কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে অধিকতর নিরাপত্তা বিধান ও পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পাবনা ও কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার বিকেলে পৃথক দুটি চিঠি পাঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান।

চিঠিতে বলা হয়, দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়ের মোবাইল বার্তার আদেশে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার কাছেও আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়। এ চিঠিতে ফুলপরীকে যে কোনো ছাত্রী হলে তার পছন্দমতো সিটে তুলে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। 

এদিন কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্টকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদেশে আরও বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী ছাত্রীকে আগামী তিন দিনের মধ্যে যে কোনো হলে সিট বরাদ্দ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ওই ছাত্রী তার পছন্দমতো যে কোনো সিট বাছাই করতে পারবেন। একই সঙ্গে বহিষ্কার হওয়া পাঁচ ছাত্রী কোনো একামেডিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।

এর আগে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ অন্তত ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। ঘটনার জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট শামসুল আলম, হাউস টিউটর মৌমিতা আক্তার, ইশরাত জাহানসহ কয়েকজনের দায়িত্বে চরম অবহেলা রয়েছে বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া প্রক্টর শাহাদাত হোসেনের র্কমকাণ্ড উদাসীন ও দায়সারা গোছের।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের একটি গণরুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগে উঠে। এতে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী, তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, ইসরাত জাহান মিমি ও হালিমা খাতুন উর্মীর নামে প্রশাসন কাছে ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি লিখিত অভিযোগ করেন ফুলপরী। বিষয়টি সামনে এলে দেশব্যাপী তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠে। বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ালে বাধ্য হয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে শাখা ছাত্রলীগ। এছাড়া হল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসনও তদন্ত কমিটি গঠন করে।