- অর্থনীতি
- ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে ৭২ শতাংশ বিনিয়োগ
ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে ৭২ শতাংশ বিনিয়োগ

যুগের পর যুগ শেয়ারবাজারে অনেক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং কারসাজির ঘটনার কোনো প্রতিকার মেলেনি। অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকেও দেখা গেছে নির্লিপ্ত। এ নিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হতাশার যেন শেষ নেই। সাম্প্রতিক সময়ে বিনিয়োগকারীদের ক্ষোভ ও বিরক্তির আরেকটি বড় কারণ হয়ে উঠেছে তালিকাভুক্ত সব শেয়ারে বেঁধে দেওয়া ‘ফ্লোর প্রাইস’ বা সর্বনিম্ন দরসীমা।
শেয়ারের দরপতন ঠেকাতে ২০২০ সালের মার্চ থেকে শুরু করে গত চার বছরে তিন দফায় সব শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এখনও এটি কার্যকর আছে। তবে কার্যকর এ ব্যবস্থাই পুরো বাজারকে যেন অকার্যকর করে রেখেছে। তালিকাভুক্ত ৩৯২ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২১৪টি শেয়ারই ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল। এসব শেয়ারের শত শত কোটি টাকার বিক্রেতা আছে, ক্রেতা নেই বললেই চলে। অথচ এই ২১৪ শেয়ারের বাজার মূলধন মোট বাজার মূলধনের ৭৬ শতাংশের বেশি। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৭২ শতাংশ বিনিয়োগ আটকে আছে এই সব শেয়ারে।
এর বিপরীতে এখন ফ্লোর প্রাইসের ওপরে কেনাবেচা হচ্ছে ১৭৮ কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে হাতেগোনা ২০-৩০ শেয়ারে ভর করে লেনদেন হচ্ছে ৭০০-৮০০ কোটি টাকার শেয়ার। যদিও মাঝেমধ্যে তা ২০০-৩০০ কোটি টাকার ঘরেও নামছে। গত ১০ মাসেরও বেশি সময় এ অবস্থা চলছে।
বাজার-সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এ ব্যবস্থার ফায়দা লুটছে গুটিকয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, যারা স্বল্প মূলধনি অল্প কিছু ছোট শেয়ারে লগ্নি করে কারসাজির হাট বসিয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এদের বিষয়ে নির্লিপ্ত। শেয়ারদর বাড়াতে কেউ কারসাজি করলেও দেখেও না দেখার ভান করছে বিএসইসি। এ দুষ্টচক্রের ফাঁদে পড়ে মুনাফা লাভের আশায় আসা সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পুঁজি ফেরত পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন।
তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির শীর্ষ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, কভিড-১৯ অতিমারির পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় পড়ছে। অস্থির পরিস্থিতির সুযোগ নিতে মরিয়া কিছু চতুর বিনিয়োগকারী। এদের থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগকে সুরক্ষা দিতেই ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়েছে। এ মুহূর্তে ফ্লোর প্রাইস বিনিয়োগকারীদের জন্য সুরক্ষা কবচের কাজ করছে বলেও দাবি তাঁদের।
তবে যাঁদের সুরক্ষার কথা বলছেন বিএসইসির কর্মকর্তারা, সেই বিনিয়োগকারীদের দাবি ভিন্ন। তাঁরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইস রক্ষাকবচ নয়, গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের কাছে। বিনিয়োগকারী রুহুল রানা বলেন, তিন কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে দুইটিতে তাঁর সিংহভাগ বিনিয়োগ। মাসের পর মাস ওই শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে, কোনো ক্রেতা নেই। মাঝে অতি প্রয়োজনে শেয়ার বিক্রি করতে চেয়ে পারেননি। এখন এক শেয়ার বিক্রি করে অন্য শেয়ারে যে বিনিয়োগ করবেন, তারও উপায় নেই।
ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো জানাচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনাবেচা করতে না পারায় তাঁদের কমিশন আয়ে ধস নেমেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে পারছে না। গেল ঈদে প্রাপ্য বোনাসের অর্ধেক দিতে বাধ্য হয়েছে অনেক বড় প্রতিষ্ঠান।
ব্রোকারেজ হাউস আইডিএলসি সিকিউরিটিজের সিইও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বলেন, বাজার মূলধনের ৭৬ শতাংশ শেয়ারের কেনাবেচা না হলে ব্রোকারেজ হাউসগুলো ব্যবসা পাবে কোথা থেকে। যে ৭০০-৮০০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হচ্ছে, তা অল্প কিছু শেয়ারের। এসব শেয়ারের ক্রেতা-বিক্রেতাও সীমিত। তাঁরা নির্দিষ্ট কিছু ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে শেয়ার কেনাবেচা করছেন। সিংহভাগ ব্রোকারেজ হাউসের ব্যবসা নেই।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষকদেরও ভাষ্য একই রকম। তাঁরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নয়, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস আরোপ করেছে। অন্য অনেকের মতো নিজের ব্যর্থতা বা দুর্বলতা ঢাকতে কভিড বা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ অজুহাত বা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। মূলত ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত শেয়ার কারসাজির পর স্বাভাবিক শেয়ারদর, সূচক ও লেনদেনে পতন শুরু হয়, যা ঠেকানোর কোনো উপায় খুঁজে পায়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তাছাড়া এ দরপতনের আগে সংস্থাটির শীর্ষ পর্যায় থেকে দৈনিক লেনদেন ৫ হাজার কোটি টাকা, ডিএসইর প্রধান সূচক ১২ হাজার পয়েন্ট ছাড়ানোর স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। পরে সূচক যখন ৬০০০ পয়েন্ট এবং দৈনিক লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার নিচে নামল, তখন তারা ফ্লোর প্রাইস দিল।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষক ড. আল-আমীন বলেন, স্রেফ সমালোচনা এড়াতে আদর্শ বাজার ব্যবস্থা ও অর্থনীতির প্রচলিত ধারণাবিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে সংস্থাটি। তারা চায়, শেয়ারদর, সূচক ও লেনদেন শুধু বাড়তে থাকবে। কোম্পানির ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও শেয়ারদর কমতে পারবে না। এমন ভাবনা শুধু যে অবাস্তব নয়, হাস্যকরও বটে।
ড. আল-আমীন বলেন, এখানে যেমনটি করা হচ্ছে, বিশ্বের কোনো শেয়ারবাজার বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমন চিন্তাও করতে পারে না। ফ্লোর প্রাইসে অধিকাংশ শেয়ার আটকে থাকার মধ্যেও স্বল্প মূলধনি অনেক শেয়ারের দর কারসাজি করে রাতারাতি দ্বিগুণ-তিন গুণ করা হচ্ছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিশ্চুপ। অর্থাৎ মনে হচ্ছে যে তারা চায়, যেভাবেই হোক শেয়ারদর বাড়ুক। এটা তো কোনো সুস্থ চিন্তা হতে পারে না।
এদিকে গত বছরের জুলাই মাসে যখন দ্বিতীয় দফায় ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয় তখন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এ ব্যবস্থা ‘খুবই সাময়িক’ সময়ের জন্য। অথচ এর ৯-১০ মাস পর সম্প্রতি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এ মুহূর্তে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা কমিশনের নেই। চাইলে বেশি দরে শেয়ার কিনে বিনিয়োগকারীরা নিজেরাই ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে পারেন।
