কৃত্রিম আশের অবাধ ব্যবহারের কারণে পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটপণ্য টিকতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। তাঁরা বলেছেন, সরকার বিভিন্ন পণ্যে পাটপণ্যের মোড়ক ব্যবহারের আইন করেছে। অথচ স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে ২০১০ সালের আইনটি এখনও শতভাগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। প্লাস্টিকের মোড়কই অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে। অবিলম্বে আইন শতভাগ বাস্তবায়ন করে পাট খাতকে সুরক্ষা দিতে সরকারের কাছে দাবি জানান তাঁরা।

বেসরকারি পাটকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএমএ) বার্ষিক সাধারণ সভায় গতকাল শনিবার এ দাবি জানানো হয়। রাজধানীর মতিঝিলে বিজেএমএ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আবুল হোসেন। সহসভাপতি রবিউল আহসান, মহাসচিব আব্দুল বারেক খানসহ সাধারণ সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

পাট খাতের অর্থনৈতিক গুরুত্ব তুলে ধরে পাটের উদ্যোক্তা রপ্তানিকারকরা বলেন, দেশে উৎপাদিত হওয়া একমাত্র পাটপণ্যেই শতভাগ মূল্য সংযোজন হচ্ছে। পাটচাষি, শ্রমিক এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখছে পাট খাত। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পাট খাতে ৩ কোটি মানুষ নির্ভরশীল।

পাট খাতের অন্যান্য সংকট নিয়ে বিজেএমএ সভাপতি বলেন, কৃষকের কাছ থেকে কাঁচা পাটের ওপর ২ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আদায় করা হচ্ছে। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা এ বিষয়ে মিলগুলোকে নোটিশ দিয়েছেন। এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাঁরা পাট চাষে আগ্রহ হারাবেন। কারণ শেষ পর্যন্ত ভ্যাটের চাপ কৃষকের ওপরই পড়বে।

অন্য নেতারা বলেন, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাটজাত পণ্যকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। অথচ আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। কৃষিপণ্যের মর্যাদা পেলে অন্য পণ্যের মতোই সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাটপণ্যেও পাওয়া যেত। রপ্তানিমুখী শিল্পের উন্নয়নে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ব্যবস্থা করেছে সরকার। কম সুদে এ তহবিল থেকে ঋণ পাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। অথচ দীর্ঘদিন ধরে ইডিএফের আদলে পাটপণ্যের জন্য একটি রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের দাবি জানিয়ে আসছেন উদ্যোক্তারা। কৃষক-শ্রমিকের সুবিধার কথা বিবেচনা করে পাট খাতের এসব সমস্যা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।