ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শিশু নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি

শিশু নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি

প্রতীকী ছবি

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১০ জুন ২০২৩ | ০৫:৫০

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে দুই শিশুকে যেইরূপ নির্যাতন করা হইয়াছে, উহা বেদনাদায়ক। বস্তুত শিশুদের উপর এইরূপ অজুহাতে দেশের নানা প্রান্তে নিপীড়নের খবর নিয়মিত বিরতিতেই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হইতেছে। তাহা লইয়া ইতোপূর্বে আমরা এই সম্পাদকীয় স্তম্ভেই উদ্বেগ জানাইয়াছি। আমরা বিস্মিত, এই ধরনের অপরাধ হ্রাস পাইবার পরিবর্তে যেন বাড়িতেছে; অন্তত ফরিদপুরের ঘটনাই তাহার প্রমাণ।

শুক্রবার সমকালে প্রকাশিত সচিত্র প্রতিবেদনে আমরা দেখিয়াছি, কীভাবে শিশু দুইটিকে চাতালে শোয়াইয়া শিকলে বাঁধিয়া বাঁশের লাঠি দিয়া তিনজন মিলিয়া প্রহার করিতেছে।  প্রতিবেদন মোতাবেক, টিউবওয়েলের হাতল চুরি করা হইয়াছে– এই অভিযোগে শিশু দুইটিকে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের ভাই আটক করিয়া নির্যাতন চালান।

ভিডিওতে দেখা যাইতেছে, তিনজন কেবল শিশুদের প্রহার করিয়াই ক্ষান্ত হইতেছে না; তাহাদের নিকট হইতে জোর করিয়া স্বীকারোক্তি লইবার জন্য ভয়ংকর কায়দায় শিশু দুইটির গলায় ফাড়া বাঁশ দিয়া চাপিয়া ধরে। একটি শিশুর পরিবার সমকালকে বলিয়াছে, নিপীড়নকারীরা প্রভাবশালী বলিয়া তাহারা অভিযোগ করিবে না; যদিও পুলিশ প্রধান নিপীড়ককে গ্রেপ্তার করিয়াছে। 

আমরা মনে করি, এই ঘটনার সহিত যুক্ত সকলকেই দ্রুত আইনের আওতায় আনিয়া শাস্তির মুখোমুখি করা হইবে। ইতোপূর্বে শিশুদের উপর নির্যাতন চালাইয়া প্রাণ হরণের অঘটনও আমরা প্রত্যক্ষ করিয়াছি। কোমলমতি শিশুদের লইয়া নিছক মশকরা করিতেও তাহাদের উপর যে নির্মম আচরণ করা হইয়াছে, উহাও স্মর্তব্য। তজ্জন্য প্রশাসনের তরফ হইতে এইরূপ ঘটনায় কঠোর হইবার বিকল্প নাই।

শিশুরা কোনো অপরাধের সহিত যুক্ত থাকিলে উহার প্রতিকারে দেশে আইন-আদালত রহিয়াছে। কিন্তু সেই পথ না ধরিয়া তাহাদের উপর নিপীড়ন চালানো কোনো প্রকারেই গ্রহণযোগ্য হইতে পারে না। এইরূপ বর্বরতা বন্ধে সামাজিক জাগরণ প্রত্যাশিত। শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ সমাজ প্রতিষ্ঠা করিতে সকলের আগাইয়া আসিবার বিকল্প নাই।

আরও পড়ুন

×