ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) গত বছরের নির্বাচন ছিল প্রায় তিন দশকের অচলায়তন ভেঙে দেশের সব ছাত্র সংসদ সক্রিয় করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় ও নেতৃত্ব তৈরির একটি উপলক্ষ। 'দ্বিতীয় সংসদ' খ্যাত ডাকসু নির্বাচনটি ছিল তাই ছাত্র সমাজ ও মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার। কিন্তু 'প্রত্যাশিত'ভাবে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়াসহ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের এক বছরের কার্যক্রমে অনেকক্ষেত্রেই সে আশা পূরণ হয়নি। তারপরও আমরা সাধুবাদ জানাই যে, অন্তত দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার অবসান ঘটেছে এবং ধীরে ধীরে নিশ্চয়ই ডাকসু মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবে। আমরা দেখছি, নতুন করে ডাকসু আবার আলোচনায় এসেছে এর নেতৃত্ব প্রসঙ্গে। আমরা জানি, গত বছরের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ডাকসু নির্বাচন। এ বছরের ২২ মার্চ ডাকসুর নির্বাচিত কমিটির এক বছরের মেয়াদ পূর্ণ হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নতুন নির্বাচনের তারিখ না ঘোষণা করায় ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৯০ দিন বেড়েছিল। সোমবার এই সময়ও শেষ হয় বলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্ব্বয়ংক্রিয়ভাবে কমিটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নতুন কোনো তৎপরতা নেই। এটা সত্য যে করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় না খুললে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। ফলে এটা অনুমিত যে, নির্বাচনের জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে। তার মানে এই নয় যে, বর্তমান কমিটির মেয়াদ ওই নির্বাচন পর্যন্ত থাকবে।
মঙ্গলবার সমকালের প্রতিবেদনে এসেছে, 'তবুও থাকতে চান নুর-রাব্বানী'। আমরা দেখেছি, ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। অন্যদিকে এজিএস সাদ্দাম হোসেনসহ একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের 'নীরবতা' প্রত্যাশিত নয়। আমরা মনে করি, গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই ডাকসুকে সামনে অগ্রসর হতে হবে। করোনাপ্রকোপের পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এ পরিস্থিতির কারণে এমনিতেই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ ৯০ দিন বাড়ানো হয়েছে। এখন আর বাড়ানোর সুযোগ ডাকসু গঠনতন্ত্র দেয়নি। গঠনতন্ত্র অনুসারেই যেহেতু ডাকসু চলছে, সেভাবেই চলা উচিত। এখন গঠনতন্ত্র সংশোধন করলে দেখা যাবে ভবিষ্যতেও ঠুনকো কারণে সেট পরিবর্তন হচ্ছেন।
আমরা দেখেছি, ডাকসু জিএস গোলাম রাব্বানী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, করোনাদুর্যোগের কারণে তারা তাদের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন পর্যন্ত পদে বহাল থাকতে চান। কিন্তু বিষয়টি ব্যক্তির ইচ্ছাধীন নয় বিধায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গঠনতন্ত্রের আলোকেই কাজ করতে হবে। ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যেহেতু কমিটির মেয়াদ শেষ, স্বাভাবিকভাবেই তাদের মূল্যায়নের বিষয়টি সামনে আসছে। সমকালের আলোচ্য প্রতিবেদনে এসেছে, ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থীরা যে পরিমাণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার অনেকাংশই পূরণে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তবে বাস্তব সমস্যাও নিশচয়ই ছিল। তারপরও কয়েকটি বিভাগের উন্নয়ন ফি কমানো, হলের ফি কমানো, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলার আয়োজন, সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ, ছাত্রী হলসহ বিভিন্ন রুটে পরিবহন বৃদ্ধি, লাইব্রেরি খোলার সময়সীমা বাড়ানো ইত্যাদি কিছু ভালো কাজ ডাকসু কমিটি সদস্যরা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা 'গণরুম' ও 'গেস্টরুম' প্রথা এখনও চালু থাকলেও এদের পরিবর্তিত নাম যথাক্রমে 'বন্ধুরুম' ও 'মতবিনিময় কক্ষ' ইতিবাচক হিসেবেই আমরা দেখছি। আমরা চাইব, নামের সঙ্গে সুবিচার করে এসব রুমের সংস্কৃতিও পরিবর্তন হোক। একই সঙ্গে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনও ডাকসু নেতৃত্বকে সহায়তা করুক।
