করপোরেট গ্রাহকদের কাছে নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে ডলার বিক্রির অভিযোগে ১০ ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধানদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত সোমবার পাঠানো ওই চিঠিতে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব চাওয়া হয়েছে। এর আগে একই অভিযোগে ব্যাংকগুলোর এমডিদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। কিন্তু সে ব্যাখ্যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়নি। এর পর ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে নতুন করে এই চিঠি দেওয়া হলো।

যেসব ব্যাংককে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে– সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল), আল-আরাফাহ্ ইসলামী, মার্কেন্টাইল, মধুমতি, ব্র্যাক, মিডল্যান্ড, এক্সিম, প্রিমিয়ার, শাহ্জালাল ইসলামী ও ট্রাস্ট ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়, ‘আমদানি বিল পরিশোধের লক্ষ্যে করপোরেট ডিলের নামে গ্রাহকের কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে রিপোর্টকৃত ও ব্যাংকের ঘোষিত দরের ব্যত্যয় ঘটিয়ে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের অভিযোগের বিপরীতে আপনাদের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়নি। বর্ধিত হারে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে আপনাদের ব্যাংকের হেড অব ট্রেজারি দায় এড়াতে পারে না। এর এতদপ্রেক্ষিতে আপনাদের ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ট্রেজারিপ্রধানের বিরুদ্ধে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ধারা ১০৯ (৭) অনুযায়ী কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এ বিষয়ে পত্র ইস্যুর তারিখ হতে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব প্রদানের নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

উল্লেখ্য, গত সোমবার বাংলাদেশে ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে দেখা করে ডলারের দাম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি অভিযোগ করেন, অনেক ব্যবসায়ীকে নির্ধারিত রেটের চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে হচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ চান তিনি।

এর আগে গত বছরের আগস্টে ডলারে অতিরিক্ত মুনাফার অভিযোগে দেশি-বিদেশি ১২ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়েও দেওয়া হয়। অবশ্য পরের মাসে সে সিদ্ধান্ত থেকে শর্তসাপেক্ষে সরে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত বছরের শেষ প্রান্তিক থেকে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আর আমদানিতে ডলারের দর ১১০ টাকা।