- সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয়
- খালেদা জিয়া এবং বিএনপির পরবর্তী নেতৃত্ব
রাজনীতি
খালেদা জিয়া এবং বিএনপির পরবর্তী নেতৃত্ব

এক সময় খালেদা জিয়াই ছিলেন দলের মূল কাণ্ডারি। তার দিকনির্দেশনায়ই চালিত হতো দল। চরম দুঃসময়ে দলের স্টিয়ারিং হাতে নিয়ে অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এগিয়ে নিয়েছেন দলকে। পৌঁছে দিয়েছেন সাফল্যের শিখরে। সেইসঙ্গে নিজেও ছুঁয়েছিলেন সাফল্যের সূর্য। সাধারণ গৃহবধূ থেকে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হয়ে সৃষ্টি করেছেন রেকর্ডও। দেশের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের অন্যতম নিয়ামকে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই তিনি আজ নিজভূমে যেন পরবাসী জীবনযাপন করছেন। তিনি আছেন, অথচ তিনি নেই। এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার। জীবিত থাকতেও তিনি দল এবং রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বেন- এটা ছিল এ দেশের মানুষের কল্পনারও বাইরে। অথচ সেই অকল্পনীয় বিষয়টিই আজ চরম বাস্তবতা। আদালতের দণ্ড মাথায় নিয়ে দুই বছর কারাবাসের পর সরকারের অনুগ্রহে কারাগারের বাইরে অন্যরকম বন্দিজীবন কাটাতে হচ্ছে তাকে। তিনি মুক্ত না বন্দি তা বোঝা মুশকিল।
বিএনপি যেন খালেদা জিয়াকে ভুলতে বসেছে। নেত্রীকে জেলমুক্ত করতে দল ও নেতারা কার্যকর কোনো ভূমিকাই পালন করতে পারেননি। এমনকি তার মুক্তির দাবিতে রাজপথে বড় কোনো কর্মসূচিও দিতে পারেনি দলটি। এই না পারার 'কৈফিয়ত' অবশ্য দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা দিতে কসুর করেননি; যদিও তৃণমূল কর্মীদের কাছে তা কখনোই গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। গোড়া থেকেই তারা বলে আসছিলেন, তার মুক্তির জন্য কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার কর্মসূচি দিতে নেত্রী 'নিষেধ' করে গেছেন। কথাটি প্রচার করার উদ্দেশ্য কি এই- রাজপথে যাতে কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে না হয়, তার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে রাখা।
কথা হচ্ছে, কেমন আছেন এখন খালেদা জিয়া? তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎই-বা কী? তিনি কি আবার স্বমহিমায় বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে ফিরে আসতে পারবেন, নাকি এখানেই যবনিকাপাত হবে তার রাজনৈতিক জীবনের? বয়সের ভারে ন্যুব্জ খালেদা জিয়া নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। তার পরিবার এবং দলের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে। তারা সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে নেওয়ার জন্য উদগ্রীব। কিন্তু আইনি জটিলতা এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে খুব শিগগির সে সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তাছাড়া ইচ্ছা থাকলেও তিনি দেশের বাইরে যেতে পারছেন না। যেখানে সরকারের অনুমতি ছাড়া তার ঘরের বাইরে যাওয়া নিষেধ, সেখানে বিদেশ গমন তো অনেক দূরের বিষয়।
