আগস্টের পর মূল্যস্ফীতি কমেছে সেপ্টেম্বরেও
ছবি: প্রতীকী
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪ | ২২:০১
অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে বাজারে জিনিসপত্রের দাম ও বিভিন্ন সেবা ব্যয় কমছে। আগস্টের মতো সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরেও মূল্যস্ফীতি কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর বিবিএসের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, সেপ্টেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে নেমে এসেছে; আগস্টে যা ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতি শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ কমলো।
বাজারে পণ্য সরবরাহ বাড়াতে ৫ সেপ্টেম্বর আলু, পেঁয়াজ ও ডিম আমদানি শুল্ক কমিয়েছে সরকার। আলুতে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। আলুতে এ ধরনের শুল্ক ছিল ৩ শতাংশ। অন্যদিকে পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি আমদানিতে ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কও প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসব নিত্যপণ্য ভারত থেকেই সাধারণত আমদানি করা হয়। সম্প্রতি ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্কহার ৪০ শতাংশ থেকে অর্ধেক কমিয়ে ২০ শতাংশে নির্ধারণ করে। এসব কারণের বাইরে ডলারের দরের স্থিতিশীলতা থাকার সুফলও পাওয়া গেছে। ১২২ থেকে ১২০ টাকায় বিনিময় হারে ডলারের দর স্থিতিশীল আছে। এতে আমদানি ব্যয় আরও কিছুটা কমেছে।
বুধবার বিবিএসের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, খাদ্যপণ্য ও খাদ্যবহির্ভূত সব ধরনের পণ্যের দাম কমেছে সেপ্টেম্বরে। মাসটিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশে, যা আগস্টে ছিল ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি আগস্টের ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ থেকে কমে সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ হয়েছে। গত জুলাই পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল রেকর্ড ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়ায় ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ। এ হার আগস্টে ছিল ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। একইভাবে শহরাঞ্চলেও আগের মাসের ১০ দশমিক শূন্য ১ থেকে সেপ্টেম্বরের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশে নেমে এসেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে গত বছর থেকে মূল্যস্ফীতি নির্ণয় পদ্ধতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। ২০২১-২২ বছরকে ভিত্তি বছর ধরে মূল্যস্ফীতির হিসাব করা হয়েছে। পণ্য ও সেবার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। ভোক্তা মূল্যসূচকে ৭৪৯ ধরনের ৩৮৩ আইটেমের পণ্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতদিন ৪২২টি পণ্যের বাজারদর হিসাব করা হতো। নতুন হিসাবের আওতায় এসেছে মদ, সিগারেট, বেভারেজ ও মাদকদ্রব্য, সন্তানের শিক্ষার খরচ, পরিবারের ইন্টারনেটের খরচ, রেস্টুরেন্ট, হোটেলে খাবারের খরচসহ আরও বেশ কয়েকটি খাত। এ ছাড়া ইন্টারনেটের ব্যবহার যুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন পণ্য ও সেবা বাবদ মানুষের খরচের হিসাবের ভিত্তিতে প্রতি মাসের ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) তৈরি করে থাকে বিবিএস।
- বিষয় :
- মূল্যস্ফীতি
- অন্তবর্তীকালীন সরকার