ঢাকা বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

ছেঁড়াদ্বীপ রক্ষায় তৎপর হউন

ছেঁড়াদ্বীপ রক্ষায় তৎপর হউন

.

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ | ২৩:০৫

সেন্টমার্টিনের ছেঁড়াদ্বীপকে বাঁচাইতে বিশেষত বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা দৃশ্যমান বলিলে ভুল হইবে না। মঙ্গলবার সমকাল জানাইয়াছে, মূল দ্বীপ হইতে আট কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত প্রচুর প্রাকৃতিক প্রবাল পাথরসমৃদ্ধ ছেঁড়াদ্বীপ সরকার ঘোষিত একটি ‘পরিবেশ-প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা’ হইলেও জলপথে এবং ভাটার সময়ে সৈকত দিয়া ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে প্রতিদিন কয়েক সহস্র পর্যটক তথায় যাইতেছে। ফলস্বরূপ নৌযানের চাপে প্রবাল ক্ষতিগ্রস্ত হইতেছে এবং যানবাহনের চাকার নিচে পড়িয়া ধ্বংস হইতেছে বালুচরে ছড়াইয়া ছিটাইয়া থাকা বিভিন্ন প্রজাতির শামুক-ঝিনুক, প্রবাল-শৈবালসহ জীববৈচিত্র্য। কোনো প্রকার স্থাপনা নির্মাণ আইনত নিষিদ্ধ হইলেও অত্যন্ত স্পর্শকাতর দ্বীপটিতে গড়িয়া উঠিয়াছে অস্থায়ী দোকান; যথা হইতে প্রতিনিয়ত দ্বীপে ফেলা হইতেছে প্লাস্টিকের মতো অপচনশীল আবর্জনা। এক কথায়, দ্বীপটি ধীরে ধীরে অস্তিত্ব সংকটের দিকে যাইতেছে বলিয়া প্রতীয়মান।

আমরা জানি, ২০২০ সালে প্রথম ছেঁড়াদ্বীপে পর্যটক যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ গত বৎসর মে মাসে একই মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখিয়া সেন্টমার্টিন ও ছেঁড়াদ্বীপ রক্ষায় ১৪ দফা বিধিনিষেধ জারি করা হয়। তৎসহিত দ্বীপে লোকসমাগম এক সহস্রের নিচে সীমাবদ্ধ করিবারও ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবতা, সেই ঘোষণা অদ্যাবধি কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ। রীতিমতো অবৈধ পর্যটন ব্যবস্থাপনাকারীদিগের ফোন নম্বর-সংবলিত সাইনবোর্ড, এমনকি টিকিট কাউন্টার বসাইয়া প্রকাশ্যে এহেন তৎপরতা চলিলেও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদিগের বিরুদ্ধে ‘আইনি’ পদক্ষেপ গ্রহণের সনাতন ঘোষণা দিয়াই দায়িত্ব সমাপ্ত করিতে সচেষ্ট।

ছেঁড়াদ্বীপের বিপন্নতা শুধু সেন্টমার্টিনকেই অস্তিত্ব সংকটে ফেলিতেছে না, বঙ্গোপসাগরে পরিবেশ-প্রতিবেশেও নেতিবাচক প্রভাব রাখিতেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকিলে শুধু দেশই ক্ষতিগ্রস্ত নয়; প্রকৃতির অপরূপ এই লীলাভূমিতে পর্যটকগণের জন্যও বিরূপ পরিবেশ সৃষ্টি হইতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাসমূহকে এখনই জাগিয়া উঠিতে হইবে। তৎসহিত সচেতন মহল বিশেষত পরিবেশবাদী সংগঠনসমূহকেও উচ্চকণ্ঠ থাকিয়া দ্বীপটি রক্ষার্থে সরকারি সংস্থাসমূহের উপর চাপ প্রয়োগ করিতে হইবে। 

আরও পড়ুন

×