ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

বেহাল স্বাস্থ্য খাতের আরেক নজির

বেহাল স্বাস্থ্য খাতের আরেক নজির

.

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৪ | ২৩:১৫

দেশের ৮০ শতাংশ ব্যবসায়ী সরকারি নিবন্ধন ব্যতিরেকে বিদেশ হইতে চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানি করিতেছেন বলিয়া গতকাল সমকাল যাহা জানাইয়াছে, উহা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। শুধু উহাই নহে; ব্যবসায়ীগণ বিদেশ হইতে চিকিৎসা সরঞ্জাম আনিয়া ঔষধ প্রশাসনকে অবজ্ঞা করিয়া ইচ্ছামতো মূল্য নির্ধারণ করিতেছেন। গত ছয় মাসে তাহারা আন্তর্জাতিক বাজারে সংকট দেখাইয়া দুই দফা এই সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করিয়াছেন। অন্যদিকে সরকারও এই খাতের বিপুল রাজস্ব হইতে বঞ্চিত হইতেছে। এখানেই শেষ নহে; বর্তমানে দেশে চিকিৎসাসেবায় সাড়ে ৪ সহস্রাধিক বিদেশি যন্ত্র ও সরঞ্জাম ব্যবহৃত হইতেছে, যেগুলির অধিকাংশের মান লইয়াও প্রশ্ন আছে। ফলে সংশ্লিষ্ট রোগী অনেককে উচ্চমূল্যে মানহীন চিকিৎসাসেবা ক্রয় করিতে হইতেছে। অভিযোগ আছে, সম্প্রতি সুন্নতে খতনা ও ভুল চিকিৎসাজনিত কারণে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর পশ্চাতে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মুনাফাঘৃধ্নুতা এবং মানহীন চিকিৎসা যন্ত্র ও সরঞ্জামেরও দায় রহিয়াছে।

দুর্ভাগ্যজনক, চিকিৎসা যন্ত্র ও সরঞ্জাম ব্যবসায় সম্পূর্ণরূপে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের এখতিয়ারে, অথচ সংস্থাটি এই বিষয়ে প্রায় নির্বিকার। যে কারণে দেশে চিকিৎসা যন্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানিকারকের সংখ্যা ৫০০ হইলেও, অদ্যাবধি মাত্র ৮৯ জন নিবন্ধন করিয়াছেন। এমনকি প্রতিবেদনমতে, নিবন্ধনহীন অনেকে নাকি প্রতারণার আশ্রয় লইয়া দেশে তৈরি চিকিৎসা যন্ত্র বিদেশি বলিয়া বিক্রয় করিতেছেন। 
অনস্বীকার্য, মানহীন ঔষধ যদ্রূপ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর, এমনকি প্রাণসংহারও হইতে পারে, তদ্রূপ মানহীন চিকিৎসা যন্ত্র ও সরঞ্জামও ক্ষতির কারণ হইতে পারে। তাই ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে ঔষধই শুধু নহে; চিকিৎসা সামগ্রীর ব্যবসাতেও ধারাবাহিক নজরদারি চালাইতে হইবে। ইহারই অংশরূপে অবিলম্বে এই খাতের ব্যবসায়ীদিগকে নিবন্ধনের আওতায় আনিয়া উহাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করিতে হইবে। তৎসহিত সচেতন মহলকেও বুঝিতে হইবে, নাগরিকের সংবিধানস্বীকৃত সামগ্রিক স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করিতে তাহাদের ধারাবাহিক উচ্চকণ্ঠও গুরুত্বপূর্ণ।
 

আরও পড়ুন

×