- অর্থনীতি
- এখনও ঝুঁকির পর্যায়ে আসেনি বিদেশি ঋণ
বিআইডিএসের সেমিনারে অভিমত
এখনও ঝুঁকির পর্যায়ে আসেনি বিদেশি ঋণ

প্রতি বছর বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাবদ বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে সরকারকে। দেশের মোট রাজস্ব আয়ের ১৮ শতাংশ যাচ্ছে এ খাতে। এ কারণে স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে অনেক সময় পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের পরিমাণ এখনও ঝুঁকির পর্যায়ে আসেনি। এটি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৪২ শতাংশ, যা এখনও ঝুঁকিপূর্ণ নয়।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) কার্যালয়ে ‘ফিসকাল স্ট্যান্স অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট : হোয়্যার ইজ বাংলাদেশ হেডেড’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য উঠে আসে। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কানাডার কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মাইনুল আহসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।
অধ্যাপক সৈয়দ মাইনুল আহসান, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ জিডিপির ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে। তাছাড়া সরকারি পর্যায়ে বিদেশি ঋণের সুদের হার এখনও তুলনামূলক কম। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য এখনও এটি ঠিক আছে। তবে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা বিদেশি ঋণ নিয়ে বিপদে আছেন। স্বল্পমেয়াদি কিছু ঋণ খুবই বিপজ্জনক।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারের গ্যারান্টি ঋণের স্থিতি ছিল ৬২ বিলিয়ন ডলার। যেটি ছিল ওই সময় জিডিপির ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। একই সময় দেশের অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, বিদেশি ঋণের পরিমাণ ৫১ বিলিয়ন ডলার।
সৈয়দ মাইনুল আহসান বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘদিন গড়ে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হারে মূল্যস্ফীতি ছিল। এখন সেটা অনেক বেড়ে গেছে। এ বিষয়ে যথাযথ মনোযোগ দরকার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দেশে বিনিয়োগ পরিবেশে উন্নতি করার তাগিদ দিয়ে আসছে অনেক দিন ধরে। কর-জিডিপির অনুপাত বাড়ানোর পরামর্শও এসেছে। কিন্তু সেদিকে খুব বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের ব্যয়ে অর্থায়ন করা উচিত নয়। অনেক দেশেই সেটা বন্ধ করা হয়েছে। তবে মুদ্রানীতির উদ্দেশ্যে সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে সরকারি সিকিউরিটিজ কিনেত পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন বলেন, বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ নিয়ে খুব একটা সমস্যা নেই। যুদ্ধ আমাদের দেশে কিছুটা শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। তবে সেটা আমরা কাটিয়ে উঠছি। কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে সেটি আমাদের জন্য বিপজ্জনক হবে। আমরা শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তান হবো না– এটা সত্য, কিন্তু সুদ পরিশোধে আমাদের অনেক রাজস্ব চলে যাবে।
মন্তব্য করুন