করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় চাকরি হারিয়েছেন এক কোটির বেশি ভারতীয়। শুধু তাই নয়, গত বছর ভারতে মহামারির দাপট শুরুর পর থেকে প্রায় ৯৭ শতাংশ পরিবারের আয় কমেছে। এমনই দাবি করেছেন ভারতের 'সেন্টার অব মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি'র (সিএমআইই) চিফ এক্সিকিউটিভ মহেশ ব্যাস।

সিএমআইই'য়ের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মে'র শেষে বেকারত্বের হার ১২ শতাংশে ঠেকতে পারে- যা এপ্রিলের শেষে ছিল আট শতাংশ। অর্থাৎ সেই সময় দেশে চাকরি হারিয়েছেন আরও মানুষ। 

সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে ব্যাস জানিয়েছেন, এই পরিসংখ্যান থেকেই ইঙ্গিত মিলছে যে, ওই সময় এক কোটির বেশি মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। 'মূলত' করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে চাকরি হারাতে হয়েছে তাদের। 

তিনি আরও বলেন, 'অর্থনীতি খুলতে শুরু করলে আংশিকভাবে সমস্যার সমাধান হবে। তবে এ সমস্যা সম্পূর্ণভাবে মিটবে না।'

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতজুড়ে লকডাউনের মধ্যে গত বছরের মে'তে দেশটিতে বেকারত্ব রেকর্ড ২৩.৫ শতাংশে ঠেকেছিল। লকডাউনের পরে অর্থনীতি কিছুটা গতি পেলে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছিল। তবে সেই ইতিবাচক প্রবণতা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আগেই ভারতে আছড়ে পড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। 

সিএমআইই'র চিফ এক্সিকিউটিভ জানিয়েছে, ভারতীয় অর্থনীতিতে তিন-চার শতাংশ বেকারত্বের হার 'স্বাভাবিক' হিসেবে বিবেচনা করা যায়। এটা থেকে স্পষ্টতই ইঙ্গিত মিলছে যে, অদূর ভবিষ্যতে বেকারত্বের হারের খুব একটা উন্নতি হবে না।

সিএমআইইয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনার মধ্যে দেশের মানুষ যে আর্থিক টানাপোড়েনে আছেন,  তা একেবারে স্পষ্ট। গত এপ্রিলে দেশের ১.৭৫ লাখ পরিবারে সমীক্ষা চালিয়েছিল সিএমআইই। 

ব্যাস জানিয়েছেন, সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে মহামারির পর থেকে তিন শতাংশ পরিবারের আয় বেড়েছে। ৫৫ শতাংশ পরিবার জানিয়েছে যে, তাদের আয় কমেছে। আয় একই আছে বলে জানিয়েছে ৪২ শতাংশ পরিবার। 

তিনি বলেন, 'আমরা যদি মুদ্রাস্ফীতির নিরিখে বিবেচনা করি, তাহলে দেখতে পাব যে, মহামারির সময় দেশের ৯৭ শতাংশ পরিবাবের আয় কমেছে।'