চমেক হাসপাতালের ভয়ংকর চিত্র

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০
চমেক তথা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড হইতে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২৫ জন চিকিৎসাধীন রোগী হারাইয়া যাইবার ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। কারণ একজন রোগী ভর্তি হইবার পর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অনুমতি ব্যতিরেকে তাহার পক্ষে কোনো প্রকারেই হাসপাতালের বাহিরে যাইবার সুযোগ নাই।
অথচ বুধবার সমকালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, চমেক হাসপাতালের পরিচালক স্বয়ং স্বীকার করিয়াছেন, এই প্রকার ঘটনায় তাহারা হাসপাতালের রেকর্ড বহিতে নিছক ‘পলাতক’ লিখিয়াই দায়িত্ব সম্পাদন করেন। উপরন্তু গত দুই মাসে চমেক হইতে চিকিৎসাধীন দেড় সহস্রাধিক রোগী ‘উধাও’ হইয়া গিয়াছেন, যাহাদের কয়েকজন অপারেশনের রোগী বিধায় হাঁটাচলার পরিস্থিতিতেও ছিলেন না; এমনকি মামলার আসামি হওয়ায় ছিলেন পুলিশ প্রহরাধীন।
এমন তথ্য পাওয়া গিয়াছে; আইসিইউতে থাকা রোগীও তথা হইতে লাপাত্তা। শুধু উহাই নহে, অনেক ক্ষেত্রে রোগীর স্বজনদের অজ্ঞাতেই এহেন অপকর্ম চলিতেছে। যাহার ফলে রোগীর সন্ধান পাইতে অনেককে থানায় সাধারণ ডায়েরি পর্যন্ত করিতে হয়। অনেকে হাসপাতাল এলাকায় ‘সন্ধান চাই’ লিখিয়া পোস্টারও সাঁটাইয়াছেন।
এহেন পরিস্থিতির জন্য হাসপাতালের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা জনবল সংকটকে দায়ী করা হইলেও প্রকৃত কারণ হইল রোগীদের প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়সারা মনোভাব। কে না জানে, সরকারি হাসাপাতালের রোগীদের উল্লেখযোগ্য অংশ সমাজের সীমিত ও নিম্নআয়ের মানুষ, যাহাদের প্রতি খোদ রাষ্ট্রেরই ঔদাসীন্য প্রবাদপ্রতিম।
তবে আমাদের প্রত্যাশা, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাব্যক্তিগণ সকল নাগরিকের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে তাহাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হইয়া অবিলম্বে সমস্যাটির সুষ্ঠু সমাধান করিবেন। এ লক্ষ্যে তাহারা চমেকসহ সকল সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কঠোর জবাবদিহির আওতায় আনিবেন।
- বিষয় :
- চমেক হাসপাতাল
- সম্পাদকীয়