কমিশন প্রধানের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলেন, ‘কমিশন বিশ্বাস করে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে দরপতন হবে, যা তারা ঠেকাতে পারবে না। না পারলে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে তাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, পদে থাকা নিয়ে সমস্যা তৈরি হবে। তাছাড়া কৃত্রিমভাবে শেয়ার ও সূচকের পতন ঠেকিয়ে বাজারকে স্থিতিশীল রাখার সাফল্য প্রচার করা হয় দেশে-বিদেশে। আমার মনে হয়, এই দরপতনের জুজুই বড় সমস্যা। ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে সূচক হয়তো ৫০০ পয়েন্ট কমবে। কিন্তু অচিরেই ক্রেতা আসবে।’
ফ্লোর প্রাইসে কী সমস্যা হচ্ছে
তালিকাভুক্ত ৩৫৬ শেয়ারের মধ্যে ২১৪টি এবং ৩৬ মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৪টি ফ্লোর প্রাইসে পড়ে আছে, যা মোট শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ৫৫ শতাংশ। গত বৃহস্পতিবার শেষে তালিকাভুক্ত ৩৯২ শেয়ারের মোট বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা ২১৪ শেয়ারের বাজার মূলধন ৩ লাখ ৪২ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ ফ্লোর প্রাইসে ৭৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ মূলধনের শেয়ার আটকা।
আবার তালিকাভুক্ত ৩৯২ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের বাজার মূলধন ১ লাখ ৭৩ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফ্লোরে পড়ে থাকা শেয়ারে সাধারণ ব্যক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক, প্রবাসী এবং বিদেশিদের ধারণ করা শেয়ারের মূল্য ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের ৭২ শতাংশ ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে।
৯০০ কোটি টাকার শেয়ারে ক্রেতার অভাবে আটকে আছে বাজার
বিনিয়োগকারীদের প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার মতো বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ আটকে আছে স্রেফ ৯০০ কোটি টাকারও কম মূল্যের শেয়ারের ক্রেতার অভাবে। সমকালের পক্ষ থেকে গত সপ্তাহের প্রতিদিনই ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা শেয়ারগুলোর বিক্রির আদেশগুলো হিসাব করে এ তথ্য মিলেছে। দেখা গেছে, এ সময়ে ফ্লোরে থাকা শেয়ারগুলোর সাকল্যে ৮২০ থেকে ৯৩০ কোটি টাকার বিক্রির আদেশ ছিল।
যেমন, গত বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা ২১৪ কোম্পানির যত শেয়ার বিক্রির আদেশ ছিল টাকার অঙ্কে তার মূল্য ছিল ৮৭৭ কোটি টাকা। এ হিসাব ওইদিন লেনদেনের শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টার। তবে লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টা পর এর পরিমাণ ছিল ৪৮৫ কোটি টাকা। যদিও ওইদিন এসব কোম্পানির মাত্র ৩৬ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। যেখানে সব কোম্পানির কেনাবেচা হয়েছিল ৯৩২ কোটি টাকার শেয়ার।
পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা শেয়ারগুলোর যে পরিমাণ বিক্রির আদেশ থাকছে, তা মোট বাজার মূলধনের মাত্র শূন্য দশমিক ২৬ শতাংশ এবং ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের মাত্র শূন্য দশমিক ৭১ শতাংশ। ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা বলছেন, এর এক-তৃতীয়াংশ থেকে অর্ধেকটা শেয়ারের ক্রেতা এলেও সব শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ছেড়ে বের হয়ে আসত এবং নতুন ক্রেতা আসত।
বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিনের মতে, মাত্র ৯০০ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ারের ক্রেতার অভাবে বিনিয়োগকারীদের ৭২ শতাংশ বিনিয়োগ আটকে থাকা খুবই অবাক করার মতো বিষয়।
কেমন বিক্রির আদেশ থাকছে প্রতিদিন