আমরা জানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অতীতে দেশের ক্রান্তিকালে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছে। ভাষার মর্যাদা, স্বাধিকার, স্বাধীনতা কিংবা গণতন্ত্র অর্জনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন এখানকার শিক্ষার্থী-ছাত্র নেতারাই। সে ভূমিকা ও চর্চার জন্যই ডাকসু নির্বাচন নিয়মিত হওয়া জরুরি। আমরা চাই ডাকসুই কেবল নয়, অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ছাত্র সংসদ যথার্থ অর্থেই কার্যকর হোক। কারণ ছাত্র সংসদ কার্যকর হলে যেমন সহশিক্ষা কার্যক্রম প্রাণ ফিরে পায়, তেমনই নিশ্চিত হয় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতেও ডাকসু একটি কার্যকর মাধ্যম। কিন্তু সেই ডাকসু নিয়েই যদি প্রশ্ন ওঠে কিংবা ডাকসু যদি তার চলমান ধারা বজায় রাখতে না পারে সেটি হবে দুঃখজনক।
মঙ্গলবার সমকালের প্রতিবেদনে এসেছে, 'তবুও থাকতে চান নুর-রাব্বানী'। আমরা দেখেছি, ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। অন্যদিকে এজিএস সাদ্দাম হোসেনসহ একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের 'নীরবতা' প্রত্যাশিত নয়। আমরা মনে করি, গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই ডাকসুকে সামনে অগ্রসর হতে হবে। করোনাপ্রকোপের পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এ পরিস্থিতির কারণে এমনিতেই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ ৯০ দিন বাড়ানো হয়েছে। এখন আর বাড়ানোর সুযোগ ডাকসু গঠনতন্ত্র দেয়নি। গঠনতন্ত্র অনুসারেই যেহেতু ডাকসু চলছে, সেভাবেই চলা উচিত। এখন গঠনতন্ত্র সংশোধন করলে দেখা যাবে ভবিষ্যতেও ঠুনকো কারণে সেট পরিবর্তন হচ্ছেন।
আমরা দেখেছি, ডাকসু জিএস গোলাম রাব্বানী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, করোনাদুর্যোগের কারণে তারা তাদের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন পর্যন্ত পদে বহাল থাকতে চান। কিন্তু বিষয়টি ব্যক্তির ইচ্ছাধীন নয় বিধায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গঠনতন্ত্রের আলোকেই কাজ করতে হবে। ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যেহেতু কমিটির মেয়াদ শেষ, স্বাভাবিকভাবেই তাদের মূল্যায়নের বিষয়টি সামনে আসছে। সমকালের আলোচ্য প্রতিবেদনে এসেছে, ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থীরা যে পরিমাণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার অনেকাংশই পূরণে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তবে বাস্তব সমস্যাও নিশচয়ই ছিল। তারপরও কয়েকটি বিভাগের উন্নয়ন ফি কমানো, হলের ফি কমানো, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলার আয়োজন, সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ, ছাত্রী হলসহ বিভিন্ন রুটে পরিবহন বৃদ্ধি, লাইব্রেরি খোলার সময়সীমা বাড়ানো ইত্যাদি কিছু ভালো কাজ ডাকসু কমিটি সদস্যরা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা 'গণরুম' ও 'গেস্টরুম' প্রথা এখনও চালু থাকলেও এদের পরিবর্তিত নাম যথাক্রমে 'বন্ধুরুম' ও 'মতবিনিময় কক্ষ' ইতিবাচক হিসেবেই আমরা দেখছি। আমরা চাইব, নামের সঙ্গে সুবিচার করে এসব রুমের সংস্কৃতিও পরিবর্তন হোক। একই সঙ্গে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনও ডাকসু নেতৃত্বকে সহায়তা করুক।
আমরা জানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অতীতে দেশের ক্রান্তিকালে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছে। ভাষার মর্যাদা, স্বাধিকার, স্বাধীনতা কিংবা গণতন্ত্র অর্জনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন এখানকার শিক্ষার্থী-ছাত্র নেতারাই। সে ভূমিকা ও চর্চার জন্যই ডাকসু নির্বাচন নিয়মিত হওয়া জরুরি। আমরা চাই ডাকসুই কেবল নয়, অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ছাত্র সংসদ যথার্থ অর্থেই কার্যকর হোক। কারণ ছাত্র সংসদ কার্যকর হলে যেমন সহশিক্ষা কার্যক্রম প্রাণ ফিরে পায়, তেমনই নিশ্চিত হয় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান। আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতেও ডাকসু একটি কার্যকর মাধ্যম। কিন্তু সেই ডাকসু নিয়েই যদি প্রশ্ন ওঠে কিংবা ডাকসু যদি তার চলমান ধারা বজায় রাখতে না পারে সেটি হবে দুঃখজনক।
মন্তব্য করুন