
বিশ্ব একটি ‘বৈষম্য সংকটের’ সম্মুখীন। ৪৬টি দেশে বসবাসকারী বিশ্ব জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ গুরুতর প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে, যা তাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বের হয়ে আসার সক্ষমতাকে সরাসরি বাধাগ্রস্ত করছে।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) ত্রৈমাসিক বুলেটিনের সম্পাদকীয়তে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল সোমবার ত্রৈমাসিক বুলেটিনটি প্রকাশ করেছে আইসিসিবি।বুলেটিনের সম্পাদকীয়তে সম্প্রতি দোহায় অনুষ্ঠিত স্বল্পোন্নত দেশবিষয়ক জাতিসংঘ সম্মেলনে আয়বৈষম্য নিয়ে বিশ্বনেতাদের পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, পরপর দুই বছর কভিড-১৯ অতিমারির ধাক্কা এবং এর সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব একসঙ্গে হয়ে আয় ও সামাজিক বৈষম্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশেও বৈষম্য বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ খানা আয় ও ব্যয় জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিবিএসের ওই জরিপ প্রতিবেদন অনুসারে, গত ছয় বছরে দেশে দারিদ্র্যের হার কিছুটা কমলেও আয় এবং ভোগবৈষম্য দুটোই বেড়েছে।
আইসিসিবির বুলেটিনের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, কভিডে সারাবিশ্বে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে এর প্রভাবে এখনও ভুগছেন। অক্সফাম প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ২৫ বছরে প্রথমবারের মতো বিশ্বে দারিদ্র্য বেড়েছে। অতি ধনীরা নাটকীয়ভাবে ধনী হয়েছে এবং করপোরেট মুনাফা রেকর্ড উচ্চে পৌঁছেছে, যা অসমতার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। ২০২০ সাল থেকে তৈরি হওয়া ৪২ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের সব নতুন সম্পদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দখল করেছে সবচেয়ে ধনী এক শতাংশ। গত ১০ বছরে বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা এবং সম্পদ দ্বিগুণ হয়েছে।
আরেকটি প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করে সম্পাদকীয়তে বলা হয়, বিশ্বের মাল্টি মিলিয়নেয়ার ও বিলিয়নেয়ারদের ওপর ৫ শতাংশ বার্ষিক সম্পদ কর থেকে বছরে ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার আসতে পারে। এ অর্থ নিম্ন ও নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে দুই বিলিয়ন মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা, মানবিক আবেদনের ঘাটতিগুলোর অর্থায়ন, প্রত্যেককে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের জন্য যথেষ্ট।
মন্তব্য করুন