দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর এ খাতের নানা অসঙ্গতি, অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতার আরও চিত্র উন্মোচিত হয়েছে। যথাযথ চিকিৎসাসেবা না পাওয়ার অভিযোগ এই প্রেক্ষাপটে আরও পুষ্ট হয়েছে। অভিযোগ আছে, চলমান এই মানবিক বিপর্যয়ের সময় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণের ব্যাপারে মনোযোগ না বাড়িয়ে চিকিৎসা-বহির্ভূত খাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মনোযোগ বেশি। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্য খাতের কেনাকাটায় দুর্নীতির চিত্র উন্মোচিত হয়। করোনা মোকাবিলায় মাস্ক, পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে তদন্তক্রমে এর সত্যতা মেলে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে শক্তিশালী সিন্ডিকেটের অপকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরকারের তড়িৎ পদক্ষেপের জন্য আমরা সাধুবাদ জানাই। শুক্রবার সমকালে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত শীর্ষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। করোনাদুর্যোগেও এমন নগ্ন দুর্নীতিতে যে কোনো শুভবোধসম্পন্ন মানুষের বিস্মিত না হয়ে উপায় নেই।
সিএমএসবি পরিচালককে আগেই বদলি করা হলেও বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে কোনো মন্ত্রণালয়ের একজন সচিব নিমজ্জিত হিমশৈলীর ভাসমান চূড়ার মতো। আমরা আশা করি, চূড়ায় হাত দিয়েই সরকার ক্ষান্ত হবে না, হাত দেবে এর স্তরে স্তরে। মহামারির এই কৃষ্ণকালে মানুষের জীবন-মরণ সমস্যার বিপরীতে দুর্নীতিবাজদের আখের গোছানোর এই অপতৎপরতার দৃষ্টান্তযোগ্য প্রতিকার সময়ের গুরুত্বপূর্ণ দাবি। সমকালের প্রতিবেদনে করোনাকালে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির যে খতিয়ান ফুটে উঠেছে, তা আমাদের ক্ষুব্ধ না করে পারে না। দাতাগোষ্ঠীর অর্থ লোপাটের ছক কষে অপতৎপরতা শুরু করেছিল দুর্নীতিবাজরা। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপকরণ ক্রয়ে দুর্নীতির এই মচ্চবের দায় সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীও এড়াতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে এ প্রসঙ্গ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ধাপে ধাপে দুর্নীতিবাজদের সরিয়ে দক্ষ, সৎ ও নিষ্ঠাবানদের নিয়ে স্বাস্থ্য খাত ঢেলে সাজানোর যে চিন্তা সরকার করছে, তাও সময়োপযোগী বলে আমরা মনে করি। এ ব্যাপারে কালক্ষেপণ না করে জনকল্যাণমুখী স্বাস্থ্য খাত গড়তে সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়ন জরুরি।
মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন সময় কেনাকাটা, নিয়োগসহ দুর্নীতির বহু চিত্র অতীতে সংবাদমাধ্যমে উঠে এলেও দৃষ্টান্তযোগ্য প্রতিকার দৃষ্টিগ্রাহ্য হয়নি বলেই বিষবৃক্ষ ক্রমান্বয়ে ডালপালা ছড়িয়েছে। অতীতে দুদক ও টিআইবির পর্যবেক্ষণেও স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির বহু চিত্র উন্মোচিত হয়েছিল। আমরা মনে করি, মহাদুর্যোগকালেও এ খাতে দুর্নীতির যে ধারা প্রবহমান, এর পরিপ্রেক্ষিতে খাতটির খোলনলটে পালটে ফেলা ছাড়া গত্যন্তর নেই। এ ব্যাপারে সরকারকে নির্মোহ অবস্থান নিয়ে দ্রুত যথাযথ প্রতিকার নিশ্চিত করতেই হবে। যদি মেধা, সততা, দক্ষতা ও জনবান্ধব নীতির ভিত্তিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা না যায়, তাহলে দেশের মানুষের কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবাপ্রাপ্তি সোনার হরিণই থেকে যাবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন কার্যালয়ে কিংবা স্তরে অসাধুদের যোগসাজশে দুর্নীতির যে শক্তিশালী বলয় তৈরি হয়েছে, তা ভাঙতেই হবে। একই সঙ্গে কভিড-১৯ মোকাবিলাসহ অন্য যে কোনো ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষ যাতে যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা পান, তা নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে।
আমরা জানি, দুর্নীতি নির্মূলে সরকারের 'শূন্য সহিষ্ণুতা'র অঙ্গীকার রয়েছে। কার্যক্ষেত্রে এর প্রমাণ দেখতে চাই। বৃক্ষের পরিচয় ফল দিয়েই হোক। স্বাস্থ্য খাতে কেনাকাটাসহ ঋণের টাকা ব্যবহারে রোগ যেহেতু গুরুতর ও গভীর, তাই টোটকা দাওয়াইয়ে কাজ হবে না। হাত দিতে হবে উচ্চ থেকে উৎসে। উল্লেখ্য, ভয়ংকর সামুদ্রিক ঘূর্ণিবার্তার আক্রমণের ভয়াবহতা সামাল দেওয়ার সফলতা আমাদের রয়েছে। সেখানে করোনাদুর্যোগ সামাল দেওয়া নিয়ে সংশ্নিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয় শুধু সমালোচনার মুখেই পড়ছে না, ভয়াবহ নেতিবাচক দৃষ্টান্তও সৃষ্টি করে চলছে একের পর এক। আমরা আশা করি, কেবল সচিব বা পরিচালক বদলের মধ্য দিয়েই এই সংস্কার উদ্যোগ থেমে যাবে না। একটি কার্যকর ও জনবান্ধব স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে রোগ যতদূর ছড়িয়েছে, ততদূর অস্ত্রোপচার করতে হবে। অর্থনীতি ও সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ গত এক দশকে যে উন্নতি করেছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তা ইতোমধ্যে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্বাস্থ্য খাত যদি সময় থাকতেই সংস্কার করা না যায়, তাহলে ঝুঁকি হয়ে উঠবে আরও গভীর।
