- সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয়
- তারুণ্য ও বাংলাদেশতারুণ্য ও বাংলাদেশ
তারুণ্য ও বাংলাদেশতারুণ্য ও বাংলাদেশ

যুগে যুগে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যত পরিবর্তন সূচিত হয়েছে, তা সম্ভব হয়েছে সে দেশের তরুণদের দ্বারা। আমাদের দেশেও ভাষার অধিকার, স্বাধিকার, স্বাধীনতা, স্বৈরাচারকে হঠিয়ে গণতন্ত্রের সংগ্রামে তরুণরাই পালন করেছে অগ্রণী ভূমিকা। শুধু এসবেই নয়, যে কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তরুণরাই। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ট্রাফিক পুলিশসহ অন্যরা সবাই মিলে যা করতে পারেনি, তা করে দেখিয়েছে তরুণরা। কিছু কিছু এলাকায় এই করোনাকালে যখন লকডাউন চলছে, সেখানেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের একটা ক্ষুদ্র অংশ।
রবীন্দ্রনাথ সেই কবে ডাক দিয়ে গেছেন, 'ওরে নবীন ওরে আমার কাঁচা/ ওরে সবুজ ওরে অবুঝ আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা।' কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন, 'কে আছো জোয়ান, হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ/এ তুফান ভারি, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।' কিন্তু এত কিছুর পরও হঠাৎ কেন যেন মনে হচ্ছে, চারদিকে তরুণের ছড়াছড়ি, কিন্তু তারুণ্যের ক্ষিপ্র তেজের যেন বড়ই অভাব! করোনা আমাদের যতই বেঁধে রাখুক, তারুণ্য তো ঘরে বসে থেকে অনিয়ম করে খাওয়া, দিনভর ঘুমানো আর রাত জেগে ভিডিও গেম বা সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে বসে থাকার জন্য নয়। চারপাশে তাকালে মনে হয়, তরুণরা যেন রবীন্দ্রনাথের বর্ণিত প্রবীণের জায়গা দখল করে স্থির হয়ে আছে, চক্ষু-কর্ণ দুটি ডানায় ঢেকে রেখে ঝিমাচ্ছে।
আমাদের চারপাশে এখন সংকটের পাহাড়। গরিবের খাবার নেই, অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা নেই, খেটে খাওয়া মানুষের কাজ নেই, ঘরের বাইরে বের হলেই সাহায্যের আশায় শুধু হাত পেতে এগিয়ে আসা মানুষের ভিড়। করোনাকালেও প্রতারণা আর দুর্নীতির শাখা-প্রশাখা ভয়াবহভাবে বিস্তার লাভ করছে। চারদিকে ধুরন্ধর সাহেদ, সাবরিনার মতো প্রতারকে ছেয়ে যাচ্ছে দেশ। মুখে মাস্ক পরে চলাফেরা করা এ সময়টাতেও সন্ত্রাস, দুর্নীতি, যৌন হয়রানি, ভেজাল খাদ্য আর ভেজাল ওষুধে সয়লাব বাজার, মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি- কোনো অপতৎপরতাই থেমে নেই। কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে তো এসব রোধ করা যায় না। অথচ নিশ্চুপ আমাদের তারুণ্য! অন্যায় হচ্ছে দেখেও নির্বিকারভাবে সবার মতো তারাও পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। কেউ অমানবিক আচরণের শিকার হলেও তরুণদের মধ্যে কোনো বিকার নেই। অনেকেরই মনোভাব অনেকটা এমন- কী দরকার এসব ঝামেলায় গিয়ে? কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি দেখলেই তারা পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। এভাবে মাথা নিচু করে বেঁচে থাকা কি তরুণদের মানায়?
করোনাকালে ফ্রন্টলাইন যুদ্ধের ভার কেন কেবল চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ছেড়ে দিয়ে সবাই বসে থাকবে? সংকট মোকাবিলায় তরুণরা এগিয়ে এলে অনেক কিছুই করা সম্ভব। সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অভ্যাস সৃষ্টি, সকল পর্যায়ের রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা, বিভিন্ন উৎস থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে তা দুস্থদের কাছে পৌঁছানো, যে কোনো অন্যায় ও সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো- তারুণ্য বলতে তো আমরা এসবকেই বুঝি। পারিবারিক ও সামাজিক বাধা থাকবেই, তা উপেক্ষা করে মানুষের দুঃসময়ে পাশে থাকার নামই তারুণ্য!
