- সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয়
- উচ্চশিক্ষা ও অনলাইন ক্লাস
উচ্চশিক্ষা ও অনলাইন ক্লাস

মার্চ মাসে দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পর কিছুদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায় অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা কার্যক্রমসহ স্বাভাবিক জীবন প্রণালি। এর পর সবকিছু স্বাভাবিকতায় ফিরলেও বন্ধ রয়েছে দেশের শিক্ষা কার্যক্রম। করোনায় বিপর্যস্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় সবচেয়ে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গ্রহণ। দফায় দফায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের পর এ বছর পরীক্ষা না নিয়েই শিক্ষার্থীদের 'অটো পাস' দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিছুটা বিতর্ক থাকলেও সংকটকালে সরকারের নেওয়া এ সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
এ বছর আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হচ্ছে না- এটাই অনুমেয়। দীর্ঘ এই ছুটিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইনে ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও নানা বাস্তবতায় পুরোদমে চালু হয়নি। ফলে উচ্চশিক্ষায় দীর্ঘ সেশনজটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস চালু রাখলেও অধিকাংশ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে আছে। উচ্চশিক্ষায় অনলাইন ক্লাস নিশ্চিত করতে সরকার শিক্ষার্থীদের স্বল্প সুদে প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনার জন্য ঋণ প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেটা দ্রুত করা দরকার। করোনার বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে অন্তত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম বা অনলাইন ক্লাস চালু রাখার বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হতে পারে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কঠিন হবে না বলে মনে করি। এ ক্ষেত্রে অনলাইনে ক্লাস সম্পন্ন করে পরীক্ষার জন্য সীমিত পরিসরে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ডাকা যেতে পারে। পরীক্ষার মার্কস কমিয়ে এবং অনুষদ ও বিভাগভিত্তিক নির্দিষ্ট দিনে পরীক্ষা গ্রহণ করা যেতে পারে।
এইচএসসি পরীক্ষার ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্তের পর আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি। সাধারণত প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকায় এ বছর এর ব্যত্যয় ঘটবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এ ছাড়া করোনার ঝুঁকি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চালু করার পক্ষেও নন উপাচার্যরা। এ অবস্থায় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা বেশ কঠিন হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ইতোমধ্যে অনেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ার আদলে এসএসসি, এইচএসসির ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন। আবার অটো পাসের কারণে অনেকেই এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে এসএসসি, এইচএসসির নির্ধারিত মার্কস বিবেচনা না করার কথা বলেছেন। অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তাবও দিয়েছেন কেউ কেউ। তবে আমাদের বিদ্যমান শিক্ষা কাঠামোর মধ্যে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ করোনাকালে আমরা দেখেছি, অনলাইনে ক্লাস চালু থাকার কথা থাকলেও তা কেবল উদ্যোগ গ্রহণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে নানান সংকটের কারণে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বল্পসংখ্যক বিভাগ অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করলেও সেখানে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল না বলে সংবাদমাধ্যমে এসেছে। এ অবস্থায় অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করা দরকার।
পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি করাতেই হবে। এ ক্ষেত্রে সমন্বিত বা গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ ঝুঁকির আশঙ্কা কমিয়ে আনতে পারে। বছরের শুরুতে ইউজিসি ঘোষণা করেছিল সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের। তবে স্বায়ত্তশাসিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট তাদের স্বকীয়তা বজায় রাখতে আলাদা ভর্তি পরীক্ষা নিতে চায়। এর পেছনে যে শুধু স্বকীয়তা বজায় রাখার বিষয়টি জড়িত তা কিন্তু নয়; বরং আর্থিক লাভ-লোকসানের হিসাবও রয়েছে।
এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ। মনে রাখতে হবে, শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়; বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষার্থী নয়। সুতরাং ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন না হয়, তা নিশ্চিত করার দায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর। সে ক্ষেত্রে গুচ্ছ বা সমন্বিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করলে সমাধান সহজ হতো।
সাংবাদিক
এ বছর আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হচ্ছে না- এটাই অনুমেয়। দীর্ঘ এই ছুটিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইনে ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও নানা বাস্তবতায় পুরোদমে চালু হয়নি। ফলে উচ্চশিক্ষায় দীর্ঘ সেশনজটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস চালু রাখলেও অধিকাংশ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে আছে। উচ্চশিক্ষায় অনলাইন ক্লাস নিশ্চিত করতে সরকার শিক্ষার্থীদের স্বল্প সুদে প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনার জন্য ঋণ প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেটা দ্রুত করা দরকার। করোনার বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে অন্তত অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম বা অনলাইন ক্লাস চালু রাখার বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হতে পারে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কঠিন হবে না বলে মনে করি। এ ক্ষেত্রে অনলাইনে ক্লাস সম্পন্ন করে পরীক্ষার জন্য সীমিত পরিসরে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ডাকা যেতে পারে। পরীক্ষার মার্কস কমিয়ে এবং অনুষদ ও বিভাগভিত্তিক নির্দিষ্ট দিনে পরীক্ষা গ্রহণ করা যেতে পারে।
এইচএসসি পরীক্ষার ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্তের পর আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি। সাধারণত প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকায় এ বছর এর ব্যত্যয় ঘটবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এ ছাড়া করোনার ঝুঁকি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চালু করার পক্ষেও নন উপাচার্যরা। এ অবস্থায় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা বেশ কঠিন হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ইতোমধ্যে অনেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ার আদলে এসএসসি, এইচএসসির ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন। আবার অটো পাসের কারণে অনেকেই এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে এসএসসি, এইচএসসির নির্ধারিত মার্কস বিবেচনা না করার কথা বলেছেন। অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তাবও দিয়েছেন কেউ কেউ। তবে আমাদের বিদ্যমান শিক্ষা কাঠামোর মধ্যে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ করোনাকালে আমরা দেখেছি, অনলাইনে ক্লাস চালু থাকার কথা থাকলেও তা কেবল উদ্যোগ গ্রহণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে নানান সংকটের কারণে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বল্পসংখ্যক বিভাগ অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করলেও সেখানে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল না বলে সংবাদমাধ্যমে এসেছে। এ অবস্থায় অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করা দরকার।
পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি করাতেই হবে। এ ক্ষেত্রে সমন্বিত বা গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ ঝুঁকির আশঙ্কা কমিয়ে আনতে পারে। বছরের শুরুতে ইউজিসি ঘোষণা করেছিল সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের। তবে স্বায়ত্তশাসিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট তাদের স্বকীয়তা বজায় রাখতে আলাদা ভর্তি পরীক্ষা নিতে চায়। এর পেছনে যে শুধু স্বকীয়তা বজায় রাখার বিষয়টি জড়িত তা কিন্তু নয়; বরং আর্থিক লাভ-লোকসানের হিসাবও রয়েছে।
এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ। মনে রাখতে হবে, শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়; বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষার্থী নয়। সুতরাং ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন না হয়, তা নিশ্চিত করার দায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর। সে ক্ষেত্রে গুচ্ছ বা সমন্বিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করলে সমাধান সহজ হতো।
সাংবাদিক
মন্তব্য করুন