সিএমএসবি পরিচালককে আগেই বদলি করা হলেও বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে কোনো মন্ত্রণালয়ের একজন সচিব নিমজ্জিত হিমশৈলীর ভাসমান চূড়ার মতো। আমরা আশা করি, চূড়ায় হাত দিয়েই সরকার ক্ষান্ত হবে না, হাত দেবে এর স্তরে স্তরে। মহামারির এই কৃষ্ণকালে মানুষের জীবন-মরণ সমস্যার বিপরীতে দুর্নীতিবাজদের আখের গোছানোর এই অপতৎপরতার দৃষ্টান্তযোগ্য প্রতিকার সময়ের গুরুত্বপূর্ণ দাবি। সমকালের প্রতিবেদনে করোনাকালে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির যে খতিয়ান ফুটে উঠেছে, তা আমাদের ক্ষুব্ধ না করে পারে না। দাতাগোষ্ঠীর অর্থ লোপাটের ছক কষে অপতৎপরতা শুরু করেছিল দুর্নীতিবাজরা। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপকরণ ক্রয়ে দুর্নীতির এই মচ্চবের দায় সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীও এড়াতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে এ প্রসঙ্গ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ধাপে ধাপে দুর্নীতিবাজদের সরিয়ে দক্ষ, সৎ ও নিষ্ঠাবানদের নিয়ে স্বাস্থ্য খাত ঢেলে সাজানোর যে চিন্তা সরকার করছে, তাও সময়োপযোগী বলে আমরা মনে করি। এ ব্যাপারে কালক্ষেপণ না করে জনকল্যাণমুখী স্বাস্থ্য খাত গড়তে সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়ন জরুরি।
মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন সময় কেনাকাটা, নিয়োগসহ দুর্নীতির বহু চিত্র অতীতে সংবাদমাধ্যমে উঠে এলেও দৃষ্টান্তযোগ্য প্রতিকার দৃষ্টিগ্রাহ্য হয়নি বলেই বিষবৃক্ষ ক্রমান্বয়ে ডালপালা ছড়িয়েছে। অতীতে দুদক ও টিআইবির পর্যবেক্ষণেও স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির বহু চিত্র উন্মোচিত হয়েছিল। আমরা মনে করি, মহাদুর্যোগকালেও এ খাতে দুর্নীতির যে ধারা প্রবহমান, এর পরিপ্রেক্ষিতে খাতটির খোলনলটে পালটে ফেলা ছাড়া গত্যন্তর নেই। এ ব্যাপারে সরকারকে নির্মোহ অবস্থান নিয়ে দ্রুত যথাযথ প্রতিকার নিশ্চিত করতেই হবে। যদি মেধা, সততা, দক্ষতা ও জনবান্ধব নীতির ভিত্তিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা না যায়, তাহলে দেশের মানুষের কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবাপ্রাপ্তি সোনার হরিণই থেকে যাবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন কার্যালয়ে কিংবা স্তরে অসাধুদের যোগসাজশে দুর্নীতির যে শক্তিশালী বলয় তৈরি হয়েছে, তা ভাঙতেই হবে। একই সঙ্গে কভিড-১৯ মোকাবিলাসহ অন্য যে কোনো ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষ যাতে যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা পান, তা নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে।
আমরা জানি, দুর্নীতি নির্মূলে সরকারের 'শূন্য সহিষ্ণুতা'র অঙ্গীকার রয়েছে। কার্যক্ষেত্রে এর প্রমাণ দেখতে চাই। বৃক্ষের পরিচয় ফল দিয়েই হোক। স্বাস্থ্য খাতে কেনাকাটাসহ ঋণের টাকা ব্যবহারে রোগ যেহেতু গুরুতর ও গভীর, তাই টোটকা দাওয়াইয়ে কাজ হবে না। হাত দিতে হবে উচ্চ থেকে উৎসে। উল্লেখ্য, ভয়ংকর সামুদ্রিক ঘূর্ণিবার্তার আক্রমণের ভয়াবহতা সামাল দেওয়ার সফলতা আমাদের রয়েছে। সেখানে করোনাদুর্যোগ সামাল দেওয়া নিয়ে সংশ্নিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয় শুধু সমালোচনার মুখেই পড়ছে না, ভয়াবহ নেতিবাচক দৃষ্টান্তও সৃষ্টি করে চলছে একের পর এক। আমরা আশা করি, কেবল সচিব বা পরিচালক বদলের মধ্য দিয়েই এই সংস্কার উদ্যোগ থেমে যাবে না। একটি কার্যকর ও জনবান্ধব স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে রোগ যতদূর ছড়িয়েছে, ততদূর অস্ত্রোপচার করতে হবে। অর্থনীতি ও সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ গত এক দশকে যে উন্নতি করেছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তা ইতোমধ্যে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্বাস্থ্য খাত যদি সময় থাকতেই সংস্কার করা না যায়, তাহলে ঝুঁকি হয়ে উঠবে আরও গভীর।
মন্তব্য করুন