- সম্পাদকীয়
- করোনাযোদ্ধার সুরক্ষা সর্বাগ্রে
করোনাযোদ্ধার সুরক্ষা সর্বাগ্রে
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি যেন এক অনভিপ্রেত 'সাম্য' প্রতিষ্ঠা করেছে। উচ্চবিত্ত, নিম্নবিত্ত কাউকেই ছাড়ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে ঝুঁকিতে থাকছে সবাই-ই। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকছে এই দুঃসময়েও যারা জরুরি সেবা চালু রাখছে। বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত শীর্ষ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে- বাংলাদেশে যাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে প্রায় দশ শতাংশই এসব জরুরি সেবা-সংশ্নিষ্ট। চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা, সংবাদমাধ্যম ও আর্থিক সেবা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের ১১০ জনের বেশি ইতোমধ্যে সংক্রমিত হয়েছে। আমরা আশঙ্কা করি, এই সংখ্যা আরও বেশি। বস্তুত এই সম্পাদকীয় যেদিন লিখছি, সেদিনও আরও কয়েকজন সংবাদকর্মীর সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আমাদের যে উদ্বেগ, তা নিঃসন্দেহে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে এই চিত্র। দেশে করোনা সংক্রমণ ও বিস্তার রোধ এবং আর্থ-সামাজিক শৃঙ্খলা চালু রাখার ভার যাদের ওপর, তারাই যদি করোনায় কাবু হতে থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের সুরক্ষা ব্যবস্থা হয়ে পড়বে আরও নাজুক। বাংলাদেশ শুধু নয়, বিশ্বব্যাপীই করোনাযুদ্ধে যারা শতকোটি মানুষের জন্য ভরসার বাতাবরণ তৈরি করছে, তারা হেরে গেলে হেরে যেতে পারে মানবজাতি।
আমরা গভীর বেদনা ও উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি, সিলেটের চিকিৎসক ডা. মো. মঈন উদ্দিন শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। করোনা রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে তিনি নিজেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার উপযুক্ত চিকিৎসা এবং ঢাকায় স্থানান্তরের উন্নত পরিবহন না পাওয়ার বিষয়টি নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল। ঢাকায় এনেও শেষ রক্ষা না হওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কতটা বেদনা ছড়িয়ে দিয়েছে, আমরা দেখেছি। কিন্তু বিষয়টি অন্যদের জন্য যতখানি বেদনার, তার চেয়ে বেশি বিবেচনাবোধের পরিচয় দেওয়ার। দেশের চিকিৎসকদের মধ্যে প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ডা. মঈনের জন্য আমরা সমকালের পক্ষ থেকে শোক ও সমবেদনা নিশ্চয়ই জানাই। কিন্তু একই সঙ্গে আর কোনো চিকিৎসক, সেবিকা বা স্বাস্থ্যকর্মী যাতে এমন পরিণতির শিকার না হয়, সেই তাগিদ দেওয়া আরও জরুরি। সমকালের আলোচ্য প্রতিবেদনে আমরা দেখছি, যেসব মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সন্দেহভাজনদের বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করছেন বা গবেষণাগারে পরীক্ষা করছেন, তাদেরও কেউ কেউ ইতোমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বস্তুত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী নিয়ে আগেই অনেক কথা হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতির যে এখনও কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি- এসব খবর তার প্রমাণ।
কেবল চিকিৎসকরা নয়, দেশে 'লকডাউন' বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাখছে ব্যাপক ও তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা। আমরা দেখছি, করোনা মোকাবিলায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষত পুলিশের ভূমিকা হয়ে উঠছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের 'অগ্রবর্তী দল' হিসেবে। কেবল নাগরিকদের ঘরে রাখা নয়; ঘরে বা বাইরে থাকা অবস্থায় তাদের নানা অসুবিধায় পুলিশকেই আমরা পাশে এসে দাঁড়াতে দেখছি। আর দেশ ও বিদেশের পুরো চিত্র জাতির সামনে তুলে ধরছে সংবাদমাধ্যম। প্রায় যুদ্ধাবস্থার এই সময়ে নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম ছাড়া গুজবের মতো ক্ষতিকর প্রবাহ এবং দেশের প্রত্যেকটি এলাকার বাস্তব চিত্র তুলে ধরার মতো উপকারী মাধ্যম আর কিছু হতে পারে না। সংবাদমাধ্যম না থাকলে পুরো সুরক্ষা ব্যবস্থা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ার আশঙ্কা অমূলক হতে পারে না। একই কথা আমরা বলতে চাই ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে।
এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই যে, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা, আর্থিক ও সংবাদসেবা দিচ্ছে যারা, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা দেখতে চাই, এক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে সর্বাগ্রে।
আমরা গভীর বেদনা ও উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি, সিলেটের চিকিৎসক ডা. মো. মঈন উদ্দিন শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। করোনা রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে তিনি নিজেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার উপযুক্ত চিকিৎসা এবং ঢাকায় স্থানান্তরের উন্নত পরিবহন না পাওয়ার বিষয়টি নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল। ঢাকায় এনেও শেষ রক্ষা না হওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কতটা বেদনা ছড়িয়ে দিয়েছে, আমরা দেখেছি। কিন্তু বিষয়টি অন্যদের জন্য যতখানি বেদনার, তার চেয়ে বেশি বিবেচনাবোধের পরিচয় দেওয়ার। দেশের চিকিৎসকদের মধ্যে প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ডা. মঈনের জন্য আমরা সমকালের পক্ষ থেকে শোক ও সমবেদনা নিশ্চয়ই জানাই। কিন্তু একই সঙ্গে আর কোনো চিকিৎসক, সেবিকা বা স্বাস্থ্যকর্মী যাতে এমন পরিণতির শিকার না হয়, সেই তাগিদ দেওয়া আরও জরুরি। সমকালের আলোচ্য প্রতিবেদনে আমরা দেখছি, যেসব মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সন্দেহভাজনদের বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করছেন বা গবেষণাগারে পরীক্ষা করছেন, তাদেরও কেউ কেউ ইতোমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বস্তুত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী নিয়ে আগেই অনেক কথা হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতির যে এখনও কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি- এসব খবর তার প্রমাণ।
কেবল চিকিৎসকরা নয়, দেশে 'লকডাউন' বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাখছে ব্যাপক ও তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা। আমরা দেখছি, করোনা মোকাবিলায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষত পুলিশের ভূমিকা হয়ে উঠছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের 'অগ্রবর্তী দল' হিসেবে। কেবল নাগরিকদের ঘরে রাখা নয়; ঘরে বা বাইরে থাকা অবস্থায় তাদের নানা অসুবিধায় পুলিশকেই আমরা পাশে এসে দাঁড়াতে দেখছি। আর দেশ ও বিদেশের পুরো চিত্র জাতির সামনে তুলে ধরছে সংবাদমাধ্যম। প্রায় যুদ্ধাবস্থার এই সময়ে নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম ছাড়া গুজবের মতো ক্ষতিকর প্রবাহ এবং দেশের প্রত্যেকটি এলাকার বাস্তব চিত্র তুলে ধরার মতো উপকারী মাধ্যম আর কিছু হতে পারে না। সংবাদমাধ্যম না থাকলে পুরো সুরক্ষা ব্যবস্থা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ার আশঙ্কা অমূলক হতে পারে না। একই কথা আমরা বলতে চাই ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে।
এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই যে, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা, আর্থিক ও সংবাদসেবা দিচ্ছে যারা, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা দেখতে চাই, এক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে সর্বাগ্রে।
মন্তব্য করুন