- সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয়
- করোনাকালে নিরাপদ মাতৃত্ব
করোনাকালে নিরাপদ মাতৃত্ব
বিশ্বজুড়ে চলছে কভিড-১৯ মহামারি। দিন দিন এর বিস্তার বাড়ছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অধিক সংখ্যক কভিড রোগী শনাক্তের কারণে চাপের মুখে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। আর এতে অধিক বয়সী মানুষের সঙ্গে চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা মা, নবজাতক ও শিশুরা। এ সময়ে সর্বাধিক শিশু জন্মের দিক দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান নবমে। এই পরিস্থিতিতে অন্তঃসত্ত্বা ও নবজাতকদের জীবন রক্ষায় সেবা অব্যাহত রাখার আহ্বান ইউনিসেফের।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সবাইকে সচেতন করছেন- বারবার সাবান পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে বলছেন, মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হতে মানা করছেন, কোনো লক্ষণ দেখা দিলেই আলাদা ঘরে থাকতে বলছেন। তবে বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে আলাদা ঘরে থাকার বিষয়টি মোটেই সহজ নয়। ইউনিসেফের মতে, করোনাকালীন প্রসূতি মা ও নবজাতককে রূঢ় বাস্তবতার মুখে পড়তে হবে। মহামারি ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে নেওয়া হয়েছে নানা নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। একদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে অন্তঃসত্ত্বা ভয় পাচ্ছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে। আবার অনেক সময় লকডাউন বা চলাচলে বিধিনিষেধের কারণে তারা নিয়মিত বা কখনও কখনও জরুরি সেবা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কভিড আক্রান্তদের সেবাদানে ব্যস্ত থাকায় শিশু জন্মের সময় দক্ষ লোকবলের ঘাটতি থাকছে। ফলে প্রয়োজনের মুহূর্তে দক্ষ কারও সেবা বা সাড়া পাওয়াটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
অন্তঃসত্ত্বাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষায় সব ধরনের পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে চলা, করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে কিনা, তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং কারও উপসর্গ দেখা দিলে বা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লে নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের পরামর্শ নেওয়া। অন্যদের কভিড-১৯ সংক্রমণ এড়াতেও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন- শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, একসঙ্গে হওয়া থেকে বিরত থাকা এবং অনলাইনে স্বাস্থ্যসেবা পরামর্শ নেওয়া। এ ছাড়া আক্রান্ত বা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস, কাশি বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসাসেবা নেওয়া। আক্রান্ত মায়েদের শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মাস্ক পরতে হবে। শিশুকে স্পর্শ করার আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। একই সঙ্গে প্রসূতি যেখানে থাকেন এবং যেসব জিনিসপত্র ব্যবহার করেন, সেগুলো নিয়মিত জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার করতে হবে।
একই সঙ্গে করোনাকালীন জীবন রক্ষায় বিভিন্ন দেশের সরকার ও স্বাস্থ্যসেবাদাতাদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ। এর অন্যতম অন্তঃসত্ত্বাদের গর্ভকালীন চেকআপ, সন্তান জন্মের সময় ও জন্মের পরের সেবা এবং প্রয়োজন মতো কভিড-১৯-সংক্রান্ত সেবা পেতে সহায়তা দেওয়া। শিশুর জন্ম ও পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে সংক্রমণ প্রতিরোধে সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। অন্তঃসত্ত্বা ও প্রসূতি মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের হোম ভিজিটের সুযোগ দেওয়া। প্রত্যন্ত এলাকার নারীদের গর্ভকালীন ও প্রসূতি সেবার জন্য টেলিফোনে পরামর্শ নিতে উৎসাহিত করা। যেসব জায়গায় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে, সেখানে বাড়িতে গিয়ে সন্তান জন্মকালীন সেবা প্রদানে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং জীবাণুমুক্ত বার্থ কিটসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করা। জীবন রক্ষাকারী সেবাগুলো নির্বিঘ্ন রাখতে প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জামের সঙ্গে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক উপকরণ বরাদ্দ দেয়ওা। পাশাপাশি ইউনিসেফ সতর্ক করেছে যে, অসুস্থ নবজাতকের জরুরি সেবা লাগবে, যেহেতু তাদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে। এ ছাড়া নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করার জন্য সহায়তা এবং তাকে সুস্থ রাখতে ওষুধ, টিকা ও পুষ্টি প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
