ব্যস্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দীর্ঘদিন ধরে তিতাস গ্যাসের সঞ্চালন লাইনে ছিদ্র দেখা দিয়েছে। বছরখানেক ধরে উপজেলার চন্দ্রা পল্লী বিদ্যুৎ বাসস্ট্যান্ডের কাছে ঢাকামুখী সড়কের সার্ভিস লেনের পাশে বের হচ্ছে গ্যাসের বুদ্বুদ। এক বছরে বেশ কয়েকবার এখানে আগুন ধরেছে। এরপরও ছিদ্র সারাতে উদ্যোগ নেয়নি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন তাঁরা।

সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের পরদিন (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সেখানে আগুন লাগে। এতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কালিয়াকৈর স্টেশনের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তাঁরা বলছেন, দ্রুত এখানকার ছিদ্র না সারালে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে যানবাহনে চলাচলকারী যাত্রীদের নিরাপত্তায় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের দু’পাশে মাটির নিচ দিয়ে যমুনা সেতু পর্যন্ত চলে গেছে তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন। গত বছরের ১৪ জুলাই সন্ধ্যায় হরিণহাটি এলাকায় এপেক্স ল্যাঞ্জারি নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানার সামনেও লাইনের ছিদ্র থেকে আগুন ধরে যায়। এর অবস্থান চন্দ্রা পল্লী বিদ্যুৎ বাসস্ট্যান্ডের এক কিলোমিটার দূরে।

সরেজমিনে মঙ্গলবার বিকেলে পল্লী বিদ্যুৎ বাসস্ট্যান্ডের কাছে দেখা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ঢাকামুখী সড়কের সার্ভিস লেনের পাশে নোংরা পানিতে গ্যাসের বুদ্বুদ বের হচ্ছে। কয়েক ফুট দূরে বাঁশের খুঁটি দিয়ে সেখানে প্রতিবন্ধকতা দেওয়া হয়েছে। এর সামান্য দূরেই পল্লী বিদ্যুতের সাবস্টেশন। মাত্র ৫০ গজ দূরে অবস্থান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের চন্দ্রা জোনাল কার্যালয়ের।

ওই এলাকার কাঁচামাল ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, এক বছর ধরে এখান থেকে বুদ্বুদ আকারে গ্যাস বের হচ্ছে। অথচ পাশেই পল্লী বিদ্যুতের সাবস্টেশন। একাধিকবার আগুনও লেগেছে। অথচ এর সমাধান হচ্ছে না।

পথচারী আবুল হোসেন মিয়াকে প্রায় প্রতিদিন এখান দিয়েই যেতে হয় কারখানায়। তিনি বলেন, তিতাস গ্যাসের অফিস এত কাছে থাকলেও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। কয়েকদিন আগেও বড় আগুন লাগে। ফলে এখান দিয়ে আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করতে হয় তাঁদের।

স্থানীয়রা বলছেন, ভুল করে কেউ জ্বলন্ত সিগারেট ফেললেই আগুন ধরে যায়। ঈদের পরদিন আগুনে এক পথচারীর শরীর ঝলসে যায়। তাঁরা তিতাসের স্থানীয় কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। তাঁরা ঘটনাস্থলের চারপাশে দড়ি টানিয়ে ও একটি কাগজে সাবধানে চলাচলের নির্দেশনা-সংবলিত নোটিশ দিয়েই দায় সেরেছেন।

তিতাস গ্যাসের চন্দ্রা জোনাল অফিসের ব্যবস্থাপক (প্রকৌশলী) মোস্তফা মাহবুব বলেন, ‘বিষয়টি আমরা মেরামত বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। শিগগিরই ছিদ্রগুলো মেরামতের আশা করছি।’