খালেদা জিয়ার আজকের পরিণতির জন্য কে বা কারা দায়ী সে হিসাব-নিকাশ করার সময় হয়তো এখনও আসেনি। তবে এটা অস্বীকার করা যাবে না, তার মতো বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জনকারী এবং শক্তিধর একজন নেত্রীর এহেন অবস্থা অবশ্যই বেদনাদায়ক। বিএনপি নেতারা অবশ্য বলে থাকেন, সরকারের রোষানলের কারণেই তিনি আজ এ অবস্থায় নিপতিত হয়েছেন। কিন্তু এটাও সত্য, শেষ পর্যায়ে এসে তিনি গুটিকয় ব্যক্তির দ্বারা এমনভাবে ঘেরাও এবং চালিত হয়েছিলেন, দলের নিষ্ঠাবান নেতাকর্মীরা তার কাছে ঘেঁষতে পারেননি। এমনকি তিনি কোনো সিদ্ধান্তও ওই চক্রের বাইরে নিতে পারেননি। দলকে শক্তিশালী করার জন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন ছিল, তা না করে তাকে দেশি-বিদেশি শক্তির মুখাপেক্ষী করে তুলেছিল ওই চক্রটি। তারা নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি গঠনের নামে চালিয়ে গেছে দেদার বাণিজ্য। টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রির কারণে যোগ্য এবং দক্ষ কর্মীরা যথাযথ মূল্যায়ন পায়নি। ফলে দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক কর্মসূচির সফলতার জন্য মাঠে যে ধরনের নেতাকর্মীর উপস্থিতি দরকার, বিএনপিতে তার অভাব পড়তে শুরু করে। বর্তমানে সে অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে।
এমনি এক পরিস্থিতিতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার কারাবরণের তিন বছর পার হয়েছে। বিএনপি দিনটিকে পালন করেছে নেত্রীর কারাবরণের তৃতীয় বার্ষিকী হিসেবে। দিনটিকে সামনে রেখে বেশ কয়েকটি দৈনিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সমকাল 'কেমন আছেন খালেদা জিয়া' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে লিখেছে, বিএনপি নেতারা মনে করেন, তিনি এখনও মুক্ত নন। তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। পার্থক্য এটুকুই যে, তিনি ঘরোয়া পরিবেশে থাকতে পারছেন। তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো নয়। নামাজ, বই ও পত্রিকা পড়ে, টেলিভিশন দেখে এবং দেশ-বিদেশে টেলিফোনে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে তার সময় কাটছে।
পত্রিকান্তরে খবর বেরিয়েছে, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়া এবং তার মুক্তির মেয়াদ পুনরায় বৃদ্ধির ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার মুক্তির দ্বিতীয় দফা মেয়াদ আগামী ২৫ মার্চ শেষ হতে যাচ্ছে। খুব শিগগিরই পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন করা হবে বলে পত্রিকাটি উল্লেখ করেছে। পরিবার খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যেতে চায় এবং সে লক্ষ্যে তার এবং তার ছোট ভাই শামীম এস্কেন্দারের পাসপোর্ট ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনে জমাও দেওয়া হয়েছে। সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি লিখেছে, সরকার অনুমতি দিলে ব্রিটেন খালেদা জিয়াকে ভিসা দেবে বলে হাইকমিশন জানিয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন পত্রিকাটিকে বলেছেন, 'মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো কিংবা বিদেশে সুচিকিৎসার বিষয়ে আবেদন করার বিষয়টি ম্যাডামের পারিবারিক সিদ্ধান্ত।' অবশ্য তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আবেদন করলে সরকার তা ইতিবাচক হিসেবেই গ্রহণ করবে।
লক্ষণীয় হলো, বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং চিকিৎসার বিষয়টিকে সরকারের অনুগ্রহ এবং পরিবারের দায়িত্বের ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন। নেত্রীর মুক্তির ব্যাপারে তাদেরও যে দায়িত্ব রয়েছে, তা যেন তারা ভুলতে বসেছেন। প্রতি বছর ৮ ফেব্রুয়ারি তার 'কারাবন্দিত্বের বার্ষিকী' পালনের বাইরে আর কোনো ভূমিকা তারা নিচ্ছেন না বা নিতে পারছেন না। তাহলে কি তারা ধরেই নিয়েছেন, খালেদা জিয়া আর রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারবেন না? যদি তাই হয়, তাহলে দলকে সুসংগঠিত রেখে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনো উদ্যোগ বা প্রস্তুতি তারা নিয়েছেন কি?
