
'জন্মের পরে আবর্তিত হতে হতে মৃত্যুর দিকে ধাবমান। জন্মকালই স্মরণীয় বিলীনতায় মহার্ঘ্য কিছু নেই। এসো সমবেত জনকুল, পরমানন্দে উৎসব হোক।' প্রাচীন সময়ে স্পার্টায় এই ছিল রীতি, একজন মানুষের জন্ম দিবসে। এখনও বর্তমান, দেখেছি স্পার্টায়। বলা হয়, এথনিক কালচারের অংশ। কবে থেকে শুরু, হদিস নেই। হোমারের ইলিয়াডেও খোঁজ পাইনি। 'জন্মদিনই সকল উৎসে, দেশ-সমাজকে ঘিরে। মৃত্যু দেবতাদের ইতরামি। একজন মানুষ জন্মকাল থেকেই মৃত্যু অবধি আমাদের তথা মানুষকে আলোকিত করে। কবে জন্মেছেন, সেই দিন-মাস-বছর (হোক তা মিথিক্যাল ভারতে যেমন রাম, শ্রীকৃষ্ণ) সর্বদা সমকালীন।'
শুনেছি স্পার্টার গ্রামে, একজনের জন্মদিনে, জন্মবর্ষে। গ্রামীণ উৎসবে। প্রবীণ এক দম্পতির সঙ্গে অনুবাদিকার কথোপকথন, জানালেন (যেহেতু গ্রিক জানি না) :'যার জন্মদিনে এই আয়োজন, তিনি কত শত বছর আগে গত হয়েছেন, অজানা। জানেন শুধু জন্মদিন, তাও জনশ্রুতি।'
'মৃত্যুর পরেও জন্মবছরের বৃদ্ধি, বয়সের বৃদ্ধি, পালনীয়। মৃত্যু বাহুল্য।' দক্ষিণ সুইজারল্যান্ডের আল্পসের জনবাসিন্দার বিশ্বাস ছিল একদা, হয়তো হাজার বছর আগে (এই নিয়ে পেটার হার্টমানের চমৎকার রূপকথা আছে), জন্মদিনে (হোক মৃত) প্রিয়জনের নানারূপে আবির্ভাব। শারীরিক নয়। অশরীরে। উপস্থিতি, 'সব আলোটি কেমন করে ফেল আমার মুখের পরে? তুমি আপনি থাকো আলোর পেছনে (রবীন্দ্রনাথ)। আলো হাতে চলেছেন যে আঁধারের যাত্রী, বিতরণ করছেন, বিক্ষেপণ করছেন, নাম রশীদ হায়দার।
আজ ১৫ জুলাই, ৮০ জন্মবর্ষ তার পূর্ণ হলো। জন্ম ১৫ জুলাই ১৯৪১, দোহারপাড়া পাবনায়। মা রহিমা খাতুন, বাবা শেখ মোহাম্মদ হাকিমউদ্দীন। মার চতুর্থ, বাবার পঞ্চম সন্তান।
রশীদ হায়দারের বহু পরিচয়ের একটিই মুখ্য- লেখক। সাহিত্যের নানা ধারায়, নানা বিষয়ে। কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধের গবেষক, সম্পাদকতার মুনশিয়ানার কথাও উল্লেখ করেন। দক্ষ পরিচালক, প্রশাসনেরও। কোনোটাই ফেলনা নয়। কিন্তু লেখকের জীবনই তার জীবন। বলতেন :'সব চাকরির অবসর আছে, লেখক-শিল্পীরনেই।'
তার অমায়িক বয়ান :'তোদের ছাড়িয়ে আনতে একজন দরকার।' কমিউনিস্ট নেতা, ন্যাপের মোজাফ্ফর আহমদ বলছিলেন, একবার 'ওর স্ত্রী আমিনা, রশীদ হায়দারের স্ত্রীর সহপাঠী) :'তোর মেজভাই (রশীদ) সময়মতো স্কেপ করে। করুক। ওর লেখা পড়ি। সুপাঠ্য।'
রশীদ হায়দারের ৮০ জন্মবর্ষে বাদ সেধেছে অতি আগ্রাসী, অতিমহামারি অদৃশ্য ব্যাদানমুখের করোনা। ত্রস্ত বিশ্ব। বাংলাদেশও। রশীদের দুই কন্যা হেমা (হেমন্তী), ক্ষমা (শাওন্তী) বাবার ৮০ জন্মবর্ষ উপলক্ষে সম্মাননা গ্রন্থ প্রকাশে আয়োজক, প্রকাশকও স্বতঃস্ম্ফূর্ত, সম্পাদনার দায়িত্বে দুই বোন, ঝামেলা করোনার। প্রকাশিত হবে। নানা লেখকের লেখায়, রশীদ হায়দারকে বিচার বিশ্নেষণে, স্মৃতিচারণে, কথকতায়। পাওয়া যাবে রশীদ হায়দারকে ৮০ জন্মবর্ষ পূর্তিগ্রন্থে।
-কবে?
