তৈরি পোশাকের কিছু পণ্যে নগদ সহায়তা পুনর্বহাল
ছবি-সংগৃহীত
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ০২:১৮
শার্ট, সুট, জ্যাকেট, সোয়েটারসহ তৈরি পোশাকের যেসব পণ্য নগদ সহায়তার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, তা পুনর্বহাল করেছে সরকার। তবে একই সময় অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রণোদনার হার কমানো হলেও তা আর পুনর্বহাল করা হয়নি। নতুন হারে প্রণোদনা ১ জানুয়ারির পরিবর্তে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে জাহাজী করা পণ্যে কার্যকর হবে। এ ছাড়া বস্ত্র খাতে নতুন বাজার সম্প্রসারণ সুবিধার তালিকা থেকে ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে আবার বহাল করা হয়েছে।
সোমবার সার্কুলারের মাধ্যমে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি এক নির্দেশনার মাধ্যমে পাঁচটি এইচএস কোডের আওতায় রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা প্রত্যাহারসহ প্রণোদনার হার কমানো হয়। তবে রপ্তানিকারকরা ওই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান।
গতকালের সার্কুলারে নগদ সহায়তার হার কমানোর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ৪৩ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দিয়ে আসছে সরকার। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ হলে কোনো ধরনের নগদ সহায়তা দেওয়া যাবে না। ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটতে যাচ্ছে। তখন একবারে নগদ সহায়তা প্রত্যাহার করলে রপ্তানি খাত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এ কারণে বিভিন্ন খাতে নগদ সহায়তার হার ক্রমান্বয়ে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
আকস্মিকভাবে নগদ সহায়তা কমিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জানুয়ারির ওই সার্কুলার নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন ব্যবসায়ী, ব্যাংকারসহ বিভিন্ন পক্ষ। বিশেষ করে ডলার সংকট, সুদহার বেড়ে যাওয়া, বেতন বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকটের মধ্যে এরকম সিদ্ধান্ত না নেওয়ার দাবি জানায় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএসহ বিভিন্ন সংগঠন। এ ছাড়া প্রণোদনার হার পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়। যদিও পুনর্বহাল না করে শুধু বাদ পড়া তৈরি পোশাকের প্রধান পণ্য নগদ সহায়তায় যুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, রপ্তানিতে নগদ সহায়তার হার কমানোর কৌশলের অংশ হিসেবে তৈরি পোশাকের প্রধান পণ্যে নগদ সহায়তা একেবারে তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেটি না করলে নগদ সহায়তার হার কমালে সব ব্যবসায়ী সংগঠন কমানোর বিরোধিতা করত। তাই তৈরি পোশাকের প্রধান সব পণ্যে নগদ সহায়তা একবারে তুলে নেওয়ায় পাঁচটি এইচএস কোডে রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা পুনর্বহাল করা হয়। এর ফলে নগদ সহায়তার হার কমানো নিয়ে কোনো হইচই হয়নি।
বিজিএমইএর হিসাব অনুযায়ী, তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৫৬ শতাংশের মতো ওই পাঁচটি কোডে। এসব পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা বা ভর্তুকি পেতে দেশীয় সুতা বা বস্ত্র ব্যবহারের শর্ত রয়েছে। এ কারণে দেশে বস্ত্র ও সুতার অনেক কারখানা গড়ে উঠেছে। তুলা চাষে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন।
নতুন হার অনুযায়ী, রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। আগে তা ৪ শতাংশ ছিল। ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের প্রণোদনার হার ৩ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা ছিল ২ শতাংশ। তা কমিয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। নিট, ওভেন, সোয়েটারসহ তৈরি পোশাক খাতের সব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে অতিরিক্ত ৪ শতাংশই বহাল থাকবে। তবে নতুন পণ্য বা নতুন বাজারে ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৩ শতাংশ। তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ নগদ সহায়তা ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এসবই বহাল থাকবে। অন্যসব পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তার ক্ষেত্রে ৩০ জানুয়ারির নির্দেশনা বহাল থাকছে।
- বিষয় :
- সহায়তা
- পোশাক কারখানা