কারাগার কবে সংশোধনাগার হইবে?

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৩ | ০৪:১০
কারাগারকে বলা হইয়া থাকে সংশোধনাগার। তবে দেশের কারগারসমূহ কতটুকু উহাদের এহেন নামের প্রতি সুবিচার করিতে পারিতেছে, সেই সন্দেহ জনমনে কম নহে। এমনও অভিযোগ, কোনো কোনো কারাগার সংশোধনাগার হইবার পরিবর্তে বরং ছোট অপরাধীকে বড় অপরাধী বানাইবার যন্ত্রে পরিণত হইয়াছে। অন্তত শুক্রবার সমকালে চট্টগ্রাম ও গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার লইয়া প্রকাশিত দুইটা প্রতিবেদন ইহার সপক্ষে সেই সাক্ষ্যই দিতেছে।
চট্টগ্রাম কারাগার সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এত অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চিত্র ফুটিয়া উঠিয়াছে, মনে হয় তথায় অনিয়মই নিয়ম। বিধি ভঙ্গ করিয়া টাকার বিনিময়ে যখন তখন বন্দির সহিত স্বজনদের সাক্ষাৎ করিবার সুযোগ তো মিলেই, টাকার অঙ্ক বড় হইলে বন্দির সহিত একান্তে কথা বলিবারও সুযোগ পাওয়া যায় চট্টগ্রাম কারাগারে। বন্দির হিসাব নম্বরে (পিসি) স্বজনের জমা দেওয়া টাকা লইয়াও চলে নয়ছয়। ‘হাইপ্রোফাইল’ কাশিমপুর কারাগারে তো কয়েক খুন করিয়া আত্মহত্যা বলিয়া চালাইবার অপপ্রয়াস চলিয়াছে।
প্রতিবেদনমতে, গত বৎসরের ৭ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোস্তফার শবদেহ বাহির করিবার পর কারা কর্তৃপক্ষ মৃত্যুটিকে নিছক আত্মহত্যা হিসাবে চালাইয়া দেওয়ার অপপ্রয়াস চালায়। পক্ষান্তরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, মোস্তফাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হইয়াছে। এই কাশিমপুর কারাগারেই সম্প্রতি বহিষ্কৃত যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়া কর্তৃক আরেকজন বন্দিকে নির্যাতন করিয়া অর্থোপার্জনের ঘটনা ঘটিয়াছে।
কাশিমপুর কারাগারে মোস্তফার খুনি এবং এ হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দিবার চেষ্টাকারীদেরও মুখোশ উন্মোচন করিয়া দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনিতে হইবে।