘাত ঘটে। এতে করে বাজারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।

দেশের বিদ্যমান মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতি বর্তমান পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়ার জন্য যথাযথ নয় বলে মনে করেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান। তিনি বলেন, লাঠিসোটা নিয়ে বাজারে অভিযান করলে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে না। এখন বেশি জরুরি মূল্যস্ম্ফীতি ও ডলারের দাম সামাল দেওয়া। বিশেষ গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার নীতিতে হাঁটলে জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ নিষ্পেষিত হতেই থাকবে।

যা বলছেন ব্যবসায়ী নেতারা: বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ভাড়া নির্ধারিত না হওয়ায় পণ্যবাহী পরিবহনগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া নিচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে পণ্যের দামে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা বলে আসছেন, পণ্য পরিবহনে কিলোমিটার অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করতে। তখন নির্দিষ্ট ভাড়ার বেশি আদায় করা যাবে না। তবে সরকার সেই পরামর্শ কানে তোলেনি।

তিনি আরও বলেন, ডলারের অস্থিরতাও পণ্যের দাম বাড়ার পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে। দেশের ইতিহাসে ডলারের দাম কখনোই এত বাড়েনি। কেন এই অস্থিরতা- তা অনুসন্ধান করা জরুরি। নইলে দেশকে ভবিষ্যতে চরম মূল্য দিতে হবে।

কৃষিতে উৎপাদন খরচের বড় প্রভাব: ডিজেল ও সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ধানসহ প্রতিটি কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এতে কৃষি অর্থনীতিতে দুই ধরনের চাপ সৃষ্টি হতে পারে। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের ন্যায্য দাম পেতে হবে। আবার বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষের খরচ বাড়বে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ইমেরিটাস অধ্যাপক এম এ সাত্তার ম ল বলেন, বোরো ধান আবাদের জন্য শুধু শ্যালো পাম্প ও লো-লিফট পাম্প সেচের জন্যই ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে কৃষকের অন্তত ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বাড়তি খরচ করতে হবে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম যেহেতু নিম্নমুখী, সেহেতু আগামী বোরো মৌসুমের আগেই ডিজেলের দাম সমন্বয় করে নেওয়া সমীচীন হবে।

কৃষক ও ভোক্তার কী লাভ: কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ ঠিক করে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আ. গাফ্‌ফার খান বলেন, কৃষক, সরকার ও ভোক্তাদের পণ্য সম্পর্কে আগাম ধারণা দেওয়ার পাশাপাশি যে কোনো সংকট তৈরি হলে সরকার যাতে ব্যবস্থা নিতে পারে, সে জন্যই সবকিছু বিশ্নেষণ করে এসব পণ্যের উৎপাদন খরচ চূড়ান্ত করা হয়। সার ও ডিজেলের দর বাড়ার পর এখনও নতুন করে উৎপাদন খরচ ঠিক করা হয়নি। জমিতে থাকা অবস্থায় একটি ফসলের প্রতি কেজি উৎপাদনে কত খরচ হচ্ছে, তার গড় করে একটি হিসাব তৈরি করা হচ্ছে।

তবে এ বিষয়ে কৃষিপণ্যের বাজার বিপণন বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, উৎপাদন খরচ নির্ধারণ একটা ভালো উদ্যোগ। তবে সরকার যদি নিজে পণ্য না কেনে, তাহলে এই চেষ্টা বাজারে খুব বেশি ভূমিকা রাখবে না। সিন্ডিকেট, রাজনীতি, চাঁদাবাজিসহ হরেক রকম সমস্যা আছে।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভারতসহ বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোয় কৃষিবান্ধব 'কৃষিমূল্য কমিশন' রয়েছে। দেশভেদে প্রাতিষ্ঠানিক নামের ভিন্নতা থাকলেও এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো- কৃষকের আয় স্থিতিশীল রাখা, কৃষিপণ্যের দর সহনশীল সীমায় রাখা, দেশি ও আন্তর্জাতিক বাজার তথ্যের (চাহিদা, সরবরাহ, দাম ইত্যাদি) বিশ্নেষণ এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও দামের আগাম সংকেত দেওয়া ইত্যাদি।