ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক

কারখানার নিরাপত্তায় সহযোগিতা অব্যাহত চান ব্যবসায়ী নেতারা

কারখানার নিরাপত্তায় সহযোগিতা অব্যাহত চান ব্যবসায়ী নেতারা

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার–উজ–জামানের সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতারা। ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪ | ১৫:৪৯ | আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৪ | ২২:৩২

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং শিল্পকারখানায় নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, কারখানার নিরাপত্তায় সেনাসদস্য ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী গঠন করলে তা ফলপ্রসূ হবে। বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে এক বৈঠকে ব্যবসায়ীরা এসব অনুরোধ জানান।  

বৈঠকে ব্যবসায়ী নেতাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান, এফবিসিসিআইর সভাপতি মাহবুবুল আলম, সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু ও মীর নাসির হোসেন, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে সার্ক চেম্বারের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে আইসিসিবির সহসভাপতি এ. কে. আজাদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও এমসিসিআইর সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ, বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, আইসিসিবির সহসভাপতি নাসের এজাজ বিজয় প্রমুখ।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সেনাপ্রধানের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে। বৈঠকটি কার্যকর ও ফলপ্রসূ হয়েছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম সমকালকে বলেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় ক্রেতাদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দ্রুত ক্রেতাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সে জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি করতে হবে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা চালুর ব্যবস্থা করতে হবে। এসব বিষয় বৈঠকে তুলে ধরেন তারা। 

তিনি বলেন, বন্দর ও মহাসড়কের নিরাপত্তা বাড়ানো এবং চাঁদাবাজমুক্ত করতে সেনাবাহিনীকে তারা অনুরোধ করেছেন। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বাজারে নির্বিঘ্নে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন। 

সার্ক চেম্বারের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন সমকালকে বলেন, কারখানাগুলোতে নতুন করে জুটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজদের উৎপাত বাড়ছে। এ ছাড়া শিল্প পুলিশকে অনেকে এখন পরোয়া করে না। তাই সেনাবাহিনী ও পুলিশ মিলে যৌথ বাহিনী গঠন করে কারখানাগুলোতে যেন পাহারা বসানো হয়, সেই অনুরোধ করা হয়েছে সেনাপ্রধানের কাছে।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার কারণে কয়েক দিন কারখানা বন্ধ ছিল। উৎপাদন ও রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। অনেক কারখানা মালিক শ্রমিকদের বেতন দিতে সমস্যায় পড়েছেন। এসব বিষয়ও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। 

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ সমকালকে বলেন, মূলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা কারখানার নিরাপত্তার জন্য শিল্প পুলিশকে সহযোগিতা করছেন। ব্যবসায়ীরা সেনাপ্রধানকে এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেছেন। 

বৈঠকে উপস্থিত একজন ব্যবসায়ী নেতা জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েই বেশি আলোচনা হয়েছে। শিল্পকারখানার নিরাপত্তায় যতদিন প্রয়োজন, সেনাসদস্যদের ততদিন শিল্প পুলিশকে সহযোগিতার জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেনাপ্রধান ব্যবসায়ীদের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং উপস্থিত কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ইস্যুতে নির্দেশনা দেন। 

বৈঠকের বিষয়ে এফবিসিসিআই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং শিল্পকারখানার উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখতে শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জোরদার করাসহ চাঁদাবাজি রোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। শিল্পের নিরাপত্তা ইস্যুতে শিল্প এলাকাগুলোয় বিভিন্ন কার্যক্রম ও টহল পরিচালনা করায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের সব নাগরিকের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন বলে ব্যবসায়ী নেতাদের আশ্বস্ত করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি জানান, শিল্প প্রতিষ্ঠান, সাপ্লাই চেইন, বন্দরের নিরাপত্তা প্রদানসহ দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যাতে নির্বিঘ্নে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন, সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা তৎপর রয়েছে। কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান যে কোনো ধরনের হুমকির শিকার হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান সেনাপ্রধান। 

আরও পড়ুন

×