ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

আবারও হেফাজতে মৃত্যু!

আবারও হেফাজতে মৃত্যু!

প্রতীকী ছবি

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৪ | ০১:১৬ | আপডেট: ১৯ মে ২০২৪ | ০১:১৮

আবারও র‍্যাব হেফাজতে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠিল। শনিবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন মতে, পুত্রবধূকে হত্যার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার প্রবেশদ্বার হইতে স্বামীসহ সুরাইয়া বেগমকে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র‍্যাব আটক করিয়া বাহিনীর ভৈরব কার্যালয়ে লইয়া যায়। কিন্তু পরের দিন সকাল ৭টায় তাঁহাকে ভৈরব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাইতে গেলে সেখানকার চিকিৎসক সুরাইয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। যদিও সংশ্লিষ্ট র‍্যাব কমান্ডার ক্যাম্পে সুরাইয়ার উপর নির্যাতন চলিয়াছে বলিয়া তাহার স্বামীর অভিযোগ অস্বীকার করিয়াছেন; এ নির্মম ঘটনার দায় তাহারা এড়াইতে পারেন না। গত বছরের মার্চে নওগাঁয় একই বাহিনীর জিম্মায় থাকাকালে স্থানীয় ভূমি অফিসকর্মী জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনার মাত্র এক বছরের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে আলোচ্য ঘটনাটি ঘটিল। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) তথ্য মোতাবেক, গত বছরের জানুয়ারি হইতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত র‌্যাব হেফাজতে একজন নারীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মোট ছয় ব্যক্তি প্রাণ হারাইয়াছেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, ঘটনাগুলির একটিরও অদ্যাবধি সন্তোষজনক সুরাহা হয় নাই। যদি বলা হয়, এই পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় সদস্যকে একজন আসামির প্রতি যে কোনো বেআইনি আচরণ করিতে প্ররোচনা দেয় এবং এই কারণেই ময়মনসিংহের ঘটনাটি ঘটিল, তাহা হইলে সম্ভবত ভুল হইবে না।
দেশে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ বিদ্যমান রহিয়াছে, যেখানে এই ধরনের মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও নির্ধারিত আছে। আমাদের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদেও নির্যাতন এবং নিষ্ঠুর, অমানবিক, লাঞ্ছনাকর ব্যবহার ও দণ্ড মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ। তথাপি একের পর এক এহেন মৃত্যুর ঘটনা আইনের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থায় নিঃসন্দেহে চিড় ধরাইবে, যাহা আইনের শাসনের জন্য আদৌ মঙ্গলজনক নহে। 

আমরা মনে করি, অবিলম্বে আলোচ্য ঘটনা তো বটেই, হেফাজতে মৃত্যুর অতীত ঘটনাবলিরও স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে তুলিয়া ধরিয়া দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করাও জরুরি। 
 

আরও পড়ুন

×