ঢাকা শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

এমপিওভুক্তি প্রক্রিয়া ‘স্বয়ংক্রিয়’ হউক

এমপিওভুক্তি প্রক্রিয়া ‘স্বয়ংক্রিয়’ হউক

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৩ | ১৮:০০

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় বেতন স্কেলের প্রাপ্য অংশ তথা ‘এমপিও’ ব্যবস্থায় ভুক্তির সুযোগ হইতে বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারীগণ বুধবার রাজধানীতে যেই দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করিয়াছেন, উহার যৌক্তিকতা কেহ অস্বীকার করিতে পারিবেন না। বিশেষত ‘নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী পরিষদ’ নেতাদের একজন যেইভাবে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছেন, উহাও অনেককে স্পর্শ করিবে। তুলনাটি সংগত– যেই দেশ ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে পারে, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করিতে পারে, আকাশে উপগ্রহ পাঠাইতে পারে; সেই দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে সক্ষম হইবে না কেন? ‘নন-এমপিও’ শিক্ষক-কর্মচারীগণ যেইভাবে বৎসরের পর বৎসর নিজ অর্থ ব্যয়ে ‘চাকুরি’ করিয়া যান, উহার নজির বাংলাদেশের বাহিরে অন্য কোথাও রহিয়াছে কি? এই অব্যবস্থাপনার অবসান হওয়া উচিত।

স্বীকার্য, বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করিবার পর তিন দফায় ছয় সহস্রাধিক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করিয়াছে। পূর্বের সরকারগুলির সময় নূতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত বা জাতীয়করণ কার্যত থামিয়া গিয়াছিল। মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ ঘটা একটি দেশের পক্ষে অবশিষ্ট ৮-১০ সহস্রাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তিও কঠিন হইতে পারে না। নিবন্ধনপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শর্তপূরণ সাপেক্ষে তিন বৎসর পর এমপিওভুক্ত হইবার কথা। শিক্ষামন্ত্রী ২০২১ সালে বলিয়াছিলেন, এমপিওভুক্তি ‘চলমান প্রক্রিয়া’। কিন্তু পরবর্তী দুই বৎসর আবেদনই লওয়া হইতেছে না কেন? এমপিওভুক্তির আশায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বৎসরের পর বৎসর এমনকি দশকের পর দশক অপেক্ষাই করিতে হইবে কেন?

আমরা মনে করি, সামগ্রিক এমপিওভুক্তি প্রক্রিয়া ‘স্বয়ংক্রিয়’ হওয়া উচিত। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বিশেষে পাঠদান ও শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের অনুমতি যদি যথার্থ যাচাই-বাছাই করিয়া দেওয়া হয়, তাহা হইলে এমপিওভুক্তি প্রক্রিয়া আরও সহজ হইবে। সহজ হইবে শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণও। উৎসাহব্যঞ্জক বিষয়, ২০১৯ সাল হইতে এমপিওভুক্তির আবেদন অনলাইনে গ্রহণ করা হইতেছে। আমরা দেখিতে চাহি, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত লইয়া অভিন্ন ডেটাবেজ তৈয়ারি হইয়াছে। তাহা হইলে কোন এলাকায় কত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক প্রয়োজন; কোনটির এমপিওভুক্তি অগ্রাধিকার– এই সকল বিষয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সহজ হইবে।

আরও পড়ুন

×