অন্যদৃষ্টি
স্কুল প্রশাসনে ‘ধর্ষক’!

মাহফুজুর রহমান মানিক
প্রকাশ: ২২ আগu ২০২৩ | ১৮:০০
তিনি দাতা সদস্য। কিন্তু দাতা কি শুধু দেবেন? নেবেনও তো। টাকার জোরে রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পরিষদ সদস্য হয়েছেন খন্দকার মুশতাক আহমেদ। সোমবার তাঁকে স্কুলটির ত্রিসীমানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। ধর্ষণ মামলার আসামি তিনি। অবস্থা এমন যেন, তিনি শিয়াল; প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের হয়তো মুরগি মনে করেন। সে জন্যই সেখানে তাঁর ঘেঁষতে মানা। আবার কে তাঁর কুনজরে পড়ে! কিন্তু আদালতকে এটা বলে দিতে হবে কেন? আইডিয়াল কলেজ কর্তৃপক্ষ কী কারণে এমন বিকৃত মানসিকতার ব্যক্তিকে পরিচালনা পর্ষদে রেখেছে!
মুশতাক আহমেদের নির্লজ্জতায় আমাদের হাসিও পায়। ছাত্রীটি হয়তো তার নাতনির বয়সী হবে। যাহোক, তারপরও মানুষের মনকে বয়সের ফ্রেমে আবদ্ধ করা যায় না। তাঁর অর্থের জোর আছে এবং তা দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার মতো মর্যাদার একটি টিকিটও তিনি ক্রয় করে ফেললেন। কিন্তু তিনি এতটা কাণ্ডজ্ঞানহীন যে, সে সম্মানের জায়গাকে তিনি শিয়াল হয়ে ব্যবহার করতে চাইলেন! ঘটনাটা দেখুন, ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করেছেন, তিনি মেয়েকে বাঁচাতে ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যান। কিন্তু মানুষরূপী শিয়াল মুশতাক লোক পাঠিয়ে মেয়েটিকে বাবার কাছ থেকে অপহরণ করে নিয়ে যান। তাকে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রেখে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নির্যাতন করা হয়। এর পর তিনি মেয়েকে বিয়ে করেন। এ ঘটনা যেন বাংলা ছবির কাহিনিকেও হার মানাচ্ছে। তাঁর অর্থ-বিত্ত যেমন আছে, তেমনি লাঠিয়াল বাহিনীও কম নেই। এত কিছু থাকতেও তাকে আমরা শিয়ালরূপেই দেখছি! কোনো সভ্য দেশে এমনটা সম্ভব?
মুশতাক-চরিত্রের মানুষ সমাজে কম নেই। তাদের সহযোগীও যে কম নেই– এ ঘটনা তারও সাক্ষ্য দিচ্ছে। কিন্তু একটি স্কুল প্রশাসনে এমন মানুষ কীভাবে থাকেন? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের এ ধরনের আচরণ, প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের এমন অবস্থা কাম্য হতে পারে না। দুঃখজনক হলেও সত্য, এমন ঘটনা এটাই প্রথম নয়; নানাভাবে বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় মানুষ ছেলেমেয়েকে কীভাবে নিশ্চিন্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাবেন? শুধু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই এ ধরনের অপরাধ কমাতে পারে।
মাহফুজুর রহমান মানিক: জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, সমকাল mahfuz.manik@gmail.com