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এখন দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার পুত্র তারেক রহমান। কিন্তু তিনি সশরীরে দেশে উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না। ভার্চুয়ালি মিটিং করে দূর-প্রবাস থেকে নির্দেশনা পাঠিয়ে দলকে কতটা সঠিক নেতৃত্বে পরিচালিত করা যায়- এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। আবার বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তার দেশে প্রত্যাবর্তনও সম্ভব নয়। এলেই তাকে কারান্তরীণ হওয়াসহ নানা আইনি জটিলতার আবর্তে ঘুরপাক খেতে হবে। এমন ত্রিশঙ্কু অবস্থায় দেশে থেকে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সর্বজনমান্য একজন নেতার প্রয়োজন তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে অনেকের কাছে। কিন্তু কোথায় সে জন?
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্নেষক
বিএনপি যেন খালেদা জিয়াকে ভুলতে বসেছে। নেত্রীকে জেলমুক্ত করতে দল ও নেতারা কার্যকর কোনো ভূমিকাই পালন করতে পারেননি। এমনকি তার মুক্তির দাবিতে রাজপথে বড় কোনো কর্মসূচিও দিতে পারেনি দলটি। এই না পারার 'কৈফিয়ত' অবশ্য দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা দিতে কসুর করেননি; যদিও তৃণমূল কর্মীদের কাছে তা কখনোই গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। গোড়া থেকেই তারা বলে আসছিলেন, তার মুক্তির জন্য কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার কর্মসূচি দিতে নেত্রী 'নিষেধ' করে গেছেন। কথাটি প্রচার করার উদ্দেশ্য কি এই- রাজপথে যাতে কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে না হয়, তার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে রাখা।
কথা হচ্ছে, কেমন আছেন এখন খালেদা জিয়া? তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎই-বা কী? তিনি কি আবার স্বমহিমায় বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে ফিরে আসতে পারবেন, নাকি এখানেই যবনিকাপাত হবে তার রাজনৈতিক জীবনের? বয়সের ভারে ন্যুব্জ খালেদা জিয়া নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। তার পরিবার এবং দলের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে। তারা সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে নেওয়ার জন্য উদগ্রীব। কিন্তু আইনি জটিলতা এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে খুব শিগগির সে সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তাছাড়া ইচ্ছা থাকলেও তিনি দেশের বাইরে যেতে পারছেন না। যেখানে সরকারের অনুমতি ছাড়া তার ঘরের বাইরে যাওয়া নিষেধ, সেখানে বিদেশ গমন তো অনেক দূরের বিষয়।
খালেদা জিয়ার আজকের পরিণতির জন্য কে বা কারা দায়ী সে হিসাব-নিকাশ করার সময় হয়তো এখনও আসেনি। তবে এটা অস্বীকার করা যাবে না, তার মতো বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জনকারী এবং শক্তিধর একজন নেত্রীর এহেন অবস্থা অবশ্যই বেদনাদায়ক। বিএনপি নেতারা অবশ্য বলে থাকেন, সরকারের রোষানলের কারণেই তিনি আজ এ অবস্থায় নিপতিত হয়েছেন। কিন্তু এটাও সত্য, শেষ পর্যায়ে এসে তিনি গুটিকয় ব্যক্তির দ্বারা এমনভাবে ঘেরাও এবং চালিত হয়েছিলেন, দলের নিষ্ঠাবান নেতাকর্মীরা তার কাছে ঘেঁষতে পারেননি। এমনকি তিনি কোনো সিদ্ধান্তও ওই চক্রের বাইরে নিতে পারেননি। দলকে শক্তিশালী করার জন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন ছিল, তা না করে তাকে দেশি-বিদেশি শক্তির মুখাপেক্ষী করে তুলেছিল ওই চক্রটি। তারা নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি গঠনের নামে চালিয়ে গেছে দেদার বাণিজ্য। টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রির কারণে যোগ্য এবং দক্ষ কর্মীরা যথাযথ মূল্যায়ন পায়নি। ফলে দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক কর্মসূচির সফলতার জন্য মাঠে যে ধরনের নেতাকর্মীর উপস্থিতি দরকার, বিএনপিতে তার অভাব পড়তে শুরু করে। বর্তমানে সে অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে।
এমনি এক পরিস্থিতিতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার কারাবরণের তিন বছর পার হয়েছে। বিএনপি দিনটিকে পালন করেছে নেত্রীর কারাবরণের তৃতীয় বার্ষিকী হিসেবে। দিনটিকে সামনে রেখে বেশ কয়েকটি দৈনিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সমকাল 'কেমন আছেন খালেদা জিয়া' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে লিখেছে, বিএনপি নেতারা মনে করেন, তিনি এখনও মুক্ত নন। তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। পার্থক্য এটুকুই যে, তিনি ঘরোয়া পরিবেশে থাকতে পারছেন। তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো নয়। নামাজ, বই ও পত্রিকা পড়ে, টেলিভিশন দেখে এবং দেশ-বিদেশে টেলিফোনে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে তার সময় কাটছে।
পত্রিকান্তরে খবর বেরিয়েছে, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়া এবং তার মুক্তির মেয়াদ পুনরায় বৃদ্ধির ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার মুক্তির দ্বিতীয় দফা মেয়াদ আগামী ২৫ মার্চ শেষ হতে যাচ্ছে। খুব শিগগিরই পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন করা হবে বলে পত্রিকাটি উল্লেখ করেছে। পরিবার খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যেতে চায় এবং সে লক্ষ্যে তার এবং তার ছোট ভাই শামীম এস্কেন্দারের পাসপোর্ট ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনে জমাও দেওয়া হয়েছে। সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি লিখেছে, সরকার অনুমতি দিলে ব্রিটেন খালেদা জিয়াকে ভিসা দেবে বলে হাইকমিশন জানিয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন পত্রিকাটিকে বলেছেন, 'মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো কিংবা বিদেশে সুচিকিৎসার বিষয়ে আবেদন করার বিষয়টি ম্যাডামের পারিবারিক সিদ্ধান্ত।' অবশ্য তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আবেদন করলে সরকার তা ইতিবাচক হিসেবেই গ্রহণ করবে।
লক্ষণীয় হলো, বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং চিকিৎসার বিষয়টিকে সরকারের অনুগ্রহ এবং পরিবারের দায়িত্বের ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন। নেত্রীর মুক্তির ব্যাপারে তাদেরও যে দায়িত্ব রয়েছে, তা যেন তারা ভুলতে বসেছেন। প্রতি বছর ৮ ফেব্রুয়ারি তার 'কারাবন্দিত্বের বার্ষিকী' পালনের বাইরে আর কোনো ভূমিকা তারা নিচ্ছেন না বা নিতে পারছেন না। তাহলে কি তারা ধরেই নিয়েছেন, খালেদা জিয়া আর রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারবেন না? যদি তাই হয়, তাহলে দলকে সুসংগঠিত রেখে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনো উদ্যোগ বা প্রস্তুতি তারা নিয়েছেন কি?
খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এখন দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার পুত্র তারেক রহমান। কিন্তু তিনি সশরীরে দেশে উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না। ভার্চুয়ালি মিটিং করে দূর-প্রবাস থেকে নির্দেশনা পাঠিয়ে দলকে কতটা সঠিক নেতৃত্বে পরিচালিত করা যায়- এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। আবার বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তার দেশে প্রত্যাবর্তনও সম্ভব নয়। এলেই তাকে কারান্তরীণ হওয়াসহ নানা আইনি জটিলতার আবর্তে ঘুরপাক খেতে হবে। এমন ত্রিশঙ্কু অবস্থায় দেশে থেকে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সর্বজনমান্য একজন নেতার প্রয়োজন তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে অনেকের কাছে। কিন্তু কোথায় সে জন?
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্নেষক
মন্তব্য করুন