সমকালের শেষ পাতায় ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি সংবাদের শিরোনাম 'গণভবনকে খামারবাড়িতে রূপ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী'। জানা যায়, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবুজ বিপ্লবের ডাক থেকে প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করার বিষয়ে অনুপ্রাণিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় টালমাটাল বিশ্বে খাদ্য ও নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রায় প্রতিটি বক্তব্যে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। সরকারি-বেসরকারি ও দলের সব অনুষ্ঠানে বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবিলায় জনগণকে প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনের প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করেছেন। গড়ে তুলেছেন খামার।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাসভবনে বিভিন্ন ধরনের ধান, শাকসবজি, ফুল-ফলসহ নানা গাছ লাগানোর পাশাপাশি হাঁস-মুরগি, কবুতর ও গরু পালন করছেন। বাদ যায়নি মধু ও মাছ চাষ। এমনকি তিল-সরিষার পাশাপাশি পেঁয়াজেরও চাষ করেছেন। গণভবনের তথ্যমতে জানা যায়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মোট চাষের অর্ধেক জমির পেঁয়াজ কেটে উত্তোলন করা হয়েছে ৪৬ মণ। বাকি জমি থেকে আরও ৫০ মণ পেঁয়াজ তোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রায় ১০০ মণ পেঁয়াজের ফলন হলো গণভবনে। গণভবন আঙিনায় প্রধানমন্ত্রী চাষ করেছেন বাঁশফুল, পোলাও চাল, লাল চালসহ বিভিন্ন জাতের ধান, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পালংশাক, ধনেপাতা, বথুয়া শাক, ব্রকলি, টমেটো, লাউ, শিমসহ প্রায় সব ধরনের শীতকালীন শাকসবজি। এ ছাড়া তিল, সরিষা, হলুদ, মরিচ, তেজপাতাসহ বিভিন্ন মসলা। আম, কাঁঠাল, লিচু, বরই, ড্রাগন, স্ট্রবেরিসহ বিভিন্ন ফল। রয়েছে গোলাপ, সূর্যমুখী, গাঁদা, কৃষ্ণচূড়াসহ বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ।

গণভবনের আঙিনায় আলাদা করে গরুর খামার, দেশি হাঁস-মুরগি, চীনা হাঁস, রাজহাঁস, কবুতরের খামার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সরিষা ক্ষেতে মৌচাক পালনের মাধ্যমে মধু আহরণ আর ফসল ফলাতে ব্যবহার করা হয় গণভবনের গরুর খামারের গোবর থেকে উৎপাদিত জৈব সার। এমনকি মুক্তার চাষও হচ্ছে গণভবনে। অবসর পেলেই প্রধানমন্ত্রী ছুটে যান এসব তদারক করতে। বড়শি দিয়ে লেকে মাছও ধরেন তিনি। তাঁর এ দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে আমাদেরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। আবাদি জমিতে চাষাবাদ করে সবুজ বিপ্লবে অংশগ্রহণ করা দরকার।
গবেষক, লেখক ও সংগঠক