বাজেট নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফিকি
হঠাৎ নীতি পরিবর্তনে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হবে
সােমবার রাজধানীর হােটেল সোনারগাঁওয়ে ফিকির বাজেট প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনের নেতারা ফটাে রিলিজ
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৪ | ২৩:৫৬
বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কিছু সুবিধার প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছেন। হঠাৎ করে সরকারের করসহ বিভিন্ন নীতিতে পরিবর্তন তাদের নিরুৎসাহিত করবে বলে মনে করে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)। সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষে এমন মত দেওয়া হয়।
এফআইসিসিআই সভাপতি ও ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান জাভেদ আখতার বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের পাশাপাশি নীতির ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের বেশ কিছু সুবিধার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এর ভিত্তিতে অনেকে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু বাজেটে হঠাৎ কিছু বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বিশ্বাসযোগ্যতার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের মনে প্রশ্ন উঠবে। নতুন করে তারা হয়তো আর বিনিয়োগ করবেন না এবং পাইপলাইনের বিনিয়োগ নিয়ে পুনরায় ভাববেন।
টেলিকম, কার্বোনেটেড বেভারেজ, ওয়াটার পিউরিফায়ারের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক ও কর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ খাতের উদ্যোক্তারা কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়বেন এবং সম্ভাব্য বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি শিল্পের কাঁচামালের জন্য উৎসে কর কর্তন সহজ করাসহ কর ব্যবস্থাকে সহজ করার প্রস্তাবের প্রশংসা করেন। কিন্তু উচ্চ কার্যকর কর শিল্পের জন্য মূল উদ্বেগের বিষয় বলে উল্লেখ করেন।
বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের জন্য কর অবকাশ এবং মূলধনি যন্ত্রপাতিতে শূন্য শুল্কসহ কিছু সুবিধা বাতিল করার প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনের সাবেক সভাপতি রূপালী চৌধুরী বলেন, হঠাৎ করে নীতির পরিবর্তন হলে ভুল বার্তা যায়, তাহলে কীভাবে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।
তিনি বলেন, ভারত, ভিয়েতনামসহ প্রতিবেশী দেশগুলো এফডিআইর ক্ষেত্রে অনেক বেশি সুবিধা দেয়। বাংলাদেশে ন্যূনতম কিছু সুবিধা ছিল, তাও এবার তুলে নেওয়া হলো। এমন হলে কেন বিদেশি উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবেন! কারণ বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশই একমাত্র গন্তব্য নয়।
সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও উপদেষ্টা শেহজাদ মুনিম বলেন, প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে বিনিয়োগ হয়েছে। হঠাৎ করে নীতি পরিবর্তন হয়ে গেলে বিনিয়োগকারীদের আরেকবার আনা কঠিন হবে। এ ধরনের নীতির পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আগেই ঘোষণা দিয়ে ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করার পরামর্শ দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন এফআইসিসিআই পরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির, কর পরামর্শক স্নেহাশীষ বড়ুয়া প্রমুখ। বক্তারা সরকারকে আর্থিক খাতের সংস্কারের ওপর নজর দেওয়ার তাগিদ দেন। অন্যান্য নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের নিম্ন কর-জিডিপির অনুপাত বাড়ানোর আহ্বান জানান। এ ক্ষেত্রে খাতভিত্তিক রাজস্ব বিশ্লেষণ এবং করদাতার ভিত্তি বাড়ানোর মতো উদ্ভাবনী পদ্ধতির পরামর্শ দেওয়া হয়।