- অর্থনীতি
- নিখোঁজ নারীর মরদেহ মিলল ভুট্টা ক্ষেতে
নিখোঁজ নারীর মরদেহ মিলল ভুট্টা ক্ষেতে

ফাইল ছবি
স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় রাশিদার। এরপর দিনমজুরি করে চলছিল তার জীবন। মায়ের সঙ্গেই থাকতেন রাশিদা। নিখোঁজের তিনদিন পর নিজ বাড়ি থেকে সোয়া এক কিলোমিটার দূরের ভুট্টা ক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয় রাশিদার অর্ধগলিত মরদেহ। পুলিশের ধারণা, ধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ ক্ষেতেই ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের প্রাক্তন দেবর নাজিম উদ্দিন জড়িত থাকতে পারেন। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
বুধবার দুপুরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাদতন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
পুলিশ জানায়, জেলার ফুলপুর উপজেলার ছনধরা ইউনিয়নের বাঁশাটি মধ্যপাড়া গ্রামের আহাম্মদ আলীর ভুট্টা ক্ষেতে নারীর অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায়। স্থানীরা নারীকে দেখে প্রথমে শনাক্ত করতে পারেনি। পরে একই ইউনিয়নের হরিনাদী গ্রামের সুফিয়া খাতুন গিয়ে নিজের মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন। মেয়ের শরীরের কাপড় দেখে শনাক্ত করেন মা। ওই গ্রামের মৃত্যু কফিল উদ্দিনের মেয়ে রাশিদা বেগম (৪৫)।
পরিবার জানায়, রাশিদার সঙ্গে একই ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের আবদুস সালামের বিয়ে হয় প্রায় ১৫ বছর আগে। সেই সংসারে তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। চার সন্তান রেখে গত তিন বছর আগে পারিবারিক কলহের জেরে সালামের সঙ্গে রাশিদার
বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে বাবার বাড়িতে মায়ের সঙ্গে বসবাস শুরু করে রাশিদা। মাটি কাটা ও মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবন চালাচ্ছিলেন তিনি। গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন রাশিদা। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও কোনো সন্ধান না পেয়ে গত মঙ্গলবার ফুলপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এরপর বুধবার সকালে বাঁশাটি মধ্যপাড়া গ্রামে ভুট্টা ক্ষেত থেকে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয় কয়েকজন গিয়ে মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
নিহতের মা সুফিয়া খাতুন জানান, ইফতারের পর বাড়ি থেকে বের হন রাশিদা। প্রাক্তন দেবর নাজিমের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার মেয়ে আর বাড়ি ফিরেননি। ভুট্টা ক্ষেতে তার মরদেহ পাওয়া গেছে। নাজিমকেও পাননি। কেন তার মেয়েকে হত্যা করা হলো বুঝতে পারছেন না।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিহত নারীর সঙ্গে প্রাক্তন দেবর নাজিম উদ্দিনের সম্পর্ক গড়ে উঠে। নারী নিখোঁজ হওয়ার পর গত সোমবার ঢাকায় কাজে যাচ্ছে বলে বাড়ি থেকে চলে যান নাজিম। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। রাশিদাকে হত্যায় নাজিম উদ্দিন জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, নিহতের শরীরের কাপড় থেকে মরদেহ শনাক্ত করেন মা। সুরতহালে শ্বাসরোধে হত্যার আলামত পাওয়া যায়। তবে লাশ গলিত হওয়ায় ধর্ষণ হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ বিষয়ে এখনও মামলা হয়নি।
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, প্রাথমিকভাবে দেবরের সঙ্গে নিহতের সম্পর্কের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পরপর দেবর পলাতক রয়েছেন। আমরা ধারণা করছি, দেবর এ ঘটনা ঘটাতে পারে। এ ছাড়ায় অন্যান্য বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে।
মন্তব্য করুন