দেশের শেয়ারবাজারের সবচেয়ে ভালো শেয়ারের একটি শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের শেয়ার। এ শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে পড়ে আছে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বরের পর থেকে। আরেক বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে। দেশীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নামকরা শেয়ার স্কয়ার ফার্মা। এর শেয়ারও ফ্লোর প্রাইসে পড়ে আছে ২২ নভেম্বর থেকে। একই অবস্থায় রেনেটা, তিতাস গ্যাস, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, ব্র্যাক ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, রবি, এসিআই, ন্যাশনাল পলিমার, ইউনাইটেড পাওয়ার, পাওয়ার গ্রিড, ওয়ালটন হাইটেক, আরএকে সিরামিক, মারিকোর মতো বহু শেয়ার।
বৃহস্পতিবার লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় ফ্লোর প্রাইসে পড়া থাকা শেয়ারগুলোর সাকল্যে ৮৭৭ কোটি টাকার বিক্রির আদেশ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এর মধ্যে টাকার অঙ্কে বেক্সিমকো লিমিটেডের সর্বাধিক ১০৪ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রির আদেশ ছিল। ফ্লোর প্রাইস ১১৫ টাকা ৬০ পয়সা দরে বিক্রির আদেশ ছিল মোট ৮৯ লাখ ৮১ হাজার ৭টি শেয়ারের। কিন্তু লেনদেনের পুরো সময়ে মাত্র ৭৬টি শেয়ার ৮ হাজার ৭৮৫ টাকায় কেনাবেচা হয়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পৌনে ৩৪ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রির আদেশ ছিল স্কয়ার ফার্মার। যেখানে লেনদেনের পুরো সময়ে ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
এভাবে ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা ২১৪ শেয়ারের মধ্যে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি বিক্রি আদেশ থাকা শীর্ষ ১০ শেয়ারের ৩১৪ কোটি টাকার বিক্রির আদেশ ছিল, যা এসব কোম্পানির মোট বিক্রির আদেশের ৩৬ শতাংশ। এমন শীর্ষ ২০ শেয়ারের বিক্রির আদেশ ছিল ৪৩২ কোটি টাকার, যা মোটের ৪৯ শতাংশ। শীর্ষ ৫০ শেয়ারে বিক্রির আদেশ ছিল ৬৩৩ কোটি টাকার, যা মোটের ৭২ শতাংশের বেশি।
ফ্লোরে পড়ে থাকা শেয়ারগুলোর মধ্যে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রির আদেশ থাকছে জিএসপি ফাইন্যান্স, ওরিয়ন ফার্মা, ফরচুন সুজ, সালভো কেমিক্যাল এবং গ্রামীণফোনের। ১০ থেকে ২০ কোটি টাকার বিক্রির আদেশ পড়ছে রেনেটা, নাহী অ্যালুমিনাম, ফু-ওয়াং ফুড, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, তিতাস গ্যাস, শাইনপুকুর সিরামিক্স, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, মতিন স্পিনিং, আইএফআইসি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, রবি, আইপিডিসি, জিপিএইচ ইস্পাতের। বাকি সব শেয়ারের বিক্রির আদেশ থাকছে ৫ লাখ টাকা থেকে ৫ কোটি টাকার মধ্যে।
আশার দিকও আছে
তৃতীয় দফায় গত ১ মার্চ সব শেয়ারে পুনরায় ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ ৩০৪টি শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে নেমে আসে। সে হিসাবে গত দুই মাসে ফ্লোর প্রাইস ছেড়েছে ৯০টি শেয়ার। এর মধ্যে গত দুই সপ্তাহে ফ্লোর প্রাইস ছেড়েছে ৪০টি। কিছু ভালো শেয়ারের মধ্যে বাটা সু, হেইডেলবার্গ সিমেন্ট, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, লাফার্জ-হোলসিমসহ কিছু শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ছেড়েছে। রেকিট বেনকিজার, ইসলামী ব্যাংকসহ আরও কিছু ফ্লোর ছেড়ে বেরিয়ে আসছে। কমিশনের কর্মকর্তাদের আশা, অল্প সময়ে আরও শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ছেড়ে বের হবে।
মন্তব্য করুন