আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের কান্দাহার ও হেলমান্দ প্রদেশে পপি চাষ গত বছরের তুলনায় বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এ পপি গাছের ফল থেকে তৈরি হয় আফিম।

দেশটির সংবাদামাধ্যম টোলো নিউজ এ তথ্য জানায়।

এক কৃষক বলেন, এখানে চাষের জন্য অন্য কিছু নেই। আমরা এর আগে গম চাষ করেছিলাম। চলতি বছর—আমরা পপি চাষ করতে চাই। আগে প্রতিদিন ঘুষ চাওয়া হতো, এখন আর সে সমস্যা নেই।

সংবাদমাধ্যমটির সাংবাদিক দক্ষিণাঞ্চলের প্রদেশগুলো ঘুরে দেখেন, সেখানে খোলা বাজারে আফিম ও অন্য মাদক বিক্রি হচ্ছে।

আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে গম ও অন্য শস্য চাষের জন্য উর্বর এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু এ এলাকায় এখন পপি চাষ বাড়ছে। কান্দাহার ও হেলমান্দ পপি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত।

মুহাম্মদ করিম। পেশায় তিনি কৃষক। গত ১৫ বছর ধরে তিনি আফিম চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি আশা করছেন, সামনের মাসে তার ফল পরিপক্ব হবে।

তিনি বলেন, যদি আমরা পপি চাষ না করি তাহলে আমরা ভালো আয় করতে পারব না। গম চাষ করলে ভালো আয় হয় না।

পীর মুহাম্মদ নামের অপর এক কৃষক বলেন, এ বছর কোনো ধরনের বিধি-নিষেধ নেই। যদি তালেবান সরকার এতে নিষেধাজ্ঞা দিতে চায় তবে অন্তত আমাদের এ বছর পপি চাষের সুযোগ দিতে হবে।

পপি চাষ বহু শিশুকে শিক্ষাবিমুখ করে তুলছে। পড়াশোনার বদলে তারা সময় দিচ্ছে পপি চাষের কাজে।

এসব শিশুর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, দারিদ্র্যর কারণে শিশুদের পপি চাষের কাজে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

পপি চাষের সঙ্গে যুক্ত এক শিশুর অভিভাবক বলেন, আমি পড়াশোনা করার সুযোগ পাইনি। কেননা আমি সে সময় জমিতে চাষাবাদের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। 

তবে সবাই যে পপি চাষ করছেন তা কিন্তু নয়। অনেক কৃষকই তাদের জমিতে গম ও অন্য শস্যও চাষ করছেন।

গুল মুহাম্মদ নামের এক কৃষক বলেন, যারা পপি চাষ করছেন তাদের ধারণা তারা এর মাধ্যমে প্রচুর অর্থ আয় করবেন।

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণে নেয় তালেবান, গঠন করে সরকার। যদিও তাদের সরকারকে এখনও কোনো দেশ স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে দেশটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। ক্ষুধা, দারিদ্র ও অর্থনৈতিক সংকট পিছু ছাড়ছে না দেশটির।