ফরিদপুরে এক কৃষকের দুই পায়ে গুলি করার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পিস্তলসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ফরিদপুরের কোতোয়ালি ও সালথা থানায় তিনটি মামলা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) শেখ মো. আব্দুল্লা বিন কালাম।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কোতোয়ালি থানার পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে সালথা উপজেলার রসুলপুর এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা হলেন- সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুরের সোহেল ফকির (২৮), ফরিদপুর শহরের কমলাপুর লালের মোড় এলাকার শেখ খসরু (৩৬) ও রিপন ওরফে লিমন (২৫) এবং শহরের গুহলক্ষ্মীপুর এলাকার শাহীন মোল্লা (৩৭) ও তুষার (৫৩)।

যে পিস্তল দিয়ে হাবিব ফকিরকে (৩২) গুলি করা হয়, তাঁদের কাছ থেকে সেই পিস্তলসহ একটি গুলি, তিনটি ধারাল চাকু ও এক বোতল দেশীয় মদ উদ্ধার করা হয়।

হাবিব ফকিরকে গুলি করার ঘটনায় তার ভাই আক্কাস ফকির মঙ্গলবার রাতে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। অন্যদিকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাববুবুর রহমান সালথা থানায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে আসামি করে অস্ত্র আইনে একটি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান তিতাস ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন ফকিরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ হচ্ছে। আহত হাবিব ফকির কৃষ্ণপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল ফকিরের সমর্থক। একটি মামলায় হাজিরা দিতে তিনি গত মঙ্গলবার সকালে আদালতে এসেছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে পৌঁছলে চেয়ারম্যান তিতাসের সমর্থক কয়েকজন অস্ত্রধারী ইজিবাইকের গতিরোধ করে হাবিবকে নামিয়ে সড়কের পাশে একটি বাগানে নিয়ে যায় এবং তাঁর দুই পায়ে গুলি করে। এ ছাড়া তাঁর বাঁ পায়ে কুপিয়ে জখম করে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পিটিয়ে আহত করে।

হাবিব বর্তমানে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন। তিনি সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামের গোলাপ ফকিরের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি এম এ জলিল, ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল গফফার, পরিদর্শক (অপরাধ) হাবিল হোসেন, পরিদর্শক (পুলিশ কন্ট্রোল) সেলিম রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার এসআই মাহবুবুর রহমান বলেন, গতকাল বুধবার বিকেলে এ মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার পাঁচজনকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। আদালত রিমান্ডের শুনানির তারিখ পরে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত দিয়ে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।