- অর্থনীতি
- ব্যাংক খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য দ্রুত কমছে
ব্যাংক খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য দ্রুত কমছে

প্রতীকী ছবি
ব্যাংক খাতের উদ্বৃত্ত তারল্য দ্রুত কমছে। গত ডিসেম্বর শেষে উদ্বৃত্ত তারল্য দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭২৮ কোটি টাকায়। এক মাস আগেও যা ১ লাখ ৫৩ হাজার ১০৪ কোটি টাকা ছিল। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে ছিল ২ লাখ ১৬ হাজার ৭০১ কোটি টাকা। এর মানে এক বছরে উদ্বৃত্ত তারল্য কমেছে ৬৯ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। এর প্রভাবে বিভিন্ন ব্যাংককে প্রতিনিয়ত ধার দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এক ব্যাংক থেকেও আরেক ব্যাংক ধার করছে। একই সঙ্গে বাজারে তারল্য বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাম্প্রতিক সময়ে ৫০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
সংশ্নিষ্টরা জানান, ডলার সংকট মেটাতে গিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে প্রচুর ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। গত এক বছরে ১৩ লাখ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রির বিপরীতে বাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা উঠে এসেছে। আরেকদিকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটসহ বিভিন্ন কারণে পণ্য কিনতে আগের চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে। ফলে নতুন বিনিয়োগ তেমন না বাড়লেও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব পর্যায়ে খরচ বেড়ে ঋণ চাহিদা বেড়েছে। গত নভেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে এক বছরে ঋণ বেড়েছে ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিদিনই রেপো, বিশেষ রেপোর বিপরীতে ধার দিচ্ছে। কলমানিসহ কয়েকটি পদ্ধতিতে গতকাল এক ব্যাংক আরেক ব্যাংক থেকে ৫ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা ধার করছে। আন্তঃব্যাংক লেনদেনের সুদহার হুহু করে বাড়তে থাকায় সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক মৌখিকভাবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদ নির্ধারণ করে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ব্যাংকের উদ্বৃত্ত তারল্য মানেই নগদ বা তাৎক্ষণিক ঋণযোগ্য তহবিল নয়; বরং উদ্বৃত্ত অর্থের অধিকাংশই বিভিন্ন বিল ও বন্ডে বিনিয়োগে আছে। বিল ও বন্ডের বিপরীতে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এসএলআর বা সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদ সংরক্ষণ করতে পারে। বর্তমানে একটি ব্যাংকের তলবি ও মেয়াদি দায়ের ১৩ শতাংশ এসএলআর হিসেবে রাখতে হয়। এ ছাড়া নগদ জমা সংরক্ষণ বা সিআরআর রাখতে হয় ৪ শতাংশ। এর অতিরিক্ত অর্থ উদ্বৃত্ত তারল্য হিসেবে বিবেচিত। প্রয়োজন হলে বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করা উদ্বৃত্ত অর্থ ব্যাংকগুলো যে কোনো সময় নগদায়ন করতে পারে, যা উদ্বৃত্ত তারল্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ উদ্বৃত্ত তারল্য ছিল ২০২১ সালের জুন শেষে। ওই মাসে ২ লাখ ৩১ হাজার ৭১১ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত ছিল। যার মধ্যে একেবারে নগদ ছিল ৬২ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে সিআরের উদ্বৃত্ত নগদ টাকার পরিমাণ জানা যায়নি। তবে নভেম্বরে উদ্বৃত্ত ছিল ৬ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা।
মন্তব্য করুন