ঢাকা বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

পাটের ক্ষতি পোষাতে আমনে চোখ

পাটের ক্ষতি পোষাতে আমনে চোখ

সাটুরিয়ার বালিয়াটি ইউনিয়নের খলিলাবাদ গ্রামের ক্ষেতে রোপা আমন সমকাল

Advertisement
Advertisement

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৮:০০

এ বছর তিন বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলেন সাটুরিয়ার গোপালনগরের হযরত আলী। আশানুরূপ দাম না পেয়ে হতাশ হন। সেই ক্ষতি পোষাতে একই পরিমাণ জমিতে চাষ করেছেন রোপা আমনের। তাঁর ভাষ্য, ‘আমরা কষ্ট করে ফসল ফলাই। পাটের মতো ধানের দামও যদি ভালো না হয় তাহলে পথে বসতে হবে।’

এবার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠকর্মীরাও উন্নত জাতের চারা রোপণের পরামর্শ দিয়েছেন। ফলে এবার বেশি ফলন পাওয়ার আশা করছেন কৃষক। তারা বলছেন, এ বছর আবহাওয়া ভালো রয়েছে। ঘন ঘন বৃষ্টি হওয়ায় সেচও কম লাগছে। ফলে ফসল উৎপাদনের খরচও কমে আসবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, এবার সাটুরিয়ায় রোপা আমন আবাদে তাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ২৭০ হেক্টর জমি। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এবার কৃষকরা ৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করেছেন। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ হাজার ৩৬৭ টন। বেশি জমিতে চাষ হওয়ায় নতুন লক্ষ্যমাত্রা ১৬ হাজার টন।

৪০ শতাংশ জমির পাট কেটে রোপা আমনের চাষ করেছেন মো. খোরশেদ আলম। তাঁর বাড়ি বালিয়াটি ইউনিয়নের খলিলাবাদ গ্রামে। খোরশেদ বলছিলেন, কয়েক দিন ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধানগাছ পুষ্ট হয়েছে। তবে ৪০ শতাংশ জমিতে তাঁর খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকার মতো। কিন্তু ধানের দাম আগেরবার আশানুরূপ না পাওয়ায় তাঁর মতো কৃষকরা কষ্টে আছেন।

ধানের দাম ভালো না হলে লোকসান গুনতে হবে কৃষক আলী হোসেনকেও। এক বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষে তাঁর খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আলী হোসেনের আশা, ফলন যদি ভালো হয় তাহলে বিঘায় ২৩­-২৪ মণ ধান পাবেন। বাজারে ন্যায্য দাম পেলে খরচ বাদে ১০ হাজার টাকা আয় হবে।

এ বিষয়ে কথা হয় সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (মাঠকর্মী) মো. ইকরাম হোসেন ও মো. খোরশেদ আলমের সঙ্গে। তারা জানিয়েছেন, এবার ঘন ঘন বৃষ্টি হওয়ায় রোপা আমন ক্ষেতে পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন দেখা যায়নি। কৃষকের সেচও কম লাগছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে ১১০-১২০ দিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন কৃষক।

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গতবার উপজেলার কৃষকরা রোপা আমনের ব্রি ধান-৪৯ জাত চাষ করেছিলেন। এবার প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্রি ধান ৭৫, ১৭, ৮৭ জাতের আবাদ করছেন। এবার যে জাতের ধানের চারা বুনেছেন, তাতে ফলন বেশি হবে বলে তাঁর আশা।

আবহাওয়া ভালো হওয়ায় কৃষকদের কাছে গিয়ে মাঠকর্মীদের এসব জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল। সে জন্য এবার বেশি জমিতে চাষ হয়েছে বলেও জানান তিনি। আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মৌসুমে হাটবাজারে ধান বেশি উঠে যায়। তখন ব্যাপারীরা সিন্ডিকেট করে সস্তায় ধান কেনেন। ফলে কৃষক ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হন। এ জন্য তাঁর পরামর্শ, এবার কৃষক ধান কেটেই যেন বিক্রি না করেন। কিছুদিন বাড়িতে রেখে বিক্রি করলে তারা বেশি দাম পাবেন বলে মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুন