উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমেই দেওয়া হবে পরিচালনার দায়িত্ব
জ্বালানি তেল খালাসের সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং
ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ১১:৪৯
কক্সবাজারের মহেশখালীতে দেশের প্রথম সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) সিস্টেম পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্ষেত্রে জিটুজি-ভিত্তিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রতিযোগিতামূলক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এ কাজের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদনের পাশাপাশি ভোজ্যতেল, ডাল, সার ও জ্বালানি তেল কেনাসংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে অর্থনৈতিক বিষয় ও ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে কমিটি দুটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আমদানি করা জ্বালানি তেল জাহাজ থেকে দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে খালাস করার জন্য গভীর সমুদ্রে ইন্সটলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্পটি ৮ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন হয়েছে।
এসপিএমের কমার্শিয়াল অপারেশন দ্রুত শুরু করার জন্য এ প্রকল্পের ইপিসি ঠিকাদার চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিকে জিটুজি ভিত্তিতে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকাদার হিসেবে সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় নিয়োগের বিষয়ে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভায় নীতিগত অনুমোদন হয়।
কিন্তু কাজটি একটি বিশেষায়িত কাজ হওয়ায় অধিকসংখ্যক দরদাতা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করলে কাজের মান সন্তোষজনক হবে ও দরমূল্য কম পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগে জিটুজি (সরাসরি) ক্রয়ের পরিবর্তে পিপিএ ও পিপিআরের আওতায় প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতিতে ক্রয় সম্পন্ন করার প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিতে উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দেয়।
পরে ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে দেশের জ্বালানি তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ওমানের আটটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৪ লাখ ২৫ হাজার টন জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এতে ব্যয় হবে ১১ হাজার ৪৭৯ কোটি ৪ লাখ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাবও অনুমোদন হয়। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে সুপার অয়েল রিফাইনারি থেকে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। প্রতি লিটার ১৭১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে এ তেল কিনতে ব্যয় হবে ১৮৯ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। একই পদ্ধতিতে শবনাম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে কেনা হবে ১০ হাজার টন মসুর ডাল। প্রতি কেজি ৯৪ টাকা ৯৫ পয়সা দরে এ ডাল কিনতে ব্যয় হবে ৯৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে কাতার, সৌদি আরব ও মরক্কো থেকে এক লাখ টন সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন হয়। এর মধ্যে ৪০ হাজার টন ডিএপি, ৩০ হাজার টন টিএসপি এবং ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৫৮২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এদিকে বৈঠকে ই-জিপি সিস্টেমের উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দোহাটেক নিউ মিডিয়া বাংলাদেশ এবং জিএসএস ইনফোটেক লিমিটেডের নিয়োগ অনুমোদন হয়েছে।
- বিষয় :
- জ্বালানি তেল