বর্তমান সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ সংকট হলো করোনাভাইরাস। দেশে এরই মধ্যে হাজির হয় আরেকটি দুর্যোগ। গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তীব্রভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে সাতক্ষীরা জেলাবাসী এবং খুলনা জেলার কয়রা থানা। এখন পর্যন্ত কয়রায় ৪০-৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। সেখানকার কয়েকটি ভিডিওচিত্রে দেখা যাচ্ছে, ঘরের মেঝেতে পানি। বাড়ির উঠানে পানি। এতদিন হয়ে গেল এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হলো না!

কয়রা থানা এবং তার আশপাশে গ্রামগুলো প্রায়ই নদী তীরবর্তী। বছরের পর বছর নদীর ভাঙনে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হচ্ছে। এবারই সবচেয়ে বড় ভাঙন হয়েছে। ভাঙন বলতে নদীর পাড় ভেঙে যাওয়া। প্রতিদিন দ্বিগুণ করে ভেঙে যাচ্ছে, নদীর জোয়ারের পানি ঘরের মেঝেতে উঠছে আবার ভাটিতে উঠান পর্যন্ত পানি নামছে। এই মহামারিতে এ যেন আরেক মহামারি।

ওখানকার জনপ্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা যেন কেউ নন। তাদের ছায়া দেখাই দুস্কর। জানতে পারলাম বাঁধ নির্মাণের জন্য সেনাবাহিনী পাঠানো হবে নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, ততদিনে পুরো কয়রা অঞ্চলের হদিস থাকবে না। নদীতে মিলিয়ে যাবে।

শোনা যাচ্ছে, সামান্য পরিসরে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে ওই নদী-তীরবর্তী পানিবন্দিদের। কিন্তু তাদের দাবি ত্রাণ নয়, মজবুত বাঁধ চাই। আমি মনে করি এর সমাধান একমাত্র বাঁধ। সামান্য ত্রাণে কোনো রকম প্রাণ বাঁচবে। কিন্তু পানি ঠেকানো না গেলে এত মানুষের ঘরবাড়ি, গৃহস্থালি সব নদী খেয়ে ফেলবে।

সরকারের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ, বর্তমান করোন সংকটকে সামনে রেখে এটি এড়িয়ে যাওয়া মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তাই খুব দ্রুত এ সংকট সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নিন। না হলে পুরো কয়রাবাসীকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। এতগুলো মানুষ যারা বাংলাদেশের নাগরিক তারা কেন নদীর ভেতরে পানিবন্দি।

আশা করি, সরকার এ বিষয় খুব দ্রুত একটা ব্যবস্থা নেবে এবং পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ স্বস্তি পাবে।

বাগেরহাট