অসভ্য করোনার মরণের পরেই।
আমরা অপেক্ষমাণ।
রশীদ হায়দারের ৮০ জন্মবর্ষ পূর্তি পারিবারিক নয়; নয় শুধু, দেশেরও আত্মিকতা। দেশসমাজ। গ্রিক প্রবাদে :'তার জন্মদিন, জন্মবর্ষ আমাদেরও। এসো হে স্বজন, এসো হে মানুষ। তিনি আমাদের। স্মরণ করি তাকে। জন্মদিনই প্রেরণা।'
কবি
শুনেছি স্পার্টার গ্রামে, একজনের জন্মদিনে, জন্মবর্ষে। গ্রামীণ উৎসবে। প্রবীণ এক দম্পতির সঙ্গে অনুবাদিকার কথোপকথন, জানালেন (যেহেতু গ্রিক জানি না) :'যার জন্মদিনে এই আয়োজন, তিনি কত শত বছর আগে গত হয়েছেন, অজানা। জানেন শুধু জন্মদিন, তাও জনশ্রুতি।'
'মৃত্যুর পরেও জন্মবছরের বৃদ্ধি, বয়সের বৃদ্ধি, পালনীয়। মৃত্যু বাহুল্য।' দক্ষিণ সুইজারল্যান্ডের আল্পসের জনবাসিন্দার বিশ্বাস ছিল একদা, হয়তো হাজার বছর আগে (এই নিয়ে পেটার হার্টমানের চমৎকার রূপকথা আছে), জন্মদিনে (হোক মৃত) প্রিয়জনের নানারূপে আবির্ভাব। শারীরিক নয়। অশরীরে। উপস্থিতি, 'সব আলোটি কেমন করে ফেল আমার মুখের পরে? তুমি আপনি থাকো আলোর পেছনে (রবীন্দ্রনাথ)। আলো হাতে চলেছেন যে আঁধারের যাত্রী, বিতরণ করছেন, বিক্ষেপণ করছেন, নাম রশীদ হায়দার।
আজ ১৫ জুলাই, ৮০ জন্মবর্ষ তার পূর্ণ হলো। জন্ম ১৫ জুলাই ১৯৪১, দোহারপাড়া পাবনায়। মা রহিমা খাতুন, বাবা শেখ মোহাম্মদ হাকিমউদ্দীন। মার চতুর্থ, বাবার পঞ্চম সন্তান।
রশীদ হায়দারের বহু পরিচয়ের একটিই মুখ্য- লেখক। সাহিত্যের নানা ধারায়, নানা বিষয়ে। কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধের গবেষক, সম্পাদকতার মুনশিয়ানার কথাও উল্লেখ করেন। দক্ষ পরিচালক, প্রশাসনেরও। কোনোটাই ফেলনা নয়। কিন্তু লেখকের জীবনই তার জীবন। বলতেন :'সব চাকরির অবসর আছে, লেখক-শিল্পীরনেই।'
তার অমায়িক বয়ান :'তোদের ছাড়িয়ে আনতে একজন দরকার।' কমিউনিস্ট নেতা, ন্যাপের মোজাফ্ফর আহমদ বলছিলেন, একবার 'ওর স্ত্রী আমিনা, রশীদ হায়দারের স্ত্রীর সহপাঠী) :'তোর মেজভাই (রশীদ) সময়মতো স্কেপ করে। করুক। ওর লেখা পড়ি। সুপাঠ্য।'
রশীদ হায়দারের ৮০ জন্মবর্ষে বাদ সেধেছে অতি আগ্রাসী, অতিমহামারি অদৃশ্য ব্যাদানমুখের করোনা। ত্রস্ত বিশ্ব। বাংলাদেশও। রশীদের দুই কন্যা হেমা (হেমন্তী), ক্ষমা (শাওন্তী) বাবার ৮০ জন্মবর্ষ উপলক্ষে সম্মাননা গ্রন্থ প্রকাশে আয়োজক, প্রকাশকও স্বতঃস্ম্ফূর্ত, সম্পাদনার দায়িত্বে দুই বোন, ঝামেলা করোনার। প্রকাশিত হবে। নানা লেখকের লেখায়, রশীদ হায়দারকে বিচার বিশ্নেষণে, স্মৃতিচারণে, কথকতায়। পাওয়া যাবে রশীদ হায়দারকে ৮০ জন্মবর্ষ পূর্তিগ্রন্থে।
-কবে?
অসভ্য করোনার মরণের পরেই।
আমরা অপেক্ষমাণ।
রশীদ হায়দারের ৮০ জন্মবর্ষ পূর্তি পারিবারিক নয়; নয় শুধু, দেশেরও আত্মিকতা। দেশসমাজ। গ্রিক প্রবাদে :'তার জন্মদিন, জন্মবর্ষ আমাদেরও। এসো হে স্বজন, এসো হে মানুষ। তিনি আমাদের। স্মরণ করি তাকে। জন্মদিনই প্রেরণা।'
কবি
মন্তব্য করুন