টানা ছয় দিন লেনদেন তিনশ কোটির নিচে

কোলাজ
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ মে ২০২৫ | ২৩:৪৫
আস্থা সংকটে বিনিয়োগ কমছে শেয়ারবাজারে। গত ছয় কর্মদিবসের প্রতিদিনই দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তিনশ কোটি টাকারও কম মূল্যের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এ সময় গড়ে ২৮৯ কোটি টাকার কম কেনাবেচা হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির পর গত পাঁচ বছরে এমন অবস্থা দেখা যায়নি।
বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, লাগাতার দর পতনের কারণে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে আসা ছেড়ে দিয়েছেন। ব্রোকারেজ হাউসের ফ্লোর শূন্য পড়ে আছে। শেয়ারদর তলানিতে নামলেও নতুন করে বিনিয়োগকারী আসছেন না। জুলাই অভ্যুত্থানের পর প্রথম কিছু দিন বড় অঙ্কের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। কিন্তু দর পতন শুরু হলে ক্রমাগত লেনদেনও কমছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ধস নামার পর গত ১৪ বছরের বেশি সময়ে ৪৭২ দিন ঢাকার শেয়ারবাজারের শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে ৩০০ কোটি টাকার নিচে। এর মধ্যে ৩৪৬ দিন ছিল ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে। গত পাঁচ বছরে ৭০ দিন ৩০০ কোটি টাকার নিচে শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যার ৩৩টি ছিল ২০২০ সালে। এ ছাড়া ২০২১ সালের ১ দিন, ২০২২ সালের ৬ দিন, ২০২৩ সালের ১৪ দিন এবং ২০২৪ সালে ৯ কর্মদিবসে এমন কেনাবেচা হয়। ২০২৫ সালের গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সাত দিন ডিএসইতে ৩০০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। টানা গত ছয় কর্মদিবসের বাইরে গত ২৯ এপ্রিলের লেনদেন ছিল ৩০০ কোটি টাকার কম।
বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা এবং লেনদেন কমার কারণ জানতে চাইলে প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সমকালকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা কাজ করছে। তাদের সামনে এমন কিছু নেই, যে কারণে আশাবাদী হয়ে নতুন করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তিনি বলেন, দেশের শেয়ারবাজার মূলত ব্যক্তি বিনিয়োগনির্ভর। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ নেই। বাজারের এমন অবস্থায় বড় বিনিয়োগ সক্ষমতা আছে, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানই বিনিয়োগ করছে না। এর কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক ক্ষেত্রের অনিশ্চয়তা এবং ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ স্থবিরতা।
ব্যক্তি শ্রেণির বড় কিছু বিনিয়োগকারী রয়েছেন, যারা অর্থনীতি যখন নিস্তেজ থাকে, তখন অর্থ শেয়ারে লগ্নি করে থাকেন। তারা এখন কেন বিনিয়োগে আসছেন না। এর কারণ ব্যাখ্যায় মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ব্যাংক সুদের হার বড় ইস্যু। যখনই ব্যাংকের সুদের হার বেড়েছে, তখনই শেয়ারবাজার কিছুটা নিম্নমুখী হয়েছে। ফলে যাদের বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করার সক্ষমতা আছে, তারা হয়তো সুদের হার কমার জন্য অপেক্ষা করছেন।
এদিকে গতকাল দিনভর শেয়ারদর ওঠানামায় বেশ অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেছে। বেশির ভাগ শেয়ারের দরবৃদ্ধি দিয়ে দিনের লেনদেন শুরু হলেও পৌনে এক ঘণ্টা পরই নিম্নমুখী ধারায় চলে যায়। অবশ্য শেষ ঘণ্টার দরবৃদ্ধি ১৮ পয়েন্ট বৃদ্ধি নিয়ে ৪৭৯৫ পয়েন্টে থামে।
- বিষয় :
- শেয়ারবাজার