সরকারি খাদ্যগুদামে ধান কেনায় অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। সরকারি উদ্যোগে ধান কেনায় অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে দেশের প্রকৃত কৃষকদের বঞ্চনার উপাখ্যান পুরোনো। সরকারের অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহের নীতিমালা অনুযায়ী প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের কথা থাকলেও এ ক্ষেত্রে নানারকম কারসাজির ঘটনা ইতোমধ্যে অনেক ঘটেছে। রোববার সমকালের এক প্রতিবেদনে ফের এই চিত্রই উঠে এসেছে। বরিশালের বাবুগঞ্জ ও গৌরনদী উপজেলার সরকারি খাদ্যগুদামে আমনের পরিবর্তে বোরো ধান এবং কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কিনে ব্যবসায়ী-দালাল-ফড়িয়াদের সঙ্গে যোগসাজশে ধান কেনার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি খাদ্যগুদামের কর্মকর্তার স্বজনদের বিরুদ্ধেও ধান সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে কৃষক বঞ্চিত হচ্ছেন ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকে ও সরকারের নীতিমালা লঙ্ঘিত হচ্ছে।
গৌরনদীতে আমনের পরিবর্তে ৭৫ বস্তা বোরো ধান পুলিশ আটকও করেছে। আমন ধান সংগ্রহ অভিযান চলাকালে এর আগে আরও বোরো ধান ওই গুদামে সরবরাহ করার অপপ্রক্রিয়ার সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের নীতিমালা বিরুদ্ধ কাজ প্রতিকারহীন থাকতে পারে না। তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের ধান কেনা ও সিন্ডিকেট কার্ডধারী কৃষকদের নানা অপকর্মের বিষয়ে ইতোপূর্বে আমরা এই সম্পাদকীয় স্তম্ভে লিখেছি। এমনিতেই দেশের প্রকৃত কৃষক কখনও উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পান না। কৃষকের সেই বঞ্চনা অবসানে সরাসরি প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার সরকারি উদ্যোগ এভাবে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর পকেট ভারি করার কাজে ব্যবহূত হতে পারে না। যেসব দায়িত্বশীল সরকারের সদিচ্ছা জলাঞ্জলি দিয়ে নিজেদের উদরপূর্তি করতে মরিয়া, তাদের চিহ্নিত করে প্রতিকার নিশ্চিত করতেই হবে। বাবুগঞ্জ, গৌরনদী খণ্ডিত দৃষ্টান্তমাত্র।
এমন অপতৎপরতা সারাদেশেই কমবেশি চলছে। প্রকৃত কৃষক তালিকা স্বচ্ছ করতে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সমাজের সচেতনদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা যেতে পারে। তবে সর্বাগ্রে তাড়াতে হবে সর্ষের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ভূত।
মন্তব্য করুন