শিশু নির্যাতনে শূন্য সহিষ্ণুতা

প্রতীকী ছবি
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪ | ২৩:৪০
দেশে চুরি বা অন্য কোনো অপবাদ দিয়া কোমলমতি শিশু নির্যাতন কিছুতেই বন্ধ হইতেছে না। পিরোজপুরের নাজিরপুরে বৃক্ষের সহিত বাঁধিয়া শিশু নির্যাতনের অঘটন যেন উহাই প্রমাণ করিতেছে। শিশুটির স্বজনকে উদ্ধৃত করিয়া শুক্রবার সমকালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, নাজিরপুরের কালিকাঠি গ্রামে সিয়াম ফকির নামে ১১ বৎসরের এক শিশুকে কবুতর চুরির অপবাদ দিয়া এবং বৃক্ষের সহিত বাঁধিয়া প্রতিবেশী এক নারী ও তাহার কন্যা তিন ঘণ্টা ধরিয়া নির্যাতন করে। এমনকি শিশুটির ফুফু উদ্ধার করিতে আসিলে নির্যাতনকারীরা তাহাকেও ছাড়ে নাই। অবশেষে জরুরি সেবার ৯৯৯-এ কল দিয়া শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। ইতোপূর্বে বিভিন্ন স্থানে এহেন নির্যাতনের শিকার হইয়া একাধিক শিশুর প্রাণহানির ঘটনাও ঘটিয়াছে। কোনো কোনো অঘটনের বিচারও হইয়াছে। তথাপি অদ্যাবধি এই বেদনায়ক পরিস্থিতির লক্ষণীয় কোনো উন্নতি ঘটে নাই।
আমরা জানি, প্রচলিত আইনে কোনো অপরাধে জড়িত এমনকি প্রাপ্তবয়স্ক কোনো ব্যক্তিকেও আদালতের বাহিরে শাস্তি দেওয়ার এখতিয়ার কোনো নাগরিকের নাই। অথচ শিশুরাও এহেন বেআইনি শাস্তি হইতে রেহাই পাইতেছে না। সত্য, দেশে দীর্ঘদিন যাবৎ বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি চলিতেছে, আলোচ্য ঘটনা উহারই এক প্রকার ফসল। তবে শিশুর যথাযথ বর্ধন ও বিকাশের জন্য যেখানে গৃহে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শাসনের ছলেও মারধর গ্রহণযোগ্য নহে, সেখানে চুরি বা অন্য কোনো অপবাদ দিয়া শিশু নির্যাতন শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আশার বিষয়, আলোচ্য ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ত্বরিত পদক্ষেপে শিশুটি অন্তত প্রাণে রক্ষা পাইয়াছে এবং অভিযুক্ত মা ও মেয়ের গ্রেপ্তারও ইতিবাচক ঘটনা। তবে যথাযথ তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত হইলেই এই বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়া যাইবে। শিশু নির্যাতন যে অপরাধ– এই বোধ সবার মধ্যে জাগ্রত করিবার জন্যও প্রয়োজন ব্যাপক জনসচেতনতা গড়িয়া তোলা।
- বিষয় :
- শিশু নির্যাতন