সে জন্যই রবীন্দ্রনাথের ভাষায় ডাক দিয়ে তরুণদের বলতে চাই, আধমরাদের ঘা দিতে আবার জেগে ওঠো হে তরুণ, কালবোশেখির মতো তোমরা এসে আবার নতুনের কেতন উড়িয়ে দাও। আজ আন্তর্জাতিক যুব দিবস। এ বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য 'বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জনে তরুণদের অংশগ্রহণ।' আমরা বিশ্বাস করতে চাই, আমাদের আশা-জাগানিয়া তারুণ্য বদলে দেবে সমাজ ও দেশ। সমস্যা দেখে উটপাখির মতো বালুতে মুখ না গুঁজে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার আওয়াজ তুলবে তোমরা মানবিকতার মিছিলে। তোমরা আবারও সমাজ ও দেশের জন্য তৈরি করবে নতুন ইতিহাস- তোমাদের ওপর ভরসা করেই তাকিয়ে আছে পুরো বাংলাদেশ।
উন্নয়ন ও সংস্কৃতি কর্মী
রবীন্দ্রনাথ সেই কবে ডাক দিয়ে গেছেন, 'ওরে নবীন ওরে আমার কাঁচা/ ওরে সবুজ ওরে অবুঝ আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা।' কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন, 'কে আছো জোয়ান, হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ/এ তুফান ভারি, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।' কিন্তু এত কিছুর পরও হঠাৎ কেন যেন মনে হচ্ছে, চারদিকে তরুণের ছড়াছড়ি, কিন্তু তারুণ্যের ক্ষিপ্র তেজের যেন বড়ই অভাব! করোনা আমাদের যতই বেঁধে রাখুক, তারুণ্য তো ঘরে বসে থেকে অনিয়ম করে খাওয়া, দিনভর ঘুমানো আর রাত জেগে ভিডিও গেম বা সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে বসে থাকার জন্য নয়। চারপাশে তাকালে মনে হয়, তরুণরা যেন রবীন্দ্রনাথের বর্ণিত প্রবীণের জায়গা দখল করে স্থির হয়ে আছে, চক্ষু-কর্ণ দুটি ডানায় ঢেকে রেখে ঝিমাচ্ছে।
আমাদের চারপাশে এখন সংকটের পাহাড়। গরিবের খাবার নেই, অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা নেই, খেটে খাওয়া মানুষের কাজ নেই, ঘরের বাইরে বের হলেই সাহায্যের আশায় শুধু হাত পেতে এগিয়ে আসা মানুষের ভিড়। করোনাকালেও প্রতারণা আর দুর্নীতির শাখা-প্রশাখা ভয়াবহভাবে বিস্তার লাভ করছে। চারদিকে ধুরন্ধর সাহেদ, সাবরিনার মতো প্রতারকে ছেয়ে যাচ্ছে দেশ। মুখে মাস্ক পরে চলাফেরা করা এ সময়টাতেও সন্ত্রাস, দুর্নীতি, যৌন হয়রানি, ভেজাল খাদ্য আর ভেজাল ওষুধে সয়লাব বাজার, মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি- কোনো অপতৎপরতাই থেমে নেই। কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে তো এসব রোধ করা যায় না। অথচ নিশ্চুপ আমাদের তারুণ্য! অন্যায় হচ্ছে দেখেও নির্বিকারভাবে সবার মতো তারাও পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। কেউ অমানবিক আচরণের শিকার হলেও তরুণদের মধ্যে কোনো বিকার নেই। অনেকেরই মনোভাব অনেকটা এমন- কী দরকার এসব ঝামেলায় গিয়ে? কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি দেখলেই তারা পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। এভাবে মাথা নিচু করে বেঁচে থাকা কি তরুণদের মানায়?
করোনাকালে ফ্রন্টলাইন যুদ্ধের ভার কেন কেবল চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ছেড়ে দিয়ে সবাই বসে থাকবে? সংকট মোকাবিলায় তরুণরা এগিয়ে এলে অনেক কিছুই করা সম্ভব। সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অভ্যাস সৃষ্টি, সকল পর্যায়ের রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা, বিভিন্ন উৎস থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে তা দুস্থদের কাছে পৌঁছানো, যে কোনো অন্যায় ও সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো- তারুণ্য বলতে তো আমরা এসবকেই বুঝি। পারিবারিক ও সামাজিক বাধা থাকবেই, তা উপেক্ষা করে মানুষের দুঃসময়ে পাশে থাকার নামই তারুণ্য!
সে জন্যই রবীন্দ্রনাথের ভাষায় ডাক দিয়ে তরুণদের বলতে চাই, আধমরাদের ঘা দিতে আবার জেগে ওঠো হে তরুণ, কালবোশেখির মতো তোমরা এসে আবার নতুনের কেতন উড়িয়ে দাও। আজ আন্তর্জাতিক যুব দিবস। এ বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য 'বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জনে তরুণদের অংশগ্রহণ।' আমরা বিশ্বাস করতে চাই, আমাদের আশা-জাগানিয়া তারুণ্য বদলে দেবে সমাজ ও দেশ। সমস্যা দেখে উটপাখির মতো বালুতে মুখ না গুঁজে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার আওয়াজ তুলবে তোমরা মানবিকতার মিছিলে। তোমরা আবারও সমাজ ও দেশের জন্য তৈরি করবে নতুন ইতিহাস- তোমাদের ওপর ভরসা করেই তাকিয়ে আছে পুরো বাংলাদেশ।
উন্নয়ন ও সংস্কৃতি কর্মী
মন্তব্য করুন