- অর্থনীতি
- স্মার্ট বাংলাদেশের ইকোসিস্টেমে ই-কমার্স জরুরি
স্মার্ট বাংলাদেশের ইকোসিস্টেমে ই-কমার্স জরুরি

বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম আয়োজিত ই-কমার্স সামিটে উপস্থিত বক্তারা।
রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হলো দ্বিতীয় বাংলাদেশ ই-কমার্স সামিট। বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের উদ্যোগে রোববার (২৮ মে) রাজধানীতে দারাজের সৌজন্যে দিনব্যাপী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনে সহযোগিতা করে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) ও এটুআই-এসপায়ার টু ইনোভেট।
ই-কমার্স খাতে কর্মরত দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ ও সিদ্ধান্ত প্রণেতারা আলোচনা ও মতবিনিময়ে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। ই-কমার্সকে ভবিষ্যতের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সমস্যা, সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।
সম্মেলনে আলোচনায় উঠে আসে, সারাবিশ্বে ২০২৩ সালে স্মার্ট কোম্পানিগুলো চ্যাটজিপিটি ব্যবহারে ১১০০ কোটি টাকার ব্যয় সংকোচন করবে। সামনের বছরে সাশ্রয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে। তাছাড়া ই-কমার্স ব্যবসায় হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার বাড়বে দৃষ্টান্তমূলক হারে।
ই-কমার্স সম্মেলনের দিনব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন করে সভাপতি (ই-ক্যাব) শমী কায়সার বলেন, ই-কমার্সে দেশি উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে সম্মেলনের গুরুত্ব বহুমাত্রিক। উন্মুক্ত আলোচনা ছাড়া ই-কমার্স খাতের সাফল্য নিশ্চিত করা কঠিন।
সম্মেলনে বক্তারা ই-কমার্স খাতে জালিয়াতি নিরাপত্তা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, ভোক্তা পুনরাবৃত্তি, লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট, পেমেন্টের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে দৃষ্টিপাত করেন। সারাদিনে চারটি কিনোট সেশন, তিনটি প্যানেল ডিসকাশন, দুটি ইনসাইট সেশন, দুটি কেস স্টাডি এবং পলিসি ডায়ালগের সমন্বয়ে দ্বিতীয় ই-কমার্স সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ই-কমার্সের মতো দ্রুত পরিবর্তনশীল খাতে সাফল্যের সঙ্গে টিকে থাকতে পেশাজীবীদের দিকনির্দেশনার বিষয়েও বক্তারা আলোচনা করেন।
বক্তব্য রাখেন দারাজ বাংলাদেশের চিফ মার্কেটিং অফিসার তালাত রহিম এবং মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল এবং চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের (সিসিপিআইটি) সহকারী গবেষক চোংয়া ওয়াং।
দারাজ বাংলাদেশের চিফ মার্কেটিং অফিসার তালাত রহিম সমকালকে বলেন, আধুনিক যুগের ব্যবসা মানেই ই-কমার্সের স্বাভাবিক উপস্থিতি দৃশ্যত। বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের উদ্যোগে ই-কমার্স সামিট ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য সুসংগঠিত ও সময়োপযোগী। ই-কমার্স খাতে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যপূরণ ও ইকোসিস্টেম নিশ্চিতে এ সম্মেলনের গুরুত্ব অপরিসীম। স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবায়নে ই-কমার্স খাতের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি। সম্মেলনে বক্তাদের আলোচনায় উঠে আসা বিষয়গুলো তাই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার দাবি রাখে।
বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ই-কমার্স খাত দ্রুত অগ্রগতিশীল। সবসময়ই এ খাতে আধুনিক উদ্ভাবন ও অনুশীলন দৃশ্যমান। পরিবর্তনগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নে উন্মুক্ত আলোচনা জরুরি। ফলে বার্ষিক সম্মেলনে ই-কমার্স খাতের পরিবর্তন নিয়ে সংশ্লিষ্টদের আলোচনা ব্যবসা সম্প্রসারণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
উইমেন ইন ই-কমার্স (উই) সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা জানালেন, বাংলাদেশের মানুষ ইন্টারনেট বলতে ফেসবুককেই বেশি বুঝে থাকেন। সারাবিশ্বে এখন ৪৪৭ কোটি সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারী আছে। আর ব্যবসা সম্প্রসারণে ফেসবুক এখন দারুণ কাজ করছে। বিশেষ করে করোনা সময়ে ফেসবুককেন্দ্রিক (এফ-কমার্স) ব্যবসা দারুণ সফল হয়। বাংলাদেশে ৩ লাখ উদ্যোক্তা ফেসবুকে সরাসরি ব্যবসা করেন। যার ৭০ শতাংশই নারী। সবশেষ ২০২২ সালের হিসাব বলছে, ই-কমার্স খাতে ১ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়। যার মধ্যে দেশি পণ্যের প্রাধান্য বেশি। বিদেশে পণ্য রপ্তানিতে সহায়তা ও ঋণ সুবিধা বাড়ানো গেলে ই-কমার্স ও এফ-কমার্স খাতে দৃষ্টান্তমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব।
সামিটে আলোচনায় সরাসরি অংশ নিয়েছেন এশিয়া মার্কেটিং ফেডারেশনের (এএমএফ) সভাপতি ড. সৈয়দ ফেরহাত আনোয়ার, এটুআই-এসপায়ার টু ইনোভেট প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান এম হুমায়ুন কবির, সভাপতি (বেসিস) রাসেল টি. আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক রাফেজা আক্তার কান্ত ও দারাজ বাংলাদেশের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস রুশো।
বাংলাদেশে দ্রুত বর্ধনশীল ই-কমার্সের দিকনির্দেশনা প্রণয়নে আলোচিত হয় উপমহদেশীয় ই-কমার্সের সংস্কৃতি, ওপেন ডিজিটাল কমার্স, ই-কমার্সের স্থানীয় ও ক্রস বর্ডার লজিস্টিক সমাধান, ই-কমার্সে চ্যাটজিপিটি প্রয়োগ এবং বাংলাদেশে এফ-কমার্সের প্রসারের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা।
মন্তব্য করুন