ঢাকার অচলতার সমাধান কে দিবে

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৮:০০
বিশ্বের সবচাইতে ধীরগতির শহররূপে পরিচিতি পাওয়া বিশেষত একটা উন্নয়নশীল দেশের রাজধানী হিসাবে ঢাকার জন্য সুখকর হইতে পারে না।
মার্কিন সাময়িকী টাইমের বরাত দিয়া শনিবার সমকাল জানাইয়াছে, ১৫২টি দেশের ১২শ শহরে মোটরযানের গড় গতির উপর পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের এনবিইআর তথা ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের এক গবেষণায় উঠিয়া আসিয়াছে– ঢাকা বিশ্বের সবচাইতে ধীরগতির ২০ শহরের শীর্ষে। একটা শহরের বাসযোগ্যতার সহিত তথায় সাধারণের চলাচল কতটা সহজ ও নিরাপদ, উহার নিবিড় সম্পর্ক রহিয়াছে।
যেই শহরের বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ, সেই শহর পর্যটক তো বটেই বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও আকর্ষণ করিতে অক্ষম; অথচ আমাদের বিকাশমান জাতীয় অর্থনীতির জন্য দুইটা বিষয়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখিতে হইবে, মোট দেশজ উৎপাদনের অন্তত ৩০ শতাংশ আসে ঢাকা হইতে। ফলে বাসযোগ্যতা বা চলাচল যে কোনো প্রশ্নে ঢাকার অবনমন সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যও একটা অশুভ সংবাদ।
উপরন্তু ২০১৭ সালে বিশ্বব্যাংকের এক বিশ্লেষণে বলা হইয়াছিল, ঢাকায় যানবাহনের গতিবেগ ঘণ্টায় সাত কিলোমিটারে নামিয়া গিয়াছে; কয়েক বৎসরের মধ্যে উহা মানুষের হাঁটার গতিরও নিচে চলিয়া যাইবে। আলোচ্য এনবিইআর সূচকে প্রমাণিত হইল, বিশেষত গত এক দশকে সরকার রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বহুবিধ পদক্ষেপ লইলেও এই সকল জরিপ বা গবেষণার কোনোটাকেই বিবেচনায় নেয় নাই।
ইহা সত্য, ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থার এই সমস্যা এক দিনে সৃষ্টি হয় নাই। অতএব উহার চটজলদি সমাধানও সম্ভবপর নহে। তবে সমাধানের নামে কোনো বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত পদক্ষেপও কাম্য নহে।
সমস্যার জন্য দায়ী সকল বিষয় বিবেচনায় রাখিয়া সমাধানের একটা টেকসই পথ বাহির করিতে হইবে। ইহার জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করা প্রয়োজন বলিয়াও আমরা মনে করি।
- বিষয় :
- ঢাকার অচলতা
- সম্পাদকীয়