রাজধানীর ধানমন্ডি আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার ‘লা গ্যালারিতে’ শুরু হয়েছে লায়লা শারমীনের ১২তম একক চিত্র প্রদর্শনী। শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনীতে শিল্পীর ত্রিশটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশের ওপর একটি জাতির আত্মপরিচয় ফুটে ওঠে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে শিল্পীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা বাংলার ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, ‘শিল্প সংস্কৃতির অমিত সম্ভাবনার পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে লায়লা শারমীনের দ্বাদশ সলো এক্সিবিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, শিল্পী লায়লা শারমীনের শিল্পকর্মের মাঝে অপূর্ব রঙের সমাহার, এর মধ্য দিয়ে প্রকৃতিকে ফুটিয়ে তুলেছেন, পাশাপাশি কিছু বার্তা তিনি সমাজকে দিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের যে বিরূপ প্রভাব জনজীবনে রয়েছে তা সম্পর্কে তিনি শিল্পকর্মের মাধ্যমে সকলকে সচেতন করেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব আমাদের জীবনে পরছে। সারা বিশ্বের পরিবেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পরিবর্তন হচ্ছে। অনেক আলোচনা, সভা, সম্মেলন সারা বিশ্বে চলমান থাকলেও বৈশ্বিক উষ্ণতা সকলেরই বিবেচ্য বিষয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এটি শিল্পী লায়লা শারমীনের ১২তম একক চিত্র প্রদর্শনী। তিনি তার সূক্ষ্ম রঙের ব্যবহার ও স্বতঃস্ফূর্ত ব্রাশস্ট্রোকের জন্য বিশেষ পরিচিত। কানাডায় বসবাসরত শিল্পী গত দুই বছর ধরে মিশ্র মিডিয়া ব্যবহার করে কাগজ ও ক্যানভাসে ‘‌গোল্ডেন বেঙ্গল’ সিরিজের চিত্রগুলোর মাধ্যমে জন্মভূমির সঙ্গে তার মানসিক ও আধ্যাত্মিক একাত্মবোধটি ফুটিয়ে তুলেছেন। টিএস এলিয়ট, জীবনানন্দ দাশ, কান্ট, দেরিদা, ফুকোর সাহিত্য ও দর্শন, এবং বাংলার বিভিন্ন মিথ লায়লাকে তার কাজে অনুপ্রাণিত করে। তার আঁকা ছবিগুলোর মধ্যে ধানক্ষেত, নদী, কচুরিপানা, পাখি, প্রজাপতি, মাছ, কাশফুল, শাপলা, জোনাকি ও আকাশের বিশালতা খুঁজে পাওয়া যায়।

এ প্রদর্শনীতে লায়লা শামীমের নতুন ইনস্টলেশন, রিটার্ন টু নেচারও প্রদর্শিত হবে। শিল্পী তার আঁকা চিত্রগুলো নিয়ে জানান, তিনি চান দর্শক তার শিল্পকর্মগুলো শুধু দেখবে না, বরং নিজেকে এগুলোর সঙ্গে একীভূত মনে করবে। তিনি বন উজাড় ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে ও প্রকৃতিতে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাতে চান। এ প্রদর্শনীতে প্রায় ৩০টি চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হবে।

লায়লা শারমীন ৬০টি আন্তর্জাতিক দলীয় প্রদর্শনীতে কাজ করেছেন। ২০১১ সালে তিনি কোরিয়ার সিউলের ওসিআই মিউজিয়াম অব আর্টে অনুষ্ঠিত মর্যাদাপূর্ণ ১৬তম স্পেস ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্ট দ্বিবার্ষিকীতে একটি পুরস্কার জিতেছিলেন। প্রদর্শনীটি ২৯ মে পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।