নারী পাচারকারী চক্রের জাল থেকে পালিয়ে বাঁচলেও অবৈধভাবে বাংলাদেশে ফেরার পথে বিএসএফের হাতে আটকা পড়েছেন দুই বাংলাদেশী নারী। 

গৃহকর্মীর কাজ দেওয়ার নাম করে ওই দুই বাংলাদেশী নারীকে ভারতে বিক্রি করে দিয়েছিল নারী পাচারকারী চক্র। ভারতের মুম্বাইয়ের একটি অঞ্চলে বিক্রি করে দেওয়া হয় তাদের। নারী পাচারকারী চক্র তাদের অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতের মুম্বাই শহরে নিয়ে আসে। 

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই বাংলাদেশি নারী জানান, একমাস আগে বাংলাদেশের এক চক্রের মাধ্যমে ভারতে পাড়ি জমান তারা। চক্রটি তাদের বলেছিল মুম্বাইয়ে বাসা বাড়িতে মোটা অর্থের বিনিময়ে গৃহকর্মীর কাজ দেবে। একমাস আগে ভারতের মালদার কোনো এক সীমান্ত দিয়েই নদীপথ হয়ে অবৈধ ভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল ওই দুই বাংলাদেশি নারী। এরপর কলকাতা থেকে ট্রেনে চেপে দুদিন পর তারা পৌঁছায় মুম্বাইতে। ভারতের মাটিতে পা রেখেই বুঝতে পারেন তাদের অন্য আরেক জনের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। 

তারা আরও জানান, মুম্বাইয়ে গিয়েই নিজেদের মধ্যে আলাপ হয় ওই দুই নারীর। এরপরই তারা পরিকল্পনা করে যে কোনো ভাবেই হোক ওই জীবন থেকে তাদের বেরিয়ে এসে বাংলাদেশে ফিরতে হবে। এরপর নিজেদের বুদ্ধির জোরে চক্রের জাল থেকে বেরিয়ে আসেন তারা। তারপর কৌশলে মুম্বাই থেকে ট্রেন ও বাসে করে মালদায় ফিরে আসেন। এরপর তারা রোববার রাতে মালদা রেলস্টেশন নেমে সিএনজি করে আদমপুর এলাকায় পৌঁছায়। সেখান থেকে অবৈধ ভাবে সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করে। এসময় তাদের সন্দেহজনকভাবে সীমান্ত এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে বিএসএফ। পরে বিএসএফ ওই দুই নারীকে মালদা জেলা পুলিশের হতে তুলে দেয়। 

পুলিশ সূত্রে জানা যায় আলাদা আলাদা ভাবে দুই নারীকে প্রায় দেড় লাখ রুপিতে একমাস আগে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এর পর নিজেদের বুদ্ধির জোরেই দালাল চক্রের হাত থেকে পালিয়ে এসেছিলেন তারা। তবে সীমান্ত পার হতে গিয়ে ধরা পড়েন। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। সোমবার তাদের উভয়কেই আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদের ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন।  

সোমবার আদালতে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ওই দুই নারী।  

এদিকে আদালতের কাছে ওই দুই নারীর বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখে তাদের দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশের ফেরানোর আবেদন জানিয়েছেন মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের মানবাধিকার কর্মী রঞ্জিত সুর।