- সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয়
- স্থায়ী সনদহীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
স্থায়ী সনদহীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সাময়িক ও স্থায়ী সনদ লইয়া শুক্রবার সমকালে যেই প্রতিবেদন প্রকাশ হইয়াছে, উহা নিমজ্জিত হিমশৈলের দৃশ্যমান চূড়া মাত্র। প্রতিবেদনে যদিও ‘মেয়াদ উত্তীর্ণ’ সনদ দিয়া অর্ধশতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়েরবৎসরের পর বৎসর কাটাইবার বিষয়টি প্রাধান্য পাইয়াছে, সংকট স্পষ্টতই গভীরতর। আমরা জানি, আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক শর্তাবলি পূরণ করিয়া অনুমোদন পাইবার পর কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘সাময়িক সনদ’ দিয়া সাত বৎসর চলিতে পারে।
তিন দফায় আরও পাঁচ বৎসর উহার মেয়াদ বৃদ্ধির পর স্থায়ী সনদ লইতেই হইবে। উহা পাইতে গেলে কেবল নিজস্ব ক্যাম্পাস তথা শিক্ষায়তনই শেষ কথা নহে; উপাচার্যসহ শীর্ষস্থানীয় পদগুলিতে আচার্য নিযুক্ত ব্যক্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অনুমোদিত পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচিও থাকিতে হইবে।
কিন্তু প্রতিবেদনমতে, মাত্র ২১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এই সকল শর্ত পূরণ করিতে সক্ষম হইয়া স্থায়ী সনদ পাইয়াছে কিংবা প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় রহিয়াছে। দেশে বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১৩। অর্থাৎ ৮১ শতাংশের অধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ই আইন মানিতে গড়িমসি করিতেছে।
দেশে উচ্চশিক্ষার বিপুল চাহিদা পূরণে রাষ্ট্রায়ত্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সামর্থ্যহীনতার মধ্যে নব্বই দশকের গোড়ায় চালু হইয়াছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাভাবিকভাবেই তথায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম নহে। কিছু কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেশে-বিদেশে সুনাম ও আস্থাও অর্জন করিয়াছে।
কিন্তু স্থায়ী সনদবিষয়ক চিত্রটি প্রমাণ করিল সংখ্যাগত প্রবৃদ্ধি ও গুণগত মানের মধ্যে ব্যবধান রহিয়াই যাইতেছে। উহা পূরণ করিতে না পারিলে দেশের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে উৎকর্ষ অর্জন কঠিন হইবে।
মন্তব্য করুন