ঢাকা মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ভুল গ্রেপ্তার বন্ধের উদ্যোগ

ভুল গ্রেপ্তার বন্ধের উদ্যোগ

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ | ২২:৫৩

বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ‘আয়নাবাজি’-তে কেবল চেহারার মিল দিয়া আসামির বদলে সাধারণ একজনের কারাভোগের কাহিনি জনপ্রিয় হইয়াছিল। তেমনি তুমুল আলোচিত হইয়াছিল জাহালম নামের এক নিরপরাধের তিন বৎসর জেল খাটিবার করুণ কাহিনি। কারণ, জাহালমের চেহারার সঙ্গে মিল ছিল প্রকৃত আসামির। শুধু চেহারাই নহে, নাম-ঠিকানায় মিল, পিতার নামের সঙ্গে মিল ইত্যাদি কারণেও দোষীর জায়গায় নির্দোষের শাস্তিভোগ কিংবা ভোগান্তির কাহিনি আদালতপাড়ায় প্রচলিত রহিয়াছে। আশার কথা যে, এই জাতীয় মর্মান্তিক ভুলের সুযোগ কমাইবার তোড়জোড় চলিতেছে। এই জন্য পুলিশ প্রবিধান সংশোধনের প্রস্তাব উঠিয়াছে বলিয়া জানাইতেছে শনিবারের সমকাল।

প্রথম কথা হইল, নাম-ঠিকানা কিংবা চেহারার মিলের কারণে কত নিরপরাধ সাজা পাইয়াছে, তাহা তো পুলিশেরই সর্বাগ্রে জানিবার কথা। জাহালমকাণ্ডের ইতিহাসও চার বৎসর পূর্বে। ২০১৯ সালের একটি খবরেই ৩৩টি মামলায় ভুল আসামির জেলে থাকিবার খবর প্রকাশিত হইয়াছিল। ইহার পরে আরও কত ঘটনা ঘটিয়া চলিয়াছে, তাহার ইয়ত্তা নাই। অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের যে টনক নড়িল তাহা অবশ্যই সাধুবাদ পাইবার যোগ্য। এই জাতীয় ভুল এড়াইবার জন্য পুলিশ প্রবিধানের (পিআরবি) ৩৮৯ নম্বর বিধি সংশোধনের উদ্যোগ লওয়া হইয়াছে। সমকালের সংবাদে দেখা যাইতেছে যে, এই সংশোধনের প্রস্তাব দিয়াছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাহারা অনুসন্ধান স্লিপে আসামির ছবি, মায়ের নাম, আসামির ডাকনাম ইত্যাদি থাকিবার আবশ্যকতা জানাইয়াছেন। আশা করি, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুতই বিষয়টি নিয়া বিশেষজ্ঞদের সহিত পরামর্শ করিয়া চূড়ান্ত করিবেন। যত দ্রুত এই সংশোধন ঘটিবে ততই নিরীহ কাহারও পাকড়াও হইবার আশঙ্কা কমিবে।

‘নামে নামে যমে টানে’ বলিয়া যে প্রবাদ রহিয়াছে তাহার অভিশাপ হইতে নাহয় মুক্তি পাওয়া গেল কিন্তু প্রবাসী, মৃত কিংবা অপরাধ সংঘটনস্থলে অনুপস্থিতদেরও যে আসামি করিয়া জেল-হাজতে প্রেরণের হিড়িক চলিতেছে তাহা থামিবে কী প্রকারে? কেবল রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই যেইখানে নিপীড়িত হইতে হয়, সেইখানে পুলিশ প্রবিধানের সংস্কার কি নিরীহের জন্য আশ্বাস হইয়া আসিবে কিনা, সেই প্রশ্ন রহিয়াই গেল।

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×