- সম্পাদকীয় ও মন্তব্য
- ইতিহাসের সাক্ষী হতে এসেছেন ৭০ বছরের দিলবর
ইতিহাসের সাক্ষী হতে এসেছেন ৭০ বছরের দিলবর

দিলবর রহমান। ছবি- আতাউর রহমান
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে ইতিহাসের সাক্ষী হতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে সমবেত হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। তাদেরই একজন দিলবর রহমান। পেশায় একজন কৃষক তিনি। রাজবাড়ীর কালুকালী উপজেলার সাওরাইল এলাকা থেকে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঠাঁলবাড়ী ফেরিঘাটের জনসভায় এসেছেন ৭০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ। জনসভায় আসার জন্য বেশ ঝক্কি পোহাতে হয়েছে তাকে। তারপরও হাসিমুখে জানালেন, ইতিহাসের সাক্ষী হতে এসেছেন তিনি।
দিলবরের মতো দেশের নানাপ্রান্ত থেকে শনিবার লাখো জনতা জড়ো হয়েছিলেন কাঠাঁলবাড়ী ফেরিঘাট এলাকায়। সেখানে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সমাবেশ আয়োজন করা হলেও সমাবেশস্থলটি নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের উৎসবস্থলে পরিণত হয়।
দক্ষিণের জেলা বরগুনার বামনা থেকে কয়েশ নেতাকর্মীদের নিয়ে সমাবেশে আসেন ওই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট হারুন-অর-রশীদ। সঙ্গে এসেছিলেন তার স্ত্রী ফৌজিয়া খানম, তিনি বরগুনা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য। তিনি জানান, আজকে শুধু দলের কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসেননি। এসেছেন আবেগের জায়গা থেকে, পদ্মা সেতু উদ্বোধনকালের সাক্ষী হতে। তা হতে পেরেছেন, এটা জীবনে বড় পাওয়া।
বরিশালের বাকেরগঞ্জের বাসিন্দা রকিবুর রহমান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী। তিনিও এসেছিলেন উৎসবে যোগ দিতে। জানালেন, তার চাকরির ধরণ অনুযায়ী শনিবারও অফিস ছিল। কিন্তু ছুটি নিয়ে উৎসবে যোগ দিতে এসেছেন। কারণ এই পদ্মা সেতু তাদের যাতায়াত ভোগান্তি দূর করবে। তাই দায়বোধ থেকেই এসেছেন উদ্বোধনের উৎসবে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে শুক্রবারই সভাস্থলে চলে এসেছেন আবু সাঈদ মুন্সী। পেশায় একজন ব্যবসায়ী আবু সাঈদ মুন্সী জানান, তার অনেক ইচ্ছা ছিল মাওয়াপ্রান্তের উৎসবে যাবেন। কিন্তু সেখানে শুধু আমন্ত্রিত অথিদের অনুষ্ঠান হওয়ায় ইতিহাসের সাক্ষী হতে পদ্মার দক্ষিণপাড়ে চলে যান তিনি।
এই অনুষ্ঠানের অংশ হতে ঢাকা থেকে এসেছেন আইনজীবী রুবাবা ইয়াসমিন নূর। তিনি জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের উৎসব তিনি বয়সের কারণে দেখেননি। তাই স্বাধীন দেশের এই সক্ষমতার স্বারক উন্মোচনের দিনে উপস্থিত না থেকে পারেননি। তাকেও ঢাকা থেকে এখানে আসতে হয়েছে আগের দিন, থেকেছেন শিবচরে স্বাজনের বাড়িতে।
শরীয়তপুরের সখিপুর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে এসেছেন মহিউদ্দিন তুষার নামে এক তরুণ। তুষার জানালেন, উত্তার পদ্মা পারাপারে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে তাদের। প্রধানমন্ত্রী সেই ভোগান্তি আজ থেকে জাদুঘরে পাঠালেন। বঙ্গবন্ধু কন্যার কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে এই উৎসবে এসেছেন তারা।
পদ্মার দক্ষিণপাড় জাজিরার মাঝিরঘাট এলাকার বাসিন্দা ফজলে শেখ বলেন, তাদের বাড়ির কাছে পদ্মা সেতু। এর উদ্বোধনের দিন দেশের নানা এলাকা থেকে তাদের এলাকায় লোকজন এসেছেন। তারা তো ঘরে বসে থাকতে পারেন না! তাই শনিবার ভ্যান চালানো বন্ধ করে ছুটে এসেছেন উৎসবের স্থলে।
মন্তব্য করুন