স্বাস্থ্য বিভাগের অভিযানে সুনামগঞ্জের ১৮টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও চালু আছে কোনো কোনো সেন্টার। এমনকি সেখানে রীতিমতো চেম্বার করছেন সুনামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। এ অবস্থায় অভিযানের সার্থকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

লাইসেন্স না থাকায় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের এসএম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি। দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার শফিকুল ইসলামের প্রাইভেট চেম্বার রয়েছে এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে রোববার বিকেলেও তিনি সেখানে চেম্বার করেছেন।

এ বিষয়ে ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা আছে। লাইসেন্স প্রাপ্তির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আর এই সেন্টার বন্ধের কোনো নির্দেশ পাওয়া যায়নি।

সুনামগঞ্জ সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি আইনুল ইসলাম বাবলু বলেন, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযানের উদ্যোগ প্রশংসনীয় ও সময়োপযোগী। কিন্তু বন্ধের নির্দেশনা ঠিকমতো পালন করা হচ্ছে কিনা, সেটিও তদারক করা প্রয়োজন। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এসএম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মতো অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারই নির্দেশনা না মেনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পুরো উদ্যোগটিই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।

রোববার পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগের অভিযানে বন্ধ হওয়া ১৮টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে রয়েছে- সুনামগঞ্জ সদরের সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, এএসপি মাসুম ডায়াগনস্টিক সেন্টার, খন্দকার আলকাছ আমিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, দোয়ারাবাজারের এএসএম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ওলিউল্লাহ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ডক্টরস চেম্বার, লাইফএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও শাহজালাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ছাতকের সুরমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ভিশন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধর্মপাশার জননী ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শাল্লার মেডিজোন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, তাহিরপুরের জনস্বাস্থ্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ন্যাশনাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বাদাঘাট পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, তাহিরপুর লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেডিপ্লাস ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও কমফোর্ট মেডিকেল সার্ভিসেস এবং দিরাইয়ের হাজেরা ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এগুলোর কোনো কোনোটির লাইসেন্সের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবেদন করা আছে।

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন মো. আহম্মদ হোসেন বলেন, অনুমোদনবিহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেসব সরকারি মেডিকেল অফিসার বা কনসালট্যান্ট চেম্বার নিয়ে বসেন, নিশ্চই তারা এগুলো বন্ধ হওয়ার পর বিব্রত হয়েছেন। এক সময় অনুমোদনের আবেদন করেই সেন্টারগুলো কাজ শুরু করে দিত। ডাক্তাররাও সেখানে চেম্বার নিয়ে বসেছেন। এখন নতুন নির্দেশে বলা হয়েছে, লাইসেন্স না পাওয়া পর্যন্ত সেন্টারগুলো বৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে না। এখন ডাক্তার বা সংশ্নিষ্টরা নিশ্চয়ই নতুন নির্দেশ মেনে চলবেন।

তিনি আরও বলেন, যারা আবেদন করেছেন, লাইসেন্স পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে দেওয়া হবে। আর বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পরও যেসব প্রতিষ্ঠান তা মানেনি, সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।