কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখা তাদের এক প্রতিবেদনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে- অসাধু ব্যবসায়ী, আড়তদার, মিল মালিকদের চক্র সক্রিয় রয়েছে। এই অভিযোগ মোটেও অমূলক নয় যে, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার পেছনে তাদের ভূমিকাই মুখ্য। উৎপাদন ও মজুদ ঘাটতি না থাকলেও চাল, ডাল, রসুন, ভোজ্যতেল ইত্যাদি পণ্যের দাম বেড়েছে। শুক্রবার সমকালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনির দামও বেড়ে গেছে আরেক দফা। গত মাসে সরকারি চিনির দাম কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়ানোর ফলে মিল মালিকরাও চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সামনে রমজান। আমরা প্রতি বছরই এ সময় বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির নানা রকম পাঁয়তারা লক্ষ্য করি। গ্রীষ্ফ্মকাল ও রমজানে চিনির চাহিদা এমনিতেই বাড়ে। এ চাহিদা মেটাতে সম্প্রতি এক লাখ টন চিনি আমদানির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন। পেঁয়াজের দামও কেজিপ্রতি মানভেদে বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। এবার রমজানের বেশ আগেই অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা শুরু হয়ে গেছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা জোটবদ্ধ, তাদের নানা কৌশল ও অজুহাত দাঁড় করিয়ে ফায়দা লোটার বিষয়টিও নতুন কিছু নয়। ভোক্তাস্বার্থ কিংবা অধিকার রক্ষায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠার দাবি ক্যাবের দীর্ঘদিনের। আমরা মনে করি, তাদের এ দাবি আমলযোগ্য। আমরা এই সম্পাদকীয় স্তম্ভে এর আগেও লিখেছি, নিত্যপণ্যের ইচ্ছামাফিক দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে জোরদার মনিটরিং ব্যবস্থার বিকল্প নেই। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টিসিবিকে শক্তিশালী করে এর কার্যক্রম বিস্তৃত করার তাগিদ নানা মহল থেকে বারবার দেওয়া হচ্ছে। টিসিবি যে পরিসরে কাজ করছে, তা সিন্ধুর মাঝে বিন্দুর মতো। জনবল বৃদ্ধিসহ নতুন কর্মপরিকল্পনার ভিত্তিতে টিসিবিকে ঢেলে সাজানো সময়ের গুরুত্বপূর্ণ দাবি। বিকল্প বাজার ও মনিটরিং ব্যবস্থা দুই-ই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। তা না হলে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধ করা যাবে না। ভোক্তার স্বার্থ কোনোভাবেই উপেক্ষিত থাকতে পারে না। সামনে রমজান, তাই এখনই আটঘাট বেঁধে মাঠে নামতে হবে।
--
প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০ । ০১:১২ । প্রিন্ট সংস্করণ
মন্তব্য করুন