কভিড-১৯ সংকট শুরুর পর দেশের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ কমেছে। সব হাসপাতালে সব ধরনের জরুরি গর্ভকালীন ও প্রসূতি সেবা মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে বারবার হাত ধোয়া, সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব ও অন্য সতর্কতাগুলো মেনে চলার বিকল্প নেই। একই সঙ্গে নিরাপদে সন্তান জন্মদান কোথায় হবে, সে বিষয়ে ধাত্রী বা চিকিৎসকের পরামর্শ আগেই নিতে হবে। প্রয়োজনের সময় ওই জায়গা যেন পাওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এক কথায়, বর্তমান বাস্তবতায় সন্তান জন্মদান নিয়ে পরিকল্পনা করা খুব জরুরি।
সাংবাদিক
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সবাইকে সচেতন করছেন- বারবার সাবান পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে বলছেন, মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হতে মানা করছেন, কোনো লক্ষণ দেখা দিলেই আলাদা ঘরে থাকতে বলছেন। তবে বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে আলাদা ঘরে থাকার বিষয়টি মোটেই সহজ নয়। ইউনিসেফের মতে, করোনাকালীন প্রসূতি মা ও নবজাতককে রূঢ় বাস্তবতার মুখে পড়তে হবে। মহামারি ঠেকাতে বিশ্বজুড়ে নেওয়া হয়েছে নানা নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। একদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে অন্তঃসত্ত্বা ভয় পাচ্ছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে। আবার অনেক সময় লকডাউন বা চলাচলে বিধিনিষেধের কারণে তারা নিয়মিত বা কখনও কখনও জরুরি সেবা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কভিড আক্রান্তদের সেবাদানে ব্যস্ত থাকায় শিশু জন্মের সময় দক্ষ লোকবলের ঘাটতি থাকছে। ফলে প্রয়োজনের মুহূর্তে দক্ষ কারও সেবা বা সাড়া পাওয়াটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
অন্তঃসত্ত্বাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষায় সব ধরনের পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে চলা, করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে কিনা, তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং কারও উপসর্গ দেখা দিলে বা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লে নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের পরামর্শ নেওয়া। অন্যদের কভিড-১৯ সংক্রমণ এড়াতেও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন- শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, একসঙ্গে হওয়া থেকে বিরত থাকা এবং অনলাইনে স্বাস্থ্যসেবা পরামর্শ নেওয়া। এ ছাড়া আক্রান্ত বা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস, কাশি বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসাসেবা নেওয়া। আক্রান্ত মায়েদের শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মাস্ক পরতে হবে। শিশুকে স্পর্শ করার আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। একই সঙ্গে প্রসূতি যেখানে থাকেন এবং যেসব জিনিসপত্র ব্যবহার করেন, সেগুলো নিয়মিত জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার করতে হবে।
একই সঙ্গে করোনাকালীন জীবন রক্ষায় বিভিন্ন দেশের সরকার ও স্বাস্থ্যসেবাদাতাদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ। এর অন্যতম অন্তঃসত্ত্বাদের গর্ভকালীন চেকআপ, সন্তান জন্মের সময় ও জন্মের পরের সেবা এবং প্রয়োজন মতো কভিড-১৯-সংক্রান্ত সেবা পেতে সহায়তা দেওয়া। শিশুর জন্ম ও পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে সংক্রমণ প্রতিরোধে সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। অন্তঃসত্ত্বা ও প্রসূতি মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের হোম ভিজিটের সুযোগ দেওয়া। প্রত্যন্ত এলাকার নারীদের গর্ভকালীন ও প্রসূতি সেবার জন্য টেলিফোনে পরামর্শ নিতে উৎসাহিত করা। যেসব জায়গায় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে, সেখানে বাড়িতে গিয়ে সন্তান জন্মকালীন সেবা প্রদানে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং জীবাণুমুক্ত বার্থ কিটসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করা। জীবন রক্ষাকারী সেবাগুলো নির্বিঘ্ন রাখতে প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জামের সঙ্গে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক উপকরণ বরাদ্দ দেয়ওা। পাশাপাশি ইউনিসেফ সতর্ক করেছে যে, অসুস্থ নবজাতকের জরুরি সেবা লাগবে, যেহেতু তাদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে। এ ছাড়া নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করার জন্য সহায়তা এবং তাকে সুস্থ রাখতে ওষুধ, টিকা ও পুষ্টি প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
কভিড-১৯ সংকট শুরুর পর দেশের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ কমেছে। সব হাসপাতালে সব ধরনের জরুরি গর্ভকালীন ও প্রসূতি সেবা মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে বারবার হাত ধোয়া, সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব ও অন্য সতর্কতাগুলো মেনে চলার বিকল্প নেই। একই সঙ্গে নিরাপদে সন্তান জন্মদান কোথায় হবে, সে বিষয়ে ধাত্রী বা চিকিৎসকের পরামর্শ আগেই নিতে হবে। প্রয়োজনের সময় ওই জায়গা যেন পাওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এক কথায়, বর্তমান বাস্তবতায় সন্তান জন্মদান নিয়ে পরিকল্পনা করা খুব জরুরি।
সাংবাদিক
মন